এইদিন ওয়েবডেস্ক,মধ্যপ্রদেশ,২১ মে : হিন্দি দৈনিক সংবাদপত্র দৈনিক ভাস্করের একটি চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন অনুসারে, মধ্যপ্রদেশের সাগর শহরের শনিচড়ি এবং শুক্রওয়ারী গ্রাম থেকে হিন্দু পরিবারগুলি বিপুল সংখ্যক স্থানান্তরিত হচ্ছে। গত ১০ বছরে এখানে হিন্দু জনসংখ্যা ৪.৮৮ শতাংশ কমেছে, যা গভীর উদ্বেগের বিষয়। প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে গত ৫ বছরে ৪১টি হিন্দু পরিবার তাদের বাড়ি বিক্রি করে এই এলাকা ছেড়ে চলে গেছে, এবং অবাক করার বিষয় হল এই সমস্ত বাড়ি মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরা কিনেছে। গত দশকে ৬৩টি হিন্দু পরিবারের ২২৮ জন লোক অন্যত্র চলে গেছে এবং অনেক বাড়িতে এখনও ‘মকান বিকাও হ্যায়’ ব্যানার লাগানো আছে।
দৈনিক ভাস্কর টিম কিছু পরিবারের সাথে কথা বলেছে যারা তাদের পৈতৃক ভিটা ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। তাদের মধ্যে উমাশঙ্কর শর্মা বলেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরা তার ১৫০ বছরের পুরনো পৈতৃক বাড়ি ঘিরে ফেলে এবং তাকে হয়রানি শুরু করে। বাড়িতে কেবল মহিলারা থাকতো । বাধ্য হয়ে, তাকে তার ১৮ লক্ষ টাকার বাড়িটি মাত্র ৫.৩০ লক্ষ টাকায় বিক্রি করতে হয়েছিল। রাজপাল সিং বলেন, তার বাড়ির বাইরে মাংসের টুকরো এবং ডিমের খোসা ছুঁড়ে ফেলা হয়েছিল, যার ফলে সেখানে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। তার ৬২৫ বর্গফুটের বাড়িটি দুই বছর ধরে বিক্রি হয়নি এবং অবশেষে তাকে কম দামে বিক্রি করতে হয়েছিল।
আরেকজন বলেন, তার মেয়েকে এক মুসলিম যুবক প্রেমের ফাঁদে ফেলেছিল, যার কারণে তিনি বাধ্য হয়ে তার মেয়েকে সেই যুবকের সাথে বিয়ে দেন। পরে মেয়েকে নির্যাতন করা হয় এবং বাড়িটি বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়। সন্তোষ কুমার সাহু জানান যে তার আশেপাশে মাত্র ১-২টি হিন্দু পরিবার অবশিষ্ট ছিল। মুসলিমদের বেশি বাড়ি থাকার কারণে, তাদের সন্তানদের বিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি। সেখানকার পরিবেশের কারণে বিয়ের প্রস্তাব আসছিল না। তাকে তার ৩০ লক্ষ টাকার বাড়িটি ২২ লক্ষ টাকায় বিক্রি করতে হয়েছিল। শনিছড়ি চৌগানা এলাকার একজন হিন্দু মহিলা বলেন, স্বামীর অনুপস্থিতিতে তিনি তার দুই মেয়ের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকদের সাথে বিরোধের পর, তিনি তার ২২ লক্ষ টাকার বাড়িটি ১৪ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেন।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের জেলা সভাপতি অজয় দুবে বলেন, এলাকার পরিবেশের অবনতির কারণে হিন্দু পরিবারগুলি তাদের বাড়ি বিক্রি করে চলে যাচ্ছে। তিনি এই অভিবাসন বন্ধে প্রশাসনের কাছে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে তার সংস্থাও দুঃস্থ পরিবারগুলিকে সাহায্য করতে প্রস্তুত।
প্রতিবেদনটি সাগরের শনিছড়ি-শুক্রওয়ারী এলাকার একটি গুরুতর সামাজিক সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করেছে, যেখানে জনসংখ্যার পরিবর্তন এবং সামাজিক কাঠামো হুমকির মুখে রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এই সমস্যাটি প্রশাসনের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ, যার দিকে অবিলম্বে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন অনেকে ।।

