এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,০৮ মে : ভারতের জনবিন্যাস পরিবর্তন ঘটাতে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম প্রভৃতি রাজ্যগুলির সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন প্রচুর সংখ্যক মুসলিম নরনারী ও শিশু ঢুকিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশ । এক্ষেত্রে কাজে লাগানো হচ্ছে সেদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীকে । আসামে ক্ষমতায় বিজেপি থাকায় অনুপ্রবেশ অনেকটা রোধ করা সম্ভব হয়েছে । সেকারণে পশ্চিমবঙ্গকে অনুপ্রবেশের করিডোর হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে । আসামের বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে প্রায় প্রতিদিনই অনুবেশকারীদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে । আর এতে সিঁদূরে মেঘ দেখছেন বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস । তিনি এবার একটা নতুন ফন্দি এঁটেছেন ৷ আর সেটা হল, নিজের দেশের নাগরিকদেরই নিতে অস্বীকার করছেন এখন ।
বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের কথাতেই সেই ইঙ্গিত পাওয়া গেল । খলিলুর মন্তব্য করেছেন ভারত যেভাবে লোকজনকে সীমান্তের এপারে ঠেলে দিচ্ছে, তা ‘সঠিক নয়’ । বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেছেন, কেউ বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে থাকলে প্রমাণসাপেক্ষে তাদেরকে গ্রহণ করবে ঢাকা। তবে, সেটা অবশ্যই ‘ফর্মাল চ্যানেলে’ হতে হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে শতাধিক বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী মুসলিমকে ফেরত পাঠিয়েছে বিএসএফ । অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে আটজন বাংলাদেশি এবং অন্যরা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা । ভারতে পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল করার পর ব্যাপক পুশব্যাক চলছে । সেই ভয়ে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি মুসলিমরা আতঙ্কে নিজেরাই দেশ ছাড়ছে । বুধবার সকালে কুড়িগ্রাম জেলা থেকে ৪৪ জন এবং খাগড়াছড়ি থেকে ৬৬ জন রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি মুসলিমকে আটক করেছে বিজিবি। অন্যদিকে, খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা ও পানছড়ি সীমান্ত দিয়ে দেশে ফেরা ৬৬ জন মুসলিমকে ভারতীয় বলে ধরেছে । এছাড়া বুধবার ভোর সাড়ে ৪টা থেকে মাটিরাঙা তাইন্দং সীমান্ত দিয়ে ১৫ জন, গোমতি ইউনিয়নের শান্তিপূর সীমান্ত দিয়ে ২৭ জন ও পানছড়ির লোগাং ইউনিয়নের রূপসেন পাড়া সীমান্ত থেকে ২৪ জনকে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ধরেছে । তারা রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি হলেও বিজিবি বলছে তারা নাকি ভারতীয় নাগরিক ।
খাগড়াছড়ির ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা বলেছেন, বুধবার ভোরে সীমান্ত দিয়ে এই ভারতীয়দের অনুপ্রবেশ করানো হয়। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পাওয়ার পর বিজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে। আটকরা বাংলা ভাষাভাষী; তারা নিজেদের গুজরাটের বাসিন্দা বলে দাবি করেন। তারা বলেছেন, তাদেরকে গুজরাট থেকে বিমানে করে নিয়ে এসে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করায় বিএসএফ সদস্যরা। তিনি আরও বলেন, সর্বশেষ খবর পর্যন্ত ৬৬ জন ভারতীয় নাগরিককে অনুপ্রবেশ করানো হয়েছে। বিজিবি বিষয়টি দেখভাল করছে। আটকরা তাদের আওতায় রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ সার্বক্ষণিক বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। আমরা তাদেরকে দ্রুত পুশব্যাক করানোর চেষ্টা করছি।’
মহম্মদ ইউনূস সরকারের অবস্থানের বিষয়ে এক প্রশ্নে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেন,’এ খবরগুলো আমরাও পাচ্ছি। প্রতিটি কেইস আলাদা আলাদা করে নিরীক্ষণ করছি।
এবং আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, আমরা কেবল আমাদের দেশের নাগরিক যদি কেউ থাকে এবং প্রমাণিত হয়, তাহলে তাদেরকে আমরা গ্রহণ করব। এটা ফর্মাল চ্যানেলে করতে হবে। এভাবে পুশইন করাটা সঠিক নয়।’ বাংলাদেশ ভারত সরকারকে জানাবে কি না, এমন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সংকট এবং অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয় সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ বলেন,’আমরা ইতিমধ্যে ভারত সরকারের যোগাযোগের চেষ্টা করছি এ বিষয়ে।’
প্রসঙ্গ,পশ্চিমবঙ্গকে করিডর করে মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের ঢুকিয়ে ভারতে জনবিন্যাসসের পরিবর্তন ঘটানোর ষড়যন্ত্র দীর্ঘ দিন ধরে করে আসছে বাংলাদেশের ইসলামি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলি । পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ,মালদা,দুই ২৪ পরগণা, দুই দিনাজপুরে ইতিমধ্যেই জনবিন্যাসের পরিবর্তন ঘটে গেছে । বাংলার বর্তমান শাসকদল ভোটব্যাংক বাড়াতে অনুপ্রবেশকারীদের ভোটার ও আধার কার্ডও করে দিয়েছে বলে অভিযোগ । আর ভারতীয় পরিচয়পত্র জুটিয়ে অনুপ্রবেশকারীরা দেশের বিভিন্ন রাজ্যে গিয়ে ঘাঁটি গাড়ছে । যেকজন বাংলাদেশি মুসলিম অনুপ্রবেশকারী ধরা পড়ছে তা হিমশৈলের চুড়া মাত্র । কোটি কোটি বাংলাদেশি কয়েক দশক ধরে পশ্চিমবঙ্গসহ বিভিন্ন রাজ্যে ঘাঁটি গেড়েছে বলে অভিযোগ ওঠে ।।

