এইদিন ওয়েবডেস্ক,মুর্শিদাবাদ,২০ এপ্রিল : মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের জাফরাবাদের বাসিন্দা পিতা হরগোবিন্দ দাস ও তাঁর ছেলে চন্দন দাসকে নৃশংস খুনের ঘটনার মূল ষড়যন্ত্রকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে,ধৃতের নাম জিয়াউল শেখ । তার বাড়ি পার্শ্ববর্তী সুলিতলা পূর্বপাড়া গ্রামে । খুনের ঘটনার পর সে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় গিয়ে আত্মগোপন করে । সেখান থেকেই শনিবার রাতে পুলিশ তাকে ধরে । জিয়াউল শেখের গ্রেফতারির কথা নিশ্চিত করে মুর্শিদাবাদের ডিআইজি সৈয়দ ওয়াকার রাজা । জিয়াউল শেখই স্থানীয় মুসলিমদের একাংশকে উস্কানি দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ । এনিয়ে বাবা-ছেলে খুনের ঘটনায় ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪। এর আগে ৩ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।
নয়া ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদের নামে গত ১১ এবং ১২ এপ্রিল মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে স্থানীয় মুসলমানরা সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ায় বলে অভিযোগ । সেই আবহেই বাড়ি থেকে টেনে বের করে পিতা হরগোবিন্দ দাস ও তাঁর ছেলে চন্দন দাসকে নৃশংসভাবে খুন করা হয় । বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ,’রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসই দাঙ্গা উসকে দিয়েছে৷ তিনি শনিবার কলকাতার সভায় বক্তব্য রাখার সময় ফারাক্কার তৃণমূলের বিধায়ক মণিরুলের দাদা নওসাদ, ধুলিয়ানের তৃণমূলের চেয়ারম্যান ইনজামাম,ধুলিয়ান টাউনের তৃণমূলের সভাপতি ও কাউন্সিলর মেহেবুব আলম ও সামশেরগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলামকে দাঙ্গা ছড়ানোর জন্য অভিযুক্ত করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন,’সিমি, আনসারুল বাংলার মতো চরমপন্থী ইসলামী গোষ্ঠীগুলি এবং সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীরা মুর্শিদাবাদকে হিন্দু মুক্ত করতে চায় ।’
যদিও মুর্শিদাবাদের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় আন্তর্জাতিক হাত আছে বলে দাবি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । এক্ষেত্রে তিনি এএনআই-এর এক রিপোর্টকে হাতিয়ার করেন । তিনি দাবি করেন যে বিএসএফ নাকি বাংলাদেশি জঙ্গিদের সীমান্ত পার করে ঢুকতে সাহায্য করেছিল । যদিও তার নেতৃত্বাধীন পুলিশই মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়েছে । মুর্শিদাবাদে হিংসার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১০০টিরও বেশি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে এবং গ্রেফতার করা হয়েছে ২৭৬ জনকে । আর পুলিশের জালে ধরা পড়া সবাই স্থানীয় ও আশেপাশের গ্রামেরই বাসিন্দা । যেকারণে আক্রান্ত হিন্দুরা মমতা ব্যানার্জি ও তার দলের উপর চরম ক্ষুব্ধ । হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসের পরিবারের জন্য যে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন তাদের পরিবার ।।