এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,৩১ মে : সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার শর্মিষ্ঠা পানোলিকে গ্রেপ্তার করতে ১৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে হরিয়ানার গুরুগ্রামে গিয়েছিল কলকাতা পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে,একটি ইনস্টাগ্রাম ভিডিয়োতে একটি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শর্মিষ্ঠার বিরুদ্ধে। গত ১৫ মে গার্ডেনরিচ থানায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। সেইমতো তাঁকে নোটিস পাঠানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ওই তরুণীকে নোটিস পাঠানো যায়নি, কারণ তিনি বাবা -মার সঙ্গে ফেরার ছিলেন। এরপরই আদালতের নির্দেশে শর্মিষ্ঠার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। শর্মিষ্ঠাকে গ্রেপ্তার নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রশ্ন তুললেন,’কেন মাকালীকে গালাগালি দেওয়া মহুয়া মৈত্র ও মহাদেবকে নিয়ে পোস্ট করা সায়নী ঘোষকে গ্রেপ্তার করা হয়নি ? ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে একাধিক এফআইআর দায়ের সত্ত্বেও কেন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি ? তিনি পশ্চিমবঙ্গের সরকারের বিরুদ্ধে ‘ভোটব্যাঙ্কের জন্য একটা বিশেষ সম্প্রদায়’কে তোষামোদ করার অভিযোগ তুলেছেন ।
শর্মিষ্ঠা পানোলিকে গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গে সংবাদ সংস্থা এএনআই শুভেন্দু অধিকারীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন,’মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছিল । যে মাতা কালির ওপর নোংরা মন্তব্য করেছিল । গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ? ওদের সাংসদ সায়নী ঘোষ মহাদেবকে নিয়ে কি পোস্ট করেছিল ? কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে ? ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে একাধিক এফআইআর হয়েছে ? কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে ?’ তাঁর কথায়,’যারা সনাতনী তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয় । আর এখানে সনাতনীদের গালাগালি দেওয়ার লাইসেন্স আছে ।’
বিরোধী দলনেতা আরও বলেন, ওনার (শর্মিষ্ঠা পানোলি) বক্তব্য নিয়ে আমি কোন মন্তব্য করব না । কিন্তু এরা যেটা করছে সেটা তোষামোদের রাজনীতি । একটা বিশেষ সম্প্রদায় যারা ওদের ভোটব্যাঙ্ক, তাদের তোষামোদ করার জন্য এসব করছে ।’ শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’মহুয়া মৈত্র যখন একটা টক শোয়েতে সরাসরি মাতা কালী এবং মাতা তারাকে গালাগালি করেছিল তখন অন্তত দুশোটা এফ আই আর দায়ের হয়েছিল । কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে ? হয়নি ।’
প্রসঙ্গত,২০২২ সালের জুলাই মাসে কানাডাবাসী ভারতীয় লীনা মণিমেকালাইয়ের তথ্যচিত্রের পোস্টারে দেবী কালী রূপে এক মহিলাকে ধূমপান করতে দেখা যাওয়া প্রসঙ্গে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্র একটি সর্বভারতীয় ইংরাজি সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, ঈশ্বর নিয়ে নানা মানুষের নানা মত। আপনি ভুটান বা সিকিমে গেলে দেখবেন, ঈশ্বরকে সকালের পুজোয়, হুইস্কি দেওয়া হয়। উত্তরপ্রদেশে গিয়ে যদি বলেন, প্রসাদ হিসেবে হুইস্কি দেওয়া হচ্ছে, লোকে আঁতকে উঠবেন। আমার কাছে কালী মাংস, অ্যালকোহল খান এমন দেবী। তারাপীঠে গেলে দেখবেন সাধুরা ধূমপান করছেন। কালীর এই রূপকে মানুষ পুজো করেন। হিন্দু ধর্মে, নিজের মতো করে কালীকে কল্পনা করার স্বাধীনতা, আমার রয়েছে। এই স্বাধীনতায় কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারে না। ঠিক যেমনভাবে আপনি নিজের ঈশ্বরকে নিরামিষভোজী, সাদা কাপড় পরিয়ে আরাধনা করতে পারেন।’
অন্যদিকে ২০১৫ সালে সায়নীর এক্স হ্যান্ডল থেকে একটি গ্রাফিক শেয়ার করা হয়। ছবিতে দেখা যায় শিবলিঙ্গে কন্ডোম পরাচ্ছেন এক মহিলা। আর গ্রাফিকের ভিতরে লেখা, ‘বুলাদির শিবরাত্রি।’ এ নিয়ে তুমুল বিতর্ক হয় । বিশেষ করে রাজ্য বিজেপির তরফে তৃণমূলের দুই মহিলা সাংসদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে দেখা গিয়েছিল।।

