এইদিন ওয়েবডেস্ক,মুর্শিদাবাদ,১২ এপ্রিল : রাজ্যের দুই প্রান্তে পুলিশকে ভিন্ন ধরনের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে । কলকাতায় যেখানে চাকরিহারা শিক্ষকের পেটে লাথি মেরে ‘বীরত্ব প্রদর্শন’ করার অভিযোগ উঠেছে, অন্যদিকে তখন মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে উগ্র বিক্ষোভকারীরদের হাত থেকে বাঁচতে পুলিশকে মসজিদে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে বলে জানা গেছে । রাজ্য বিজেপির যুবনেতা ও কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তরুনজ্যোতি তিওয়ারির কথায়, ‘সিদ্দিকুল্লাকে এসব হিংসাত্মক কান্ড করার জন্য ছেড়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার’ ।
মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভের নামে কার্যত তান্ডব চালাচ্ছে মুসলিম জনতা । দাবি করা হচ্ছে,চাপদানিতে বেসরকারি বাস, অ্যাম্বুলেন্স, ট্রাক আর বাইক জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে ।কয়েক হাজার মানুষ রীতিমতো তাণ্ডব চালায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি, দোকান ও মন্দিরেও হামলার অভিযোগ উঠেছে । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হতাহতের দাবি করা হলেও এবিষয়ে প্রশাসনের তরফ থেকে কিছু জানানো হয়নি । উলটে রাজ্য পুলিশের এক্স হ্যান্ডেলে দাবি করা হয়েছে যে জঙ্গিপুরের সুতি ও সামসেরগঞ্জের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে । জাতীয় সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে এবং ধরপাকড় অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ।
সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর হয়ে যায় যে দুষ্কৃতীদের ঠেকানো তো দূরের কথা, পুলিশকে নাকি মসজিদে গিয়ে নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে হয়। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নেয় রাজ্য পুলিশ । বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ সীমান্ত ডিআইজি পিআরও নীলোৎপাল কুমার পান্ডে বলেছেন,আজ মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে ওয়াকফ সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে জনতা জড়ো হয়েছিল। এরপর জনতা উচ্ছৃঙ্খল হয়ে পড়ে, যার ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছিল এবং বিএসএফ ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছে এবং স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য সেনা মোতায়েন করেছে৷’
তরুনজ্যোতি তিওয়ারি লিখেছেন,মুর্শিদাবাদের অবস্থা জেলাশাসকের আয়ত্তের বাইরে চলে গেছে এবং তারা BSF কে সাহায্যর জন্য অনুরোধ করেছেন। BSF সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে তাদের জাওয়ানদের পাঠিয়েছে এলাকা শান্ত করার জন্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবিলম্বে উচিত কেন্দ্র সরকারের কাছ থেকে সাহায্য চাওয়া এবং রাজ্যে CAPF deploy করানো। সিদ্দিকুল্লাকে ছেড়ে দিয়েছিল রাজ্য সরকার এই কীর্তি করার জন্য এবং সিদ্দিকুল্লা তার সংগঠন নিয়ে এবং অন্যান্য মৌলবাদী সংগঠনগুলোকে এক করে এই কীর্তি করে বেড়াচ্ছে।’
মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি বিডিও অফিসে মুসলিমদের হামলা ও ভাঙচুরের একটা ভিডিও শেয়ার করে রাজ্য বিজেপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার লিখেছেন,’মমতা ব্যানার্জির লালিত পালিত ‘শান্তির দূত’ বাহিনীর প্রবল পরাক্রমে শুধু পুলিশ বাহিনী পিছু হটলো, যানবাহন অগ্নিদগ্ধ হলো তাই নয় মুর্শিদাবাদের জলঙ্গীতে মুহূর্তের মধ্যে ভাঙচুর হয়ে গেলো আস্ত বিডিও অফিস! নির্বাচনের আগে এবং পরে যে সমস্ত বিডিও আধিকারিকদের আপনি আপনার ‘দলীয় ক্যাডার’ হিসেবে ব্যবহার করেছেন, আজ তাঁরাও মোক্ষম বুঝতে শিখেছেন এ কোন অরাজকতার রাজ্যে তাঁদের ঠাঁই মিলেছে! আপনার নির্লজ্জ সংখ্যালঘু তোষণে তাঁদের কার্যালয় (বিডিও অফিস) তো সুরক্ষিত তো নয়ই, এমনকি প্রাণ নিয়ে ডিউটি পালনও অসম্ভব!’