এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,২১ এপ্রিল : সাম্প্রদায়িক হিংসার শিকার মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের বেতবোনা এলাকার শতাধিক হিন্দু পরিবার ভিটেমাটি ছেড়ে মালদা জেলার বৈষ্ণবনগরের পারলালপুর গ্রামের হাইস্কুলে আশ্রয় নিয়েছিল । তারপর থেকেই সেই বাস্তুচ্যুতদের সঙ্গে অমানবিক আচরণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে । বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, ওই পরিবারগুলিকে পারলালপুর হাইস্কুলে কার্যত বন্দি করে রাখা হয় । খাবার অযোগ্য চালের খিচুড়ি খেতে বাধ্য করা হয় । এমনকি ঘরছাড়ারা যাতে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে না পারে সেজন্য গোটা স্কুল নীল ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ ।
এবারে বৈষ্ণবঘাটার আইসি ও বিডিও-এর বিরুদ্ধে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের বেতবোনা এলাকার ওই ঘরছাড়া পরিবারগুলিকে জোর করে স্কুল থেকে উচ্ছেদ করার অভিযোগ তুললেন বিজেপি নেতা দেবদত্ত মাঝি । তিনি বিডিও ও আইসির ছবি পোস্ট করে এক্স-এ লিখেছেন, ‘মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানের মুসলিমদের হিংসার শিকার, যারা মালদার পারলালপুর হাই স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাদের বৈষ্ণবঘাটার বিডিও সুকান্ত সিকদার এবং আইসি বিপ্লব হালদার দুর্ব্যবহার করে তাড়িয়ে দিয়েছেন এবং জোর করে বের করে দিয়েছেন।’ তিনি মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে লিখেছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আপনার হাত হিন্দুদের রক্তে ভেজা। আমরা ভুলব না এবং ক্ষমাও করব না ।’ পাশাপাশি রাজ্যের হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে তিনি আহ্বান জানান,’হে আমার প্রিয় হিন্দু বোনেরা এবং ভাইয়েরা, আগামী সংগ্রামের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করুন। কৃষ্ণের পথ অনুসরণ করুন এবং যুদ্ধের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করুন।’ পাশাপাশি তিনি নিজের একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করে লিখেছেন,গত রাতে আমি এই ভিডিওটি রেকর্ড করেছি কিন্তু প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে এটি পোস্ট/আপলোড করতে পারিনি৷’
প্রসঙ্গত,ওয়াকফ আইনের বিরোধিতার নামে গত ১১ ও ১২ এপ্রিল মুর্শিদাবাদের একাধিক এলাকায় কার্যত তান্ডব চালায় স্থানীয় মুসলিমরা । সামশেরগঞ্জের জাফরাবাদের বাসিন্দা পিতা হরগোবিন্দ দাস ও তাঁর ছেলে চন্দন দাসকে নৃশংসভাবে খুন করা হয় । নির্বিচারে ঘরবাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে । প্রাণ বাঁচাতে শিশু থেকে বৃদ্ধ সকল বয়সের মানুষ সামশেরগঞ্জের বেতবোনা এলাকা থেকে মালদার পারলালপুর গ্রামে আশ্রয় নেয় । পারলালপুর হাইস্কুলে আশ্রয় নেওয়া ওই পরিবারগুলিকে ‘ডিটেনশন ক্যাম্পের থেকেও নিকৃষ্ট অবস্থায়’ রাখা হয়েছিল বলে গতকাল শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন । অবশেষে রবিবার ওই অস্থায়ী শিবির বন্ধ করে দিল মালদার বৈষ্ণবনগরের প্রশাসন । কিন্তু যে ৮৫টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল পারলালপুরে তাদের অধিকাংশ ঘরবাড়ি কার্যত ধূলিস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধী দলনেতার । ফলে তারা কোথায় আশ্রয় নেবে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি ।।