এইদিন ওয়েবডেস্ক,ইসলামাবাদ,০২ মে : অল্প বয়স থেকে শিশুদের সন্ত্রাসবাদের শিক্ষা ও নাশকতা চালানোর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসাবে মূলত মাদ্রাসাগুলিকে ব্যবহার করে পাকিস্তান । যেকারণে ওই মাদ্রাসাগুলিতেই কুখ্যাত সন্ত্রাসীদের আনাগোনা থাকে । শিক্ষাকেন্দ্রের আড়ালে সন্ত্রাসীরা আত্মগোপন করে থাকে । ভারত ও পাকিস্তানের চলতি উত্তেজনার মাঝে এমনই মাদ্রাসাগুলিকে ভারতীয় বিমানবাহিনী নিশানা করতে পারে এই আশঙ্কায় ৪৪৫ টি মাদ্রাসা বন্ধ করে দিল পাকিস্তান । ওই মাদ্রাসাগুলি রয়েছে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর ও গিলগিট-বেলুচিস্তানে । বার্তা সংস্থা রয়টার্স বৃহস্পতিবার (১ মে) এক প্রতিবেদনে জানায়, হামলার আশঙ্কায় পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের সব মাদরাসা ১০ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।গরম ও তাপপ্রবাহের জন্য মাদরাসা ছুটির কথা বলা হলেও পাকিস্তান কাশ্মীরের ধর্মবিষয়ক দপ্তরের পরিচালক হাফিজ নাজির আহমেদ রয়টার্সকে জানান, হামলার আশঙ্কা থেকেই মূলত প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি আরও জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে লক্ষ্য করে যেকোনো সময় হামলা চালাতে পারে ভারতের সামরিক বাহিনী। আশঙ্কা করা হচ্ছে, মাদ্রাসা গুলোকে জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করে হামলার লক্ষ্যবস্তু বানাতে পারে ভারত। আমরা শিশুদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলতে চাই না।
জানা গেছে, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের দুই অঞ্চল আজাদ ও গিলগিট-বেলুচিস্তানে মোট ৪৪৫টি ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা মাদরাসা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৬ হাজারেরও বেশি।গত ২২ এপ্রিল পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে পাকিস্তানিদের ফিরে যেতে বলা হয়েছে। সব ধরনের বাতিল হয়েছে ভিসা। সিন্ধু নদের জলবণ্টন চুক্তি স্থগিতও করা হয়েছে । পাল্টা একই ধরনের পদক্ষেপ দিয়েছে পাকিস্তানও। সিন্ধু নদের জলবণ্টন চুক্তি স্থগিতে ভারতের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া পাকিস্তানের আকাশসীমা নিষিদ্ধ, সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধের ঘোষণা করেছে ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ জানান, সিন্ধু জল বণ্টন চুক্তি স্থগিতের পদক্ষেপকে ‘যুদ্ধের ঘোষণা’ হিসেবে দেখছে পাকিস্তান। তিনি বলেছেন, যেকোনো মূল্যে নিজের জল অধিকার রক্ষা করবে পাকিস্তান। এদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে প্রতিটি ভারতীয় নাগরিকের ‘রক্ত ফুটছে’। হামলায় জড়িত প্রত্যেককে কঠিনতম শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। শুধু তাই নয়, সীমান্তে যেকোনো ধরনের হুমকি মোকাবিলায় তিন বাহিনীকে অভিযানের পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে দিয়েছেন তিনি ।
পাকিস্তানের পাশাপাশি তাদের দোসর বাংলাদেশ বলছে, পাকিস্তান যে কাশ্মীরে হামলা চালিয়েছে, তার জোরালো প্রমাণ এখনও দেখাতে পারেনি ভারত। এ অবস্থায় দিল্লি কোনো পদক্ষেপ নিলে বিশ্ব মঞ্চে তার ন্যায্যতা পাওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে, পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে চমলান সামরিক সংঘর্ষের আশঙ্কা যদি বাড়তে থাকে তাহলে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হতে পারে বলে মনে করছে বাংলাদেশের পাকিস্তানপন্থী মিডিয়া ।।