এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,৩১ মে : শুক্রবার (৩০ মে ২০২৫) কলকাতা পুলিশ হিন্দু সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার শর্মিষ্ঠাকে গ্রেপ্তার করেছে । এই গ্রেপ্তার এমন এক সময়ে করা হযল যখন শর্মিষ্ঠাকে অনলাইনে ইসলামিক মৌলবাদীদের একটি দল তাকে ধর্ষণ থেকে শুরু করে ‘সর তান সে জুদা’র পর্যন্ত হুমকি দিচ্ছিল।খবর অনুসারে, শর্মিষ্ঠাকে ‘সর তান সে জুদা’র হুমকি দেওয়া ইসলামিক মৌলবাদী সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ শর্মিষ্ঠাকে গ্রেপ্তার করতে ১৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে হরিয়ানার গুরুগ্রামে ছুটে গেছে । অথচ দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হল এই যে এরাজ্যে মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক হিংসায় কয়েক’শ মিটার দূরে থানা অবস্থিত হলেও আক্রান্ত হিন্দুদের বারবার ফোন করা সত্ত্বেও পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে । খোদ কলকাতা হাইকোর্টের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম(সিট) পর্যন্ত পুলিশের এই প্রকার নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ৷
তবে শর্মিষ্ঠা পানোলিকে গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়া কর্মী সুনয়না হোল বলেছেন যে পুলিশের কাছে কোনও উপযুক্ত নথি বা ওয়ারেন্ট ছিল না, তবে তারা ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ পেতে সক্ষম হয়েছিল।শুধু তাই নয়, কলকাতা পুলিশ শর্মিষ্ঠাকে তাদের সাথে নিয়ে যায় এবং আজ শনিবার (৩১ মে ২০২৫) কলকাতার আলিপুর আদালতে তোলে । শর্মিষ্ঠাকে হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানায় পুলিশ। যদিও দুই পক্ষের সওয়াল শেষে বিচারক শর্মিষ্ঠাকে ১৩ জুন পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
১৪ মে, যখন একটি পাকিস্তানি মুসলিম হ্যান্ডেল পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলায় ২৪ জন হিন্দুর গণহত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে, তখন বিতর্ক শুরু হয়। এই ঘটনায় ইসলামিক সন্ত্রাসীরা তাদের ধর্মীয় পরিচয় নিশ্চিত করার পরও নিহতদের হত্যা করে। যদিও কলকাতা পুলিশ দাবি করেছে যে একটি ইনস্টাগ্রাম ভিডিয়োতে একটি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শর্মিষ্ঠার বিরুদ্ধে। গত ১৫ মে গার্ডেনরিচ থানায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। সেইমতো তাঁকে নোটিস পাঠানোর চেষ্টা করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই তরুণীকে নোটিস পাঠানো যায়নি, কারণ তিনি বাবা -মার সঙ্গে ফেরার ছিলেন। এরপরই আদালতের নির্দেশে শর্মিষ্ঠার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
প্রসঙ্গত,শর্মিষ্ঠা এক পাকিস্তানি হ্যান্ডেলকে উপহাস করে জিজ্ঞাসা করেন যে, তারা কি পহেলগাম এবং অন্যান্য পাকিস্তান-স্পন্সরিত সন্ত্রাসী হামলা সম্পর্কে অবগত আছে? তিনি প্রশ্ন তোলেন যে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কি এই হামলার বিরুদ্ধে কিছু করা উচিত নয়। এর পর, কিছু পাকিস্তানি এবং ভারতীয় মুসলিম ব্যবহারকারী শর্মিষ্ঠার ভিডিওটিকে প্রসঙ্গের বাইরে নিয়ে যান এবং তার বিরুদ্ধে ইসলাম এবং নবী মুহাম্মদের অবমাননার অভিযোগ আনেন।
এর পর, উভয় দেশের কিছু মুসলিম ব্যবহারকারী শর্মিষ্ঠাকে ধর্ষণ,হত্যা এবং ‘তার শরীর থেকে মাথা কেটে ফেলার’ (সর তন সে জুদা) হুমকি দিতে শুরু করে । ভারতীয় মুসলিম ব্যবহারকারীরা পুলিশকে ট্যাগ করে শর্মিষ্ঠার গ্রেপ্তারের দাবি জানায় ।
যদিও চাপের মুখে শর্মিষ্ঠা তার ভিডিওটি মুছে ফেলেন এবং নিঃশর্ত ক্ষমাও চান। কিন্তু যারা তাকে হুমকি দিয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে, কলকাতা পুলিশ শর্মিষ্ঠাকে গ্রেপ্তার করতে গুরুগ্রাম পর্যন্ত ছুটে যেতে পছন্দ করে। এমন পরিস্থিতিতে, শর্মিষ্ঠার বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশের এই পদক্ষেপ অনেক প্রশ্নও তুলে ধরছে, যা সময়ের সাথে সাথে সামনে আসবে ।।

