এইদিন ওয়েবডেস্ক,মুর্শিদাবাদ,১২ মে : সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা কবলিত মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জের ঘোষপাড়ার হিন্দুদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ তুললো বিজেপি । এই বিষয়ে রাজ্য বিজেপির যুবনেতা ও কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তরুনজ্যোতি তিওয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটা ভিডিও পোস্ট করেছেন । তিনি লিখেছেন,’গতকাল সকালে আমরা জানতে পারি যে, গত পরশু রাতের বেলা সামশেরগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরীহ মানুষদের পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। এই খবর পেয়ে বিরোধী দলনেতা মাননীয় শুভেন্দু অধিকারী মহাশয়ের নির্দেশে আমি, কৌস্তব ও সূর্যনীল মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জে উপস্থিত হই।
আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা করি এবং থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের সঙ্গে কথা বলি। ঘটনাস্থল থেকে FIR-এর একটি অনুলিপি সংগ্রহ করি, যা থেকে জানা যায়, মনজুর রহমান নামে এক ব্যক্তি ১৬/০৪/২৫ তারিখে একটি অভিযোগ দায়ের করে। সেখানে বলা হয়, ১২/০৪/২৫ তারিখে ৩০-৩৫ জন ব্যক্তি মিলে তার মুদি দোকান লুটপাট করে ও আগুন লাগিয়ে দেয়। অভিযোগ অনুযায়ী, দোকান থেকে প্রায় ১২ লক্ষ টাকার পণ্য লুট হয়। বিস্ময়করভাবে, ঘটনার চারদিন পরে এই মনজুর রহমান কোনো ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে।
তরুনজ্যোতির অভিযোগ, এই ভিত্তিহীন অভিযোগের জেরেই সামশেরগঞ্জের ঠাকুরনগর ঘোষপাড়া এলাকার নিরীহ হিন্দুদের বেছে বেছে গ্রেফতার করছে পুলিশ। আমাদের প্রশ্ন করলে পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের নাকি অস্ত্র হাতে রাস্তায় দেখা গিয়েছে। যদিও FIR-এ তা উল্লেখ নেই, পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ডাকাতির ধারায় গ্রেফতার দেখাচ্ছে—পুলিশের বর্ণনা ও অভিযোগের মধ্যে স্পষ্ট অসামঞ্জস্য রয়েছে।
গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবার ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে দেখা করে আইনি সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিই। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই গ্রেফতারের সময় থানায় উপস্থিত ছিলেন শাসকদলের স্থানীয় বিধায়ক ও তাঁর সহযোগী মদতপুষ্ট ব্যক্তিরা। তাঁদের উপস্থিতি থেকেই স্পষ্ট, এই ঘটনাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
তিনি আরও লিখেছেন,সামশেরগঞ্জের ঘোষপাড়ার হিন্দুদের প্রতি এখানকার কিছু মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রবল আক্রোশ রয়েছে। পেছনের প্রেক্ষাপটে দেখা যায়, যখন রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু নিধনের আয়োজন চলছিল, তখন একমাত্র ঘোষপাড়ার হিন্দুরাই সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। সেই প্রতিরোধই আজ তাদের “অপরাধ” হিসেবে দাঁড়িয়েছে। সেই সময় যাঁদের শেষ করা যায়নি, আজ তাঁদেরই পুলিশ দিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ব্যক্তিগতভাবে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং আইনি ও আর্থিক সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন।
তরুনজ্যোতি লিখেছেন,তৃণমূল কংগ্রেস বারবার প্রমাণ করেছে তারা কোনও শিক্ষা নেয় না। যখন গোটা দেশের নজর ভারত-পাকিস্তান পরিস্থিতির দিকে, তখন রাজ্য সরকার এবং তাদের অনুগত পুলিশ বাহিনী চুপিচুপি হিন্দু দমন অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এ যেন এক সুপরিকল্পিত প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার ষড়যন্ত্র, যার লক্ষ্য ঘোষপাড়ার প্রতিরোধশীল হিন্দু সমাজ।
যদিও এই অভিযোগ প্রসঙ্গে পুলিশ বা শাসকদলের তরফে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।।

