এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১২ আগস্ট : শাশুড়িকে খুনের অভিযোগে জামাইকে গ্রেফতার করল পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার পুলিশ । ধৃত ব্যক্তির নাম প্রসেনজিৎ দলুই(২৭) ওরফে জিৎ । তাঁর বাড়ি বীরভূম জেলার সিউড়ি থানার বাতরা গ্রামে । বুধবার রাতে বোলপুর শহরের মিশন কম্পাউন্ড এলাকায় শ্বশুরবাড়ি থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে । মঙ্গলবার ভাতার থানার মাহাতা গ্রামে ভাড়া বাড়িতে রহস্যজনকভাবে মারা যান প্রসেনজিতের শাশুড়ি লীলা আগরওয়াল(৪৪) ।
ঘটনাটি আত্মহত্যা নাকি খুন, এনিয়ে ধন্দের সৃষ্টি হয়েছিল । তবে খুন বলে প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল পুলিশের । একই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন মৃতার ছেলেও । শেষ পর্যন্ত পুলিশ ও মৃতার ছেলের অনুমানই সত্যি হল । টানা জেরার মুখে পড়ে ধৃত প্রসেনজিৎ তাঁর শাশুড়িকে খুনের কথা কবুল করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ । বৃহস্পতিবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে তুলে পুলিশ তাকে ৭ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানায় । ঘটনার পুনঃর্গঠন করা হতে পারে বলে পুলিশ সুত্রে খবর ।
বছর দেড়েক আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন মৃতা লীলা আগরওয়াল । দ্বিতীয় পক্ষের স্বামীর নাম সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায় । তাঁর বাড়ি বর্ধমান শহরে । বিবাহিত সুদীপ্তবাবুর বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন লীলাদেবী । ক্রমে তাঁরা পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে । তারপর প্রথম পক্ষের স্বামী রাজু আগরওয়াল ও ছেলে আকাশকে ছেড়ে মাহাতা গ্রামের বাড়ি ভাড়া নিয়ে সুদীপ্তবাবুর সঙ্গে নতুন সংসার পাতেন । তবে মাহাতা গ্রামে যাতায়ত ছিল লীলাদেবীর মেয়ে প্রীতি ও জামাই প্রসেনজিতের । প্রায় তিনসপ্তাহ আগে একমাত্র শিশুসন্তানকে নিয়ে মাহাতা গ্রামে মায়ের কাছে বেড়াতে আসেন প্রীতি । সঙ্গে প্রসেনজিৎও ছিলেন । তাঁরা মাহাতায় সপ্তাহখানেক কাটিয়ে যান । আর ঠিক তার পরেই অস্বাভাবিকভাবে মৃত্যু হয় লীলাদেবীর ।
গত মঙ্গলবার রাতে মাহাতা গ্রামে ভাড়াবাড়ি লীলাদেবীর দেহ উদ্ধার করে ভাতার থানার পুলিশ ।মৃতদেহ দেখার পরেই লীলাদেবীর ছেলে আকাশ দাবি করেছিলেন তাঁর মা’কে খুন করা হয়েছে । পুলিশেও তাই সন্দেহ ছিল । পুলিশ মৃতার ছেলে, মেয়ে,জামাই, প্রথম ও দ্বিতীয় পক্ষের স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি তাঁদের মোবাইল পরীক্ষা করে । পুলিশ মূলত মোবাইলের কললিস্ট খতিয়ে দেখে বলে জানা গেছে ।
পুলিশ সুত্রে খবর,বাকি সবার মোবাইল ঠিকঠাক থাকলেও মঙ্গলবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রসেনজিতের মোবাইল ফোনের সুইচ অফ ছিল ।ওই দিন দুপুরে তাঁর মোবাইলের লোকেশনে ছিল গুসকরা শহর এলাকায় । বিষয়টি পুলিশের সন্দেহজনক লাগে । শুরু হয় ম্যারাথন জেরা । শেষ পর্যন্ত সে খুনের কথা স্বীকার করে । পুলিশকে সে জানায় ,ইদানিং স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না । এদিকে শাশুড়িও চাইছিল তাঁদের বিচ্ছেদ করিয়ে দিতে । সেই আক্রোশেই শাশুড়িকে খুনের পরিকল্পনা করে বলে ধৃত যুবক পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে বলে জানা গেছে ।।