এইদিন ওয়েবডেস্ক,মেখলিগঞ্জ(কোচবিহার),১৭ মে : বেআইনি ভাবে সীমান্ত টপকে ভারতে ঢুকে পড়েছিল এক বাংলাদেশি । তারপর সে মুর্শিদাবাদে ঘাঁটি গাড়ে । স্থানীয়দের সহযোগিতায় একটি মসজিদে ইমামের দায়িত্ব পালন করতে থাকে । মাদ্রাসায় শিক্ষকতার ব্যবস্থাও করে দেয় তার স্থানীয় শুভাকাঙ্ক্ষীরা । অন্যের নামে আসা রাজ্য সরকারের দেওয়া ইমামভাতা আর দর্জির দোকান খুলে সেই উপার্জনে বহাল তবিয়তেই জীবন চলছিল সেলিম আনসারি ওরফে সেলিমুদ্দিনের । কিন্তু বাংলাদেশ ফেরার পথে কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের তিন বিঘা সংলগ্ন অর্জুন ক্যাম্পের কাছে বিএসএফের ৬ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কর্তব্যরত জওয়ানরা সেলিমুদ্দিনকে পাকড়াও করে জেরা করতেই বেড়িয়ে আসে এই সমস্ত চাঞ্চল্যকর তথ্য । রাজ্য বিজেপির যুবনেতা তরুনজ্যোতি তিওয়ারি বলেছেন,’শুধু সেলিমুদ্দিন নয়,
রাজ্যে এমন হাজার হাজার অনুপ্রবেশকারী তৃণমূলের মদতে বসবাস করছে । প্রসঙ্গত,বর্ধমান শহরের তৃণমূলের এক বিধায়ক এবং হাওড়ার একটা পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের নেত্রীর মুখে প্রকাশ্য মঞ্চে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ভোটারকার্ড করে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন ।
তরুনজ্যোতি তিওয়ারি একটা প্রতিবেদনের স্ক্রীন শর্ট এক্স-এ ভাগ করে লিখেছেন,’বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ইমাম ধৃত ! সেলিম আনসারি, বাংলাদেশের কক্সবাজারের বাসিন্দা, অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার মকরামপুর মসজিদে ১৭-১৮ মাস ইমাম ছিল সে। আধার, প্যান, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সহ একাধিক ভারতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতি করে তৈরি করে।
স্থানীয়দের সে জানায়, সে বিহারের বাসিন্দা। কেউ বুঝতেও পারেনি। ভারতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভাড়া বাড়িও পায়, যেখানে তার মা থাকতেন—তিনি আবার শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে কর্মরত ছিলেন! সেলিম শুধু একা নয়। এমন হাজার হাজার অনুপ্রবেশকারী তৃণমূল নেতাদের মদতে মালদা, মুর্শিদাবাদ, দিনাজপুর, দুই চব্বিশ পরগনা, নদিয়া, এমনকি কলকাতা ও আশেপাশে ছড়িয়ে আছে। তৃণমূল কংগ্রেসের দালালদের সহায়তায় প্রথমে রেসিডেন্সিয়াল প্রুফ, তারপর আধার-প্যান—সব জোগাড় করে ফেলে।এদের জন্য জনসংখ্যা বাড়ছে, আর আপনার অধিকার লুট হচ্ছে! জাগো! সজাগ থাকো! দেশবিরোধী এই নেটওয়ার্ক ভাঙতে হবে।’
বিএসএফ সূত্রে খবর,বাংলাদেশের কক্সবাজারের বাঝেরপাড়ার বাসিন্দা আবুল বাশারের ছেলে সেলিমুদ্দিন । বছর চারেক আগে সে বেআইনিভাবে সীমান্ত পেরিয়ে মুর্শিদাবাদে চলে আসে । তার কাছ থেকে আধার কার্ড ও প্যান কার্ড পাওয়া গেলেও ভোটার কার্ড উদ্ধার করতে পারেনি বিএসএফ । তবে সেলিমুদ্দিনের কাছা পাওয়া তার জন্মের শংসাপত্রে পরিষ্কার লেখা আছে যে তার জন্ম বাংলাদেশে । আপাতত তাকে কুচিলিবাড়ি থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ।
এদিকে এই ঘটনায় ফের একবার রাজ্য সরকার ও রাজ্য পুলিশের ভূমিকাকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে । কারন পশ্চিমবঙ্গ কার্যত বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা মুসলিমদের এপিসেন্টার হয়ে গেছে এবং এখান থেকেই তারা ভুয়া পরিচয়পত্র তৈরি করে দেশের অনান্য রাজ্যে ঘাঁটি গাড়ছে বলে অভিযোগ । সাম্প্রতিক সময়ে দিল্লি, হরিয়ানা,মধ্যপ্রদেশসহ বিভিন্ন রাজ্যে যত বাংলাদেশি ধরা পড়েছে তারা মূলত পশ্চিমবঙ্গের বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়েই অনুপ্রবেশ করেছিল বলে জানতে পারা যায় । যা এরাজ্য শুধু নয়,গোটা দেশের নিরাপত্তার জন্য বিপদসঙ্কেত ।।

