এইদিন ওয়েবডেস্ক,পুরুলিয়া,২৮ এপ্রিল : পাকিস্তানের সমর্থকদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী । অসমের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা সাফ বলে দিয়েছেন,’আমার রাজ্যের কেউ পাকিস্তানকে সমর্থন করলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে ।’ এমনকি তার উপর দেশদ্রোহিতার ধারাও লাগানো হবে বলে তিনি জানান । বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সেভাবে পাকিস্তান প্রেম লক্ষ্য করা যাচ্ছে না । কারণ গ্রেফতারের ভয় । উল্টো চিত্রটা দেখা যাচ্ছে অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে । কর্নাটকের বেঙ্গালুরুতে হিজাব পরা দুই মহিলাকে সড়কপথে লাগানো পাকিস্তানের পতাকা খুলে তাদের পাকিস্তানের প্রতি প্রেম দেখিয়েছিল । সেই ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে৷ একি চিত্র দেখা গেল পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার রঘুনাথপুরে।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতার শুভেন্দু অধিকারী একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন এক্স-এ । সেই ভিডিওতে তিনজন যুবককে সড়ক পথের মাঝে বাইক লাগিয়ে তর্কাতর্কি করতে দেখা গেছে । আসলে, ওই সড়কের উপরেই পহেলগামে হিন্দু নরসংহারের প্রতিবাদে পাকিস্তানের পতাকা সাঁটানো হয়েছিল । যে কারণে চরম ক্ষিপ্ত হয় ওই তিন মুসলিম যুবক । তাদের মধ্যে এক যুবককে বলতে শোনা যায়, ‘তোমরা রাস্তায় পতাকা লাগিয়েছো কেন ?’ তখন ভিডিও করা ব্যক্তি বলেন, ‘তোরা যা করবি কর রাস্তা থেকে তোদের বাইকটা সরা ।’ উত্তরে ওই মুসলিম যুবক বলে, ‘না, বাইক থাকবে ।’ এরপর তারা রাস্তা থেকে পাকিস্তানের পতাকা সরিয়ে ফেলে ।
ওই পাকিস্তানি প্রেমী যুবকদের গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী এবং অগ্নিমিত্রা পাল । শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন,’পুরুলিয়া জেলার রঘুনাথপুরের রাষ্ট্রবাদী সহ-নাগরিকদের আমার জাতীয়তাবাদী অভিনন্দন ও প্রণাম জানাই। কাশ্মীরের পাহেলগাঁও-এ পাকিস্তানের মদতপুষ্ট উগ্রপন্থীদের দ্বারা নির্দোষ হিন্দু পর্যটকদের হত্যার প্রতিবাদে রঘুনাথপুরের রাষ্ট্রপ্রেমী জনগণ রাস্তায় পাকিস্তানের পতাকা চিটিয়ে দেয়, কিন্তু কিছু দেশদ্রোহী এসে সেগুলো ছিঁড়ে তুলে দেয়। তার পর ওই রাষ্ট্র বিরোধীদের উত্তম মধ্যম দেয় রাষ্ট্রবাদী জনতা। এ বিষয়ে রঘুনাথপুরের পুলিশ এখনো চুপ, কারণ পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনের থেকে বেশি কিছু আশা করা বৃথা। আগামীকাল দুপুর ১২টার মধ্যে পাকিস্তান প্রেমীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে হবে নয় তো দেশ বিরোধী কাজের জন্যে রঘুনাথপুর থানা ঘেরাও করা হবে।’
একই ঘটনা প্রসঙ্গে অগ্নিমিত্রা পাল বলেছেন, ‘আজ পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে কাশ্মীরের পাহেলগাঁও তে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট উগ্রপন্থীদের হামলায় নিহত ২৬জন নিরীহ হিন্দুদের হত্যার প্রতিবাদে পাকিস্তান ও মৌলবাদীদের জেহাদিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখাচ্ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। হঠাৎই সেখানে কয়েক জন যুবক এসে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের এই প্রতিবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়, এবং পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দেয়। ভারতে থেকে পাকিস্তানের সমর্থন কখনই মানা সম্ভব নয়। আমি একজন জনপ্রতিনিধি তথা ভারতের নাগরিক হয়ে প্রশাসনের কাছে দাবি রাখছি ওই যুবক দের চিহ্নিতকরণ করে দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দেওয়া হোক।’
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমদের একটা বড় অংশের মধ্যে পাকিস্তানের জন্য প্রেম লক্ষ্য করা যায় । দিন দুয়েক আগে আসানসোলে ওয়াকফ সংশোধিত আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মিছিলে “পাকিস্তান জিন্দাবাদ” শ্লোগান উঠেছিল । সেই ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করে বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় লিখেছিলেন,’গতকাল আসানসোলে তথাকথিত ওয়াকফ বিরোধী বিক্ষোভের সময় পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দেওয়া হয়।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গকে ইসলামী খিলাফতে পরিণত করেছেন।ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে-র প্রধান হুসেন সোহরাওয়ার্দী, এনার মত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রাপ্তি টাই অর্জন করেছেন ।’।