এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১১ এপ্রিল : তৃণমূল কংগ্রেস নেতা এবং মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল, ২০২৫) কলকাতার রামলীলা ময়দানে জমিয়তে-ই-উলেমা হিন্দের পশ্চিমবঙ্গ শাখা কর্তৃক আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে ভাষণ দেন, যেখানে তিনি প্রকাশ্যে ওয়াকফ (সংশোধনী) বিলের প্রতিবাদে ৫০টি স্থানে ১০,০০০ লোককে সংগঠিত করার এবং কলকাতা স্তব্ধ করার হুমকি দেন।
এর পাশাপাশি, তিনি বলেন, “জমিয়তে উলেমা-ই-হিন্দ ওয়াকফ বিলের বিরুদ্ধে এক কোটি স্বাক্ষর সংগ্রহ করে প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাছে প্রস্তাবটি পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বাংলার এক কোটি মানুষ এতে স্বাক্ষর করে মোদীর কাছে পাঠাবে। আরএসএস এবং বিজেপি মুসলিম সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে এটি করেছে”।
মুসলিম সংগঠনগুলি হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে যদি ওয়াকফ সংশোধনী বিল প্রত্যাহার না করা হয়, তাহলে রাজ্য জুড়ে আরও ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হবে।কলকাতায় বিলের বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) আয়োজিত এক সমাবেশে নেতারা অভিযোগ করেন যে বিলটি মুসলিমদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার লক্ষ্যে তৈরি। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন যে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলির সাথে আলোচনা না করেই এই বিলটি এগিয়ে নিচ্ছে, যার কারণে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো বিপদের মুখে।
এদিকে তৃণমূল কংগ্রেস ক্যাবিনেটের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর কলকাতাকে স্বব্ধ করার হুমকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিজেপির যুবনেতা ও কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তরুনজ্যোতি তিওয়ারি । তিনি সিদ্দিকুল্লাহর বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপিংস এক্স-এ পোস্ট করে লিখেছেন,’আজ কলকাতা কেন স্তব্ধ ছিল, কেন শহরের পর শহর, জেলার পর জেলা অচল হয়ে গেল — তার উত্তর লুকিয়ে আছে রাজ্যের এক মন্ত্রীর মুখে। সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, রাজ্যের মন্ত্রী, প্রকাশ্যে বলেছেন: চাইলেই কলকাতাকে স্তব্ধ করে দিতে পারতাম। চাইলেই কলকাতায় যানজট তৈরি করতে পারি। চিরে, গুড়, বাতাসা নিয়ে কলকাতা অবরুদ্ধ করব। জেলার পর এবার কলকাতাকে টাইট দেব। এখনো করিনি, ভবিষ্যতে করব।’ তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে লিখেছেন,’এর চেয়েও ভয়ানক হচ্ছে তাঁর আরেকটি স্বীকারোক্তি —মুখ্যমন্ত্রীর অফিস থেকে ফোন এসেছিল। বলা হয়েছে, এমন সমাবেশ দেখে মুখ্যমন্ত্রী খুব খুশি। এই বক্তব্য থেকেই পরিষ্কার হয়ে যায়, আজকে কলকাতায় ও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যে তাণ্ডব চলেছে, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর হয়েছে, সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়েছে — তা সবই মুখ্যমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ মদতে ঘটেছে।
তরুনজ্যোতি তিওয়ারির প্রশ্ন,’পুলিশ কেন নিশ্চুপ ছিল? কারণ তারা জানে, এই তাণ্ডব রাষ্ট্রেরই ছত্রছায়ায় হচ্ছে। জনগণের টাকায় গড়ে ওঠা পুলিশ প্রশাসন আজ জনগণের বিরুদ্ধেই দাঁড়িয়ে পড়েছে।আজ প্রশ্ন তুলতেই হবে — এই কি নতুন বাংলা? এই কি গণতন্ত্র? এই কি প্রশাসনের কাজ? চুপ থাকলে কাল আর কিছুই বলার থাকবে না।’।