এইদিন ওয়েবডেস্ক,হরিয়ানা,১৭ মে : হরিয়ানা -পাঞ্জাব থেকে পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করা ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন ভ্রমণ ব্লগার জ্যোতি মালহোত্রার নামও রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে জ্যোতি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থাগুলিকে ভারত সম্পর্কে সংবেদনশীল তথ্য দিত । সে সোশ্যাল মিডিয়ায় পাকিস্তানের একটি ভালো ভাবমূর্তি উপস্থাপনের জন্যও কাজ করেছিল । ইউটিউবে তার ৩৭৭,০০০ সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। তার পরিচয় প্রকাশের পর, তাকে ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) ধারা ১৫২ এবং ১৯২৩ সালের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ধারা ৩, ৪ এবং ৫ এর অধীনে মামলা করা হয়।
তথ্য অনুযায়ী, জ্যোতি মালহোত্রা ২০২৩ সালে পাকিস্তানে যায়, এরপর সে নয়াদিল্লিতে পাকিস্তান হাইকমিশনের কর্মচারী এহসান-উর-রহিম ওরফে দানিশের সংস্পর্শে আসে । দানিশই তাকে পাকিস্তানি গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। এর পর তিনি ভারত সম্পর্কে তথ্য প্রদানের কাজ শুরু করে জ্যোতি । হরিয়ানা-পাঞ্জাব থেকে এরকম ৬ জনকে ধরা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন হরিয়ানার রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র দেবেন্দ্র সিং ধিলন (২৪)। দেবেন্দ্র গত বছর কর্তারপুর করিডোরে গিয়েছিল । এরপর, সে সংবেদনশীল তথ্য ভাগাভাগি করতে শুরু করে। বাকি ধৃতরা হল,ইয়ামিন মোহাম্মদ,আরমান, বানু নাসরিনা এবং গুজালা ।
হরিয়ানার হিসারের সিভিল লাইনস থানা পুলিশের দায়ের করা এফআইআর অনুসারে, হিসারের নিউ অগ্রসেন এক্সটেনশন, EBS রোডের বাসিন্দা হারিস কুমারের মেয়ে জ্যোতি মালহোত্রা । মহিলা সাব-ইন্সপেক্টর সুমনের সামনে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল তাকে । জিজ্ঞাসাবাদের সময় জ্যোতি রানী জানায়, “ট্রাভেল-উইথ-জো” নামে তার ইউটিউবে একটি চ্যানেল রয়েছে। আমি একজন পাসপোর্টধারী। আমার পাসপোর্ট নম্বর $6098262 এবং আমি ২০২৩ সালে পাকিস্তান ভ্রমণের ভিসা পেতে দিল্লিতে পাকিস্তান হাই কমিশনে গিয়েছিলাম যেখানে আমার সাথে আহসান-উর-রহিম ওরফে দানিশের দেখা হয়। আমি আহসান-উর-রহিম ওরফে দানিশের ৯৮১০৪৮৮৯৩৯ নম্বর মোবাইল নম্বরটি নিয়েছিলাম এবং তারপর উপরে উল্লিখিত আহসানের সাথে কথা বলতে শুরু করি। এরপর আমি দুবার পাকিস্তান সফর করি যেখানে আহসান-উর-রহিমের (পূর্বোক্ত) পরামর্শে, আহসানের পরিচিত আলী আহওয়ানের সাথে আমার দেখা হয়, যিনি আমার থাকা এবং ভ্রমণের ব্যবস্থা করেন।
পাকিস্তানে, আলী আহওয়ান পাকিস্তানি নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সাথে আমার বৈঠকের ব্যবস্থা করেছিলেন এবং সেখানে আমি শাকির এবং রানা শাহবাজের সাথেও দেখা করি। আমি শাকিরের মোবাইল নম্বর 923176250069 নিই এবং শাকিরের নম্বরটি আমার মোবাইলে ‘জাট রাধাওয়া’ নামে সেভ করে রাখি যাতে কেউ সন্দেহ না করে। তারপর আমি ভারতে ফিরে আসি । তারপর, আমি হোয়াটসঅ্যাপ, স্ন্যাপচ্যাট এবং ট্যালিগ্রাম ইত্যাদি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে উপরোক্ত সকলের সাথে অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ রেখেছিলাম এবং দেশবিরোধী তথ্য বিনিময় শুরু করেছিলাম। দিল্লিতে পাক হাইকমিশনের উপরে উল্লিখিত কর্মকর্তা আহসান-উর-রহিম ওরফে দানিশের সাথে আমার অনেকবার দেখা হয়েছে । জ্যোতি রানীর জিজ্ঞাসাবাদ থেকে জানা যায় যে, সে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা পিআইও (পাকিস্তান ইন্টেলিজেন্স অপারেটিভস) এর সাথে যোগাযোগ রাখছিল।
এফআইআরে বলা হয়েছে,গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ১৩.০৫.২০২৫ তারিখে ভারত সরকারের বিদেশ মন্ত্রক, দিল্লি কর্তৃক আহসান-উর-রহিম ওরফে দানিশকে পার্সোনা-নন-গ্রাটা ঘোষণা করা হয়েছে এবং তাকে ভারত ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জ্যোতি রানী, ২১/পি নিউ আগ্রাসাইন এক্সটেনশন ইবিএস রোড হিসারের বাসিন্দা হরিশ কুমারের মেয়ে, ১৯২৩ সালের ১৫২ ধারা বিএনএস এবং ৩,৪,৫ ওএস আইনের অধীনে অপরাধ করেছেন, সন্দেহজনক কার্যকলাপ পরিচালনা করে এবং শত্রু দেশ পাকিস্তানের একজন নাগরিকের সাথে ভারতীয় গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় করে ভারতের সার্বভৌমত্ব, ঐক্য এবং অখণ্ডতাকে বিপন্ন করে তুলেছেন, যাকে ভারত সরকার গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে পার্সোনা-নন-গ্রাটা ঘোষণা করেছে।।

