এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১৬ এপ্রিল : পূর্ব বর্ধমান জেলার ভূমি অফিসের বিরুদ্ধে ভুয়া দলিল দেখিয়ে অর্থের বিনিময়ে একজনের জমি অন্যের নামে রেকর্ড করে দেওয়ার অভিযোগ উঠলো ৷ আজ বুধবার দুপুরে প্রতারিত পরিবারের লোকজন রেকর্ড সংশোধনের দাবিতে তুমুল বিক্ষোভ দেখান । ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় । খবর পেয়ে আসে ভাতার থানার পুলিশ । প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছে বলে জানা গেছে ।
জানা গেছে, ভাতার ব্লকের বলগোনা মৌজার অন্তর্গত ৭৩৬ দাগের (জেএল নম্বর : ৭১) জমির একাংশ নিয়ে বিবাদের সূত্রপাত । ১১ শতক পরিমান ওই জমির মালিক হলেন ভাতার থানার পাটনা গ্রামের পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা শেখ মহম্মদ ইউনূস৷ ইউনূসের ছেলে সাইফর আলি বলেন, ‘আমাদের বাবা বহু বছর আগে ওই ১১ শতক জায়গার মধ্যে ৯ শতক জায়গা একই গ্রামের বাসিন্দা শেখ নিয়ামতুল্লাকে বিক্রি করেন । নিয়ামতুল্লা মারা যাওয়ার পর তার চার ওয়ারিশ শেখ জাহাঙ্গীর, শেখ জসিমুদ্দিন, তহমিনা বিবি ও আঙ্গুরা বিবি নিজেদের কেনা জায়গার পাশাপাশি বাবার ৩ শতক জায়গা ভুয়া দলিল দেখিয়ে অর্থের বিনিময়ে এলআর রেকর্ড করে নেয় ।’
জানা গেছে, এই মর্মে রেকর্ড সংশোধনের জন্য চলতি বছরের ২৮ মার্চ ভাতার বিএলআরও-এর কাছে একটা আবেদন জানান মহম্মদ ইউনূস৷ সেই আবেদনের ভিত্তিতে দপ্তর তদন্তে নেমে জানতে পারে যে ১৯১৯ নম্বর দলিলের বলে ২০২০ সালের ২১ ডিসেম্বর পূর্ব বর্ধমান জেলার ভূমি অফিসে বলগোনা মৌজার অন্তর্গত ৭৩৬ দাগের মোট ১১ শতক জায়গাটি রেকর্ড করে নিয়েছে শেখ নিয়ামতুল্লার পরিবার । এরপর গত ১১ এপ্রিল শেখ নিয়ামতুল্লার দুই মেয়ে আঙ্গুরা বিবি ও তহমিনা বিবি এবং দুই ছেলে শেখ জাহাঙ্গীর ও শেখ জসিমুদ্দিনের বিরুদ্ধে ভাতার ও বর্ধমান সদর থানায় ভারতীয় ন্যায় সংহিতার(বিএনএস) অধীনে ৩১৮(৪), ৩৩৬(৩), ৩৩৮/৩৪০(২) ধারায় ও একটি এফআইআর দায়ের করেন ভাতার বিএল এন্ড আরও প্রদীপ মণ্ডল ।
মহম্মদ ইউনূসের ছেলে সাইফর আলি বলেন, ‘তার পরেও এযাবৎ রেকর্ড সংশোধন করা হয়নি । আজ অফিসে এলে ভাতার বিএলআরও বলে ৬ মাস পরে আসতে । কিন্তু অফিসের দুর্নীতির কারনে কেন আমাদের চিন্তায় দিন কাটাতে হবে ? কেন বারবার কাজকর্ম ফেলে অফিসে ছুটে আসতে হবে ?’
জানা যায়,এদিন দুপুরে সাইফর আলি তার নিজের কয়েকজন ছেলে ও ভাইকে সাথে নিয়ে ভাতার বিএলআরও অফিসে এসে অবিলম্বে রেকর্ড সংশোধনের দাবি জানায় । এসেছিলেন শেখ নিয়ামতুল্লার পরিবারের লোকজনও । কিন্তু বিএলআরও সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আরও কিছু সময় চাইলে সাইফর আলিরা ক্ষিপ্ত হয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে । অফিস থেকে খবর পেয়ে ছুটে আসে ভাতার থানার পুলিশ । পুলিশ সাইফর আলিদের বোঝানোর চেষ্টা করে৷ কিন্তু রেকর্ড সংশোধনের দাবিতে অনড় থাকে সাইফর আলিরা ।এই বিষয়ে ভাতার বিএলআরও বা শেখ নিয়ামতুল্লার পরিবারের তরফে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ।।