এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৬ এপ্রিল : রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মঙ্গলবার রাতে এক্স-এ একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন৷ সেই ভিডিওতে তিনজন ইসলামিক নেতাকে লোক দেখা গেছে । তাদের মধ্যে একজন নিজেকে অল ইন্ডিয়া ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের উত্তর দিনাজপুরের জেলা সভাপতি মোহাম্মদ মাওলানা নাসির উদ্দিন হিসাবে পরিচয় দিয়েছেন । ওই বৃদ্ধকে বলতে শোনা গেছে, ‘১৫ তারিখে সুপ্রিম কোর্টে আমাদের শুনানি আছে । আমরা সেই তারিখের জন্য অপেক্ষা করছি । আদালতের রায় যদি আমাদের পক্ষে আসে, যদি নির্দেশ দেয় যেই ওয়াকফ আইন অবৈধ,তাহলে আমরা কোথাও কিছু করবো না আমরা শান্তিতে থাকবো । যদি আদালতের রায় আমাদের বিরুদ্ধে যায় তাহলে মিছিল দূরের কথা, সত্যি করে বলছি, মুসলমানরা শহীদ হতে জানে, শহীদ হলে আমাদের জান্নাতের দরজা আছে । আমরা ইসলামের জন্য লড়াই করব । কওমকে বাঁচানোর জন্য,মসজিদ কে বাঁচানোর জন্য, দুর্গা কে বাঁচানোর জন্য, মাদ্রাসাকে বাঁচানোর জন্য, আমরা লড়াই করব যদি আমাদের পক্ষে আদালতের রায় না যায় ।
ওই ইমাম বলেন, শুধু হেমতাবাদ এ নয়, হেমতাবাদ থেকে দিল্লী পর্যন্ত পাকা রাস্তায় লোক শহীদ হয়ে যাবে। নিজের ছুরি দিয়ে গলা কেটে পড়ে যাবে৷ এভাবে বহু মানুষ শহীদ হয়ে যাবে । ওই কেন্দ্র সরকার কি করে থাকে আর কি করে আইন করতে পারে সেটাই দেখব । যেমন যেমন কৃষক আইন ছিল, সেটা প্রত্যাহার করেছে । ওর থেকেও ভয়ংকর হবে ।’
তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ‘আমি অল ইন্ডিয়া ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের উত্তর দিনাজপুরের জেলা সভাপতি হিসাবে আমি বলে দিচ্ছি যে যদি আমাদের পক্ষে আদালতের রায় না আসে, ওয়াকফ বোর্ডের যে আইন ছিল সেই ভাবে যদি না থাকে, অন্যভাবে যদি আইন টাকে করে, তাহলে আমরা ছেড়ে দেবো না । রাস্তাঘাটে সব সময় অবরোধ হবে । আমি বলে দিচ্ছি ১৫ তারিখের পরে যেখানে সেখানে রেল অবরোধ করবো । সব জায়গায় রেল অবরোধ হবে । রেলগুলো বন্ধ করবো আগে । শহরে করতে যাব না, গ্রামে এসে বন্ধ করব গাড়ি-রেল-রাস্তা । মোটর ট্রেন সব বন্ধ থাকবে৷ শুধু পশ্চিম বাংলা নয়, গোটা ভারতবর্ষকে আমরা বন্ধ করে দেব ।’
শুভেন্দু অধিকারী ওই ইমামের বক্তব্য লিখে প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন,’এই সব কথা বলা ব্যক্তি নিজেকে উত্তর দিনাজপুর জেলার অল ইন্ডিয়া ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সভাপতি বলে দাবি করছেন। এটি কি ভারতের সুপ্রিম কোর্টের জন্য হুমকি? যদি রায় অনুকূলে না আসে, তাহলে রাস্তা এবং রেলপথ বন্ধ করা হবে। তারা কেবল পশ্চিমবঙ্গ নয়, সমগ্র ভারতকে অচল করে দেবে ! অদ্ভুত ব্যাপার হলো, যারা ভয়াবহ পরিণতির হুমকি দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা করছে না। আইন-শৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এই ধরনের মৌলবাদীদের গ্রেপ্তার করার পরিবর্তে, আগামীকাল ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে এই ধরনের ‘নেতাদের’ সাথে মঞ্চ ভাগাভাগি করতে যাচ্ছেন, যা এখন দেশের আইন।’
প্রসঙ্গত, নয়া ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে আজ বুধবার সকাল ১০ টা থেকে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বৈঠকে বসতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । তিনি ছাড়াও উপস্থিত থাকবেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম । বৈঠকের আয়োজক অল ইন্ডিয়া ইমাম ও মুয়াজ্জিন অর্গানাইজেশন কর্তৃক আবেদন জানানো হয়েছে, ওয়াকফ শরিয়া আইনের অংশ, এতে হস্তক্ষেপ অনুমোদিত নয়! চলো! আসুন আমরা সবাই মিলে এই আইনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলি এবং আমাদের ধর্মীয় ও জাতীয় পরিচয় রক্ষা করি।’।