পশ্চিমবঙ্গ আর কেরালা আইনসভায় পাশ হওয়া আইন মানতে অস্বীকার করছে । আইনসভায় হস্তক্ষেপ করতে শুরু করেছে সুপ্রিম কোর্ট । এই ইঙ্গিত দেশের অখন্ডতার পক্ষে শুভ নয় । এই পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য দরকার একটা বড় পদক্ষেপ । আর সেটাই সম্ভবত হতে চলেছে । কারন গত কয়েকদিন ধরে দিল্লির রাজনৈতিক মহলগুলিতে প্রচুর তৎপরতা চলছে। দীর্ঘ বৈঠকের ম্যারাথন, রাষ্ট্রপতির সাথে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বৈঠক এবং সংঘের সমন্বয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য। এসব কিছু ইঙ্গিত দেয় যে সরকার এখন ‘কর অথবা মর’-এর মেজাজে রয়েছে।
কিছু সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ পাইপলাইনে রয়েছে, এবং এখন সম্ভবত “জোট বাঁচাও” ভাবার পরিবর্তে “সংবিধান বাঁচাও” অবস্থান নেওয়া হবে। কারণ যদি আজই এর সমাধান না হয়,আগামীকাল এই সমস্যাগুলি সমগ্র দেশের মেরুদণ্ড ভেঙে দেবে।
১. বাংলার সাম্প্রদায়িক হিংসা :
যেখানে দাঙ্গার জন্য বিএসএফকে দায়ী করা হচ্ছে – এটি কেন্দ্রীয় সরকারের উপর সরাসরি আক্রমণ।
সংসদের আইন অনুযায়ী বিশেষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে মমতা সরকার কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে। এটা কি ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার অবমাননা নয়?
২. তামিলনাড়ুতে সাংবিধানিক সংকট:
যেখানে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর দ্বন্দ্বকে এমন এক মোড় দিয়েছে যে এখন রাষ্ট্রপতিকেও ‘নির্দেশনা’ দেওয়া হচ্ছে। এটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর উপর সরাসরি আক্রমণ।
৩. রাজ্য বনাম সংসদ:
এখন কিছু রাজ্য সংসদ কর্তৃক পাস হওয়া আইনগুলিকে এই বলে আটকাতে শুরু করেছে যে সেগুলি গ্রহণযোগ্য নয় – যেন এটি কোনও দেশ নয় বরং একটি কনফেডারেশন। এখন কি প্রতিটি রাজ্য নিজস্ব ব্যবস্থা চালাবে? আর এই সবই কেবল ‘রাজনীতি’ নয়, এটি একটি সুপরিকল্পিত আদর্শিক লড়াইয়ের অংশ। রাহুল গান্ধী ইতিমধ্যেই বলেছেন – “আমরা আরএসএস এবং ভারতীয় রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লড়াই করছি।” এখন তামিলনাড়ু, বাংলা, কেরালার মতো রাজ্যগুলি সেই ‘লড়াই’কে বাস্তব রূপ দিতে শুরু করেছে।
সংঘের সমন্বয় সভার বার্তাটিও স্পষ্ট:এখন আমাদের সামনের পায়ে খেলতে হবে, পিছনের পায়ে নয়। জোট যদি বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তবুও আমাদের থামা উচিত নয় – দেশের অখণ্ডতা, সংবিধানের শ্রেষ্ঠত্ব এবং শাসনব্যবস্থার মর্যাদার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছুই নয়।
সম্ভাবনাগুলো কী কী?
সাংবিধানিক ব্যাখ্যা নাকি সংশোধনী? রাজ্যগুলিকে সতর্কীকরণ নাকি ৩৫৬ ধারার মতো কঠোর ব্যবস্থা? নাকি দেশব্যাপী একটি বড় বিতর্কের সূচনা? তবে একটা জিনিস নিশ্চিত-এগুলো কেবল সভা নয়, এটা ঝড়ের আগের শান্ত ভাব। এখন দেখার বিষয় হলো, এই আগুন নীতিতে পরিণত হয়ে শান্ত হয়, নাকি সিদ্ধান্তে পরিণত হয়ে জ্বলে ওঠে। কিন্তু এতটুকু নিশ্চিত -২০২৫ সালের এই যুদ্ধ কেবল রাজনৈতিক নয়, এটি একটি আদর্শিক যুদ্ধ ।।