এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৫ এপ্রিল : মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানে সংখ্যাগুরু মুসলিমদের অত্যাচারে সংখ্যালঘু হিন্দুরা পালিয়ে পার্শ্ববর্তী মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরের পারলাল হাই স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে । সোমবার সেই বাস্তুহারাদের খোঁজ নিতে গিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার জানান,’তৃণমূল সমর্থিত জেহাদী শক্তির অমানবিক আক্রমণে মুর্শিদাবাদের হিন্দুরা আজ বাস্তুহারা। তারা নিজের জায়গায় শরণার্থী হিসেবে পরিণত হয়েছে, সেই সকল হিন্দুদের ঠাঁই হয়েছে মালদার পারলাল হাই স্কুল প্রাঙ্গনে ।’ অথচ হিন্দুদের এই পলায়নকে “এমন কিছু ঘটনা নয়” বলে মনে করছেন রাজ্যের মন্ত্রী ও কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম । ধুলিয়ানে সাম্প্রদায়িক হিংসা নিয়ে সোমবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ফিরদাদ হাকিম বলেন,’এমন কোনো ঘটনা নয় । এখানে এমন কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি । বাংলা থেকে বাংলাতেই যাচ্ছে । বাংলা সুরক্ষিত বলেই বাংলার এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাচ্ছে । সব ঠিক আছে ।’
এদিকে ফিরহাদ হাকিমের এই প্রকার দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অমানবিক মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় । তিনি এনিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন,’এটা একটি দুঃখজনক ঘটনা যে ফিরহাদ হাকিমের মতো একজন ব্যক্তি, যিনি সাম্প্রদায়িক ও উস্কানিমূলক বক্তৃতার ইতিহাস রাখেন, তিনি এখন কলকাতার মেয়রের মতো সম্মানিত পদে অধিষ্ঠিত। এই পদে একসময় দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস (১৯২৪ সালে প্রথম ভারতীয় হিসেবে), সুভাষচন্দ্র বসু প্রমুখ মহান ব্যক্তিত্বরা ছিলেন। ফিরহাদ হাকিম-এর এই উত্থান কলকাতার পরিশীলিত ভদ্রলোক সংস্কৃতির ক্ষয়ের প্রতীক।’
তিনি লিখেছেন,’এটা উদ্বেগজনক যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও সিনিয়র মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম মুর্শিদাবাদ থেকে হিন্দুদের বিতাড়নের পক্ষে না শুধু সমর্থন করছেন, বরং এতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন। বাঙালি হিন্দুরা কাশ্মীরি পণ্ডিতদের মতো নিজেদের মাতৃভূমিতে উদ্বাস্তু হয়ে পড়ছেন, যারা ধর্মীয় নিপীড়ন থেকে বাঁচতে কাশ্মীর ছেড়ে জম্মু ও ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছিলেন।’
ফিরহাদ হাকিম সম্পর্কে তিনি লিখেছেন,’এই একই ব্যক্তি কলকাতার একটি অংশকে “মিনি পাকিস্তান” বলে উল্লেখ করেছেন এবং ইসলামে ধর্মান্তরণের পক্ষে উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন। তিনি দাওয়াত-ই- ইসলামের মতো উদ্যোগের প্রকাশ্য সমর্থন করেছেন এবং অমুসলিমদের ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এমনকি তিনি একটি ইসলামিক আইন ও বিচারব্যবস্থায় পরিচালিত ভারতের কল্পনাও করেছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি তার নীরবতা অব্যাহত রাখেন, তবে তিনি এমন একজন ব্যক্তিকে ক্ষমতা দিচ্ছেন যার আদর্শগত উচ্চাকাঙ্ক্ষা শেষ পর্যন্ত তার নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে এবং বাংলার ইসলামিকরণের দিকে আরও গভীর ধাক্কা সৃষ্টি করতে পারে।’
প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিজেপি নেতা ও অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষও৷ তিনি লিখেছেন,’বাংলা সুরক্ষিত” বলেই নাকি হিন্দুরা মুর্শিদাবাদ থেকে পালিয়ে অন্য জেলায় পালাচ্ছেন।বাংলা ছেড়ে তো যাচ্ছেন না।’ এই মিথ্যে কথা বলতে যার লজ্জা লাগেনি তিনি তৃণমূলের মেয়র ও মন্ত্রী ববি হাকিম! বাহ বাহ।’ ফিরহাদের বক্তব্যের ভিডিও শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, ‘ভিডিওটা ক্লিক করে দেখুন হতভাগ্য হিন্দু মা বোনের অবস্থা।জেহাদি অত্যাচারে প্রাণ বাঁচাতে ভিটে মাটি ছাড়ছে!’

