গোধূলির আলোয় এই পঞ্চাশোর্ধ মেঘলাকে মোহময়ী করে তুলেছে ।
মেঘলা অপলক দৃষ্টিতে সাগরের দিকে তাকিয়ে কি যেন খুঁজে চলেছে ।
পাশে ঋত্বিক
এক মুখ কাঁচা পাঁকা দাড়ি ,চোখে চিরন্তন ক্লান্তি সত্ত্বেও তাঁর মুখে লুকিয়ে আছে এক অদ্ভুত তৃপ্তি। সমুদ্রের ঢেউ বারবার ছুঁয়ে যাচ্ছে ওদের শরীর মন আর স্মৃতিকে।
নীরবতা ভেঙে মেঘলা জিজ্ঞেস করে তুমি কবিতা লেখ?
হ্যাঁ কখনো কখনো তবে অনেকদিন হলো কবিতা লিখিনি। উত্তর দেয় ঋত্বিক।
কেন লিখ না ! কবিতা
কি ফুরিয়ে গেছে? মেঘলার কন্ঠে কৌতুক ।
ঋত্বিক-না ভালো লাগে না।
মেঘলা- “দূর থেকে দেখেছি তোমায় অসীম মুগ্ধতায়, ছুঁয়ে দেখিনি কখনো-তুমি “সত্যি” না, “স্বপ্ন”। শুধু কল্পনার রঙে রাঙিয়েছি এই অবুঝ মন”-
এই লাইনগুলো তুমি লিখেছিলে তো !
ঋত্বিক মাথা নেড়ে বলে হ্যাঁ। সেই অনেকদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে বার্ষিক ম্যাগাজিনে বোধ হয়।
মেঘলা তার শান্তিনিকেতনের ঝোলানো ব্যাগ থেকে পুরনো ম্যাগাজিন বের করে বলে” যত্ন করে রেখেছি আমি”।
ঋত্বিক নির্লিপ্ত ভাবে তাকিয়ে থাকে ।
মেঘলা ঋত্বিকের দিকে তাকিয়ে বলে “বলনি কেন সেদিন” ?
ঋত্বিক- কি করে বলব” তুমি তো সেদিন অন্য কারোর হাত ধরেছিলে” ।
মেঘলা- তুমি জানো আমি এখন আর সেই মানুষটার সঙ্গে নেই !
ঋত্বিক -” জানি”
মেঘলা-তবুও তুমি একবারও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করো নি !
ঋত্বিক – কেন করব ?
মেঘলা-এত অভিমান তোমার!
ঋত্বিক-অভিমান নয় সংকোচ- যদি তুমি আমাকে আবার রিজেক্ট করো ?
মেঘলা- তাহলে আজ !
ঋত্বিক আপন মনে বলে ওঠে
“তবুও আমি আসিনি কোন ফুল হাতে, কোন প্রতিশ্রুতি নিয়ে না ,আমি এসেছি শুধু জানাতে তুমি ছিলে ,আছো আমার প্রতিটি অসমাপ্ত কবিতার ছায়ায়”……