এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৯ মে : গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগামে শুধুমাত্র ধর্ম পরিচয়ের কারনে বেছে বেছে হিন্দু পর্যটকদের নরসংহার করেছিল পাকিস্তানি ইসলামপন্থী সন্ত্রাসীরা । কিন্তু সন্ত্রাসীরা মুসলিম হওয়ায় এই নরসংহারের ঘটনায় সেভাবে নিন্দা করতে শোনা যায়নি তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ বামপন্থী নেতানেত্রীদের । উলটে হিন্দু পর্যটকরা কাশ্মীরে ভ্রমণ বয়কট করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখাতে কিছু বামপন্থী “ভন্ড” মহিলা হিন্দু পর্যটকদের আকর্ষিত করতে আসরে নেমে পড়েন । এদিকে কেন্দ্র সরকার “অপারেশন সিঁদূর” শুরু করলে পাকিস্তানকে নেস্তনাবুদ হতে দেখে তাদেরকেই আবার বুক চাপড়াতে দেখা যাচ্ছে । তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন সিপিএমের দীপ্সিতা জয়ী । এখন পাকিস্তানকে মার খেতে দেখে সিপিএমের ওই নেত্রীর মানবতা জেগে গেছে এবং “এখুনি হিংসা” বন্ধের জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন । ফেসবুকে সিপিএম নেত্রীর সেই পোস্টের স্ক্রীন শর্ট শেয়ার করে বিজেপির তরুনজ্যোতি তিওয়ারি তাকে ধুয়ে দিলেন ।
গতকাল দীপ্সিতা জয়ী ফেসবুকে একটা পোস্টে লেখেন,’আমাকে গালি দাও, তাতে কিছু যায় আসে না। আমি আমার দেশকে কবরে পরিণত হতে দেখতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলাম। আমি আমার শহরগুলিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতে দেখতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলাম। আমি আরেকটি যুদ্ধের জন্য উল্লাস করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলাম। ইতিমধ্যে পশ্চিম সীমান্তের অমৃতসর সহ অন্যান্য শহরগুলোতে ব্ল্যাকআউট চলছে। ৪৫০ কিলোমিটার দূরে বসে আমি এর থ্রিল অনুভব করতে পারছিনা, আমার ভয় হচ্ছে, উদ্বেগ হচ্ছে, আশঙ্কা হচ্ছে। এখানে যারা যুদ্ধের চিয়ার লিডার হয়ে আসবেন, দয়া করে আর্মি তে নাম লেখান, বাড়ির শান্তিতে বসে অন্যের বাড়ি ছেলেকে মরতে পাঠানোর মধ্যে কোনো বাহাদুরি নেই।’ সব শেষে তিনি লেখেন, “এখুনি হিংসা বন্ধ হোক”(Deescalate Now)।’
প্রতিক্রিয়ায় তরুনজ্যোতি তিওয়ারি লিখেছেন,’এই না হলে বিশ্ব নাগরিক, এই না হলে বাম নেত্রী! দীপ্সিতা জয়ীর পোস্ট আসলে সেই চেনা মুখোশের আরেকটা নমুনা—যে মুখোশ পরে নিজেদের “শান্তিকামী”, “যুদ্ধবিরোধী”, “মানবতাবাদী” বলে দাবি করে, অথচ বাস্তবে এরা হল সেই beret-পরা Azadi gang যারা কাশ্মীরের আজাদির নামে স্লোগান তোলে, যারা ভারতের প্রতিরক্ষা নীতিকে প্রশ্ন করে, কিন্তু পাকিস্তানের আগ্রাসনকে একবারও নিন্দা করে না।
ভারতের নিরীহ নাগরিকদের যখন পাকিস্তানি ড্রোনে, জঙ্গি হামলায় মারা হচ্ছিল, তখন দীপ্সিতা জয়ীর মতো লোকেরা ছিল নিশ্চুপ। যখন ভারত পাকিস্তানের ভিতরে ঢুকে জঙ্গিদের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয়, তখনই এদের “মনুষ্যত্ব” জেগে ওঠে। এরা চায় ভারত চুপচাপ মরে যাক, কিন্তু জবাব না দিক। এটাই এদের আসল চরিত্র।
আরেক বাম নেতা কৌস্তভ চ্যাটার্জিও mock drill নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট করেছিল—যদিও পরে লজ্জায় সেটা মুছে ফেলে। দীপ্সিতাও নিজের পোস্ট ডিলিট করে দিয়েছেন, কারণ জনরোষ বুঝতে পারছেন। কিন্তু ততক্ষণে প্রমাণিত হয়ে গেছে—এরা কতটা ভারতবিরোধী মানসিকতা পোষণ করে। পাকিস্তান সীমান্ত লঙ্ঘন করে, মিসাইল ছুঁড়ে, জঙ্গি পাঠিয়ে যেভাবে আক্রমণ চালাচ্ছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতবর্ষ নিজের সুরক্ষার জন্য প্রতিক্রিয়া জানাবে—এটাই স্বাভাবিক, যৌক্তিক এবং প্রয়োজনীয়। এই মুহূর্তে দেশের পাশে না দাঁড়িয়ে যারা “deescalation” এর কথা বলে, তারা আসলে ভারতের শক্তি নয়, দুর্বলতা। এই সমস্ত মুখোশধারী ভারতবিরোধী বামপন্থীদের চিহ্নিত করুন। এদের বিরুদ্ধে সামাজিক ও আইনগত স্তরে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। পুরো বামফ্রন্টই এদের মতো ভারতবিরোধিতায় লিপ্ত। দেশবিরোধী শক্তিকে আর সুযোগ দেওয়া চলবে না।ভারতের বিরুদ্ধে নয়, ভারতের পাশে থাকুন।’
হাওড়ার বাসিন্দা ৩২ বছর বয়স্ক দীপ্সিতা জয়ীর আসল নাম দীপ্সিতা ধর । তার পড়াশোনা দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ) থেকে । এই সেই জেএনইউ, যেখানে একাধিকবার দেশ বিরোধী শ্লোগান শোনা গেছে । পড়াশোনা করার সময় সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই করতেন দীপ্সিতা । তিনি ২০২১ সালের বিধানসভার নির্বাচনে হাওড়ার বালি এবং ২০২৪ সালের লোকসভার ভোটে শ্রীরামপুর থেকে সিপিএমের টিকিটে লড়াই করেন । কিন্তু দু’বারই শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন । দীপ্সিতার
ফেসবুক প্রোফাইলে দেখা গেছে তিনি পাকিস্তান প্রেমী বামপন্থী অপপ্রচারমূলক পোর্টাল ‘দ্য ওয়্যার’-এর ভক্ত৷ নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই ওই পোর্টালের নিশানায় রয়েছে কেন্দ্র সরকার । সেই সাথে ভারতের দুই চিরশত্রু দেশ পাকিস্তান ও চীনের প্রতি তাদের দরদ সর্বজনবিদিত । আজ ওই বামপন্থী পোর্টাল দাবি করে যে ভারত সরকার সারা দেশে তাদের প্ল্যাটফর্মকে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে ।।

