এইদিন ওয়েবডেস্ক,আসানসোল,২৪ এপ্রিল : গত মঙ্গলবার দুপুর ২ টো নাগাদ কাশ্মীরের পহেলগাঁয়ে হিন্দু নরসংহার চালিয়েছিল ইসলামপন্থী সন্ত্রাসীরা৷ পাকিস্তান-ভিত্তিক নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই- তৈয়বার সহযোগী রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) পর্যটকদের উপর গুলি চালিয়েছে। এই হামলায় মূলত হিন্দুদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছিল এবং এর ফলে ২৬ জন পর্যটক নিহত হন । এই ঘটনাটি দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে, সারা দেশের মানুষ এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে। কিন্তু তৃণমূলের নেতারা এই সন্ত্রাসী হামলায় “হিন্দু-মুসলিম” দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতে রাজি নয় । খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জির কথায়,’এদের কোন জাত হয় না, ধর্ম হয় না ।’ তৃণমূলের আরেক মন্ত্রী হাকিমের কথায়, হিন্দু মুসলিম নয়, ভারতীয়রা মারা গেছে ।’
এবারে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের তৃণমূলের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহাও পহেলগাঁয়ে হিন্দু নরসংহারকে “হিন্দু-মুসলিম” দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখার বিরোধিতা করেছেন । আর কথায়,’এটা গদি মিডিয়া মাত্রাতিরিক্ত অপপ্রচার যুদ্ধ’ । জনৈক সাংবাদিক কাশ্মীরের পহেলগাঁয়ে হিন্দু নরসংহার নিয়ে শত্রুঘ্ন সিনহাকে প্রশ্ন করলে তিনি উত্তরে বলেন, ‘এ হিন্দু হিন্দু কি করছেন ? হিন্দু মুসলমান সব ভারতীয় ওখানে ৷ এই সমস্ত গদি মিডিয়া মাত্রাতিরিক্ত অপপ্রচার যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে । আমার বন্ধু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তরফ থেকে এই অপপ্রচার ব্যাপকভাবে চলছে । আমি মনে করি এটা খুব সংবেদনশীল বিষয়৷ এটাকে খুব গভীরভাবে দেখা উচিত৷ এই ধরনের কথা এখন বলা উচিত নয় এবং এমন কিছু কাজ করা উচিত নয় যাতে উত্তেজনা বাড়ে ।’
এর আগে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের সাম্প্রদায় হিংসার দায় বিজেপির ঘাড়ে চাপিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা (শত্রুঘন সিনহা)৷ তিনি বলেছিলেন, হিংসা, দাঙ্গা, অথবা ভাগ করে শাসন করার কৌশল যা মানুষের ক্ষতি করে তা গভীরভাবে নিন্দনীয়। আমরা কখনই এই ধরনের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করব না এবং সর্বদা তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াব কারণ এগুলি সমাজের জন্য ক্ষতিকর। মুর্শিদাবাদে যা ঘটছে তা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে মনে হচ্ছে, কিছু বিরোধী দলের (বিজেপি) সদস্যের একটি মরিয়া পদক্ষেপ। নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে, এই ধরনের কর্মকাণ্ড তাদের হতাশাকে প্রতিফলিত করে, বিশেষ করে যেহেতু তারা কখনও বাংলায় স্থান অর্জন করতে পারেনি।’
প্রসঙ্গত, একসময় বিজেপিতেই ছিলেন শত্রুঘ্ন সিনহা । কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে তাকে পছন্দমত আসন না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে তৃণমূলে যোগদান করেন । ২০২৪ সালের লোকসভার ভোটে তৃণমূলের টিকেটে আসানসোল আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি জয়ী হন। তারপর থেকেই তিনি প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপির বিরুদ্ধে লাগাতার তোপ দেগে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, শত্রুঘ্ন সিনহার মেয়ে অভিনেত্রী সোনাক্ষীর বিয়ে হয়েছে দীর্ঘদিনের প্রেমিক অভিনেতা জাহির ইকবালের সঙ্গে । গুজবও ছড়িয়েছিল, মেয়ের ভিন্নধর্মী জাহিরকে বিয়ের সিদ্ধান্তে মোটেও খুশি নন তাঁর অভিনেতা-রাজনীতিবিদ বাবা শত্রুঘ্ন সিনহা। শোনা গিয়েছিল এটা নিয়ে নাকি তাঁদের বাড়ি ‘রামায়ণ’-এ ঝড় বয়ে গিয়েছিল। যদিও গুঞ্জন উড়িয়ে শেষপর্যন্ত মেয়ের বিয়েতে হাজির ছিলেন শত্রুঘ্ন সিনহা। তবে দিদির বিয়েতে ছিলেন না সোনাক্ষীর দুই ভাই লব ও কুশ ।
Hauterrfly-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সোনাক্ষী সিনহা বলেছিলেব, ‘আমরা ধর্ম নিয়ে কখনও ভাবিনি। আমরা দুজন মানুষ একে অপরের প্রেমে পড়েছিলাম, যাঁরা একে অপরকে বিয়ে করতে চেয়েছিল, আর আমরা ঠিক এটাই করেছি। এই বিয়েতে কেউ কারও ধর্ম একে অপরের উপর চাপিয়ে দেয়নি। ও ওর ধর্ম আমার উপর চাপিয়ে দেয়নি, আমিও আমার ধর্ম ওর উপর চাপিয়ে দিচ্ছি না। আমরা কখনও ধর্ম নিয়ে আলোচনাও করি না। আমরা এটা নিয়ে ভাবিও না। বরং আমরা একে অপরের সংস্কৃতি, ধর্মীয় রীতিনীতিকে শ্রদ্ধা করি। ও ওর ধর্মের রীতিনীতি মেনে চলি, আর আমি আমার।’ সোনাক্ষীর কথায়, ‘ও আমার বাড়িতে দীপাবলির পুজোর সময় এসে বসে। আমিও ওদের নিয়াজের সময়ে উপস্থিত থাকি। আমরা একে অপরের পরিবারকেও সম্মান করি। আর এটাই তো হওয়া উচিত।’ যদিও বিয়েতে শত্রুঘ্ন সিনহার স্ত্রীর শারীরিক অভিব্যক্তি মোটেই স্বাভাবিক ছিল না ।।

