শেখ মিলন,আউশগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),০৬ আগস্ট : গরু ছাড়া গরুর গাড়ি সচল হতে পারে না । তাই গরুকে বাদ দিয়ে গরুর গাড়ির কল্পনাও অলীক । কিন্তু এই ‘অলীক কল্পনা’কে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম থানার বড়া গ্রামের বাসিন্দা পেশায় মিষ্টান্নের দোকানদার সুশান্ত ঘোষ । নিজের সাইকেলটি গরুর গাড়ির অগ্রভাগের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে প্যাডেল করে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি । দোকানের জ্বালানি থেকে অনান্য মালপত্র কেনার জন্য দিব্যি এই ‘সাইকেল চালিত গরুর গাড়ি’কে ব্যাবহার করছেন ওই ব্যাবসায়ী । তাঁর এই অভিনব চিন্তার তারিফ করেছেন এলাকার বাসিন্দারা । সুশান্তবাবুর এই সাইকেল চালিত গরুর গাড়ি নজর কেড়েছে এলাকাবাসীর ।
বছর পয়তাল্লিশের সুশান্ত ঘোষদের মিষ্টির দোকানটি রয়েছে আউশগ্রামের বড়া চৌমাথা এলাকায় । দোকানটি মূলত তাঁর দাদাই সামলান । মাঝে মধ্যে টাটে এসে বসেন সুশান্তবাবু । বাকি সময় তিনি চাষবাস নিয়েই থাকেন । কিন্তু সাইকেলে টানা গরুর গাড়ির পরিকল্পনা কিভাবে এল ?
সুশান্তবাবু জানান, এর পিছনেও রয়েছে করোনা ভাইরাস । টানা লক ডাউনের কারনে ব্যাবসায় মন্দা যাচ্ছে । এদিকে লক ডাউনের কারনে দোকানের প্রয়োজনীয় মালপত্র আনার জন্য নিয়মিত যানবাহনও পাওয়া যাচ্ছিল না । এছাড়া চাষের প্রয়োজনে সার আনাতে গিয়েও বিপাকে পড়তে হচ্ছিল । তাই মূলত মালপত্রের আনার জন্যই তিনি এই অভিনব পরিকল্পনা নিয়েছেন । এর জন্য কিছুই কেনাকাটা করতে হয়নি বলে জানান তিনি । তিনি বলেন, ‘বাড়িতে সাইকেল তো ছিলই । গরুর গাড়িটাও পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছিল । একটু বুদ্ধি করে দুটোকে জুড়ে দিয়েছি মাত্র ।’
শুক্রবার দুপুরে দেখা গেল মিষ্টির দোকানের জন্য চিনিসহ বিভিন্ন সামগ্রীসহ আরও কিছু টুকিটাকি জিনিসপত্র কিনে সাইকেল চালিত গরুর গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন সুশান্তবাবু । গরুর গাড়ির জোয়ান খুলে অগ্রভাগটি তিনি সাইকেলের পিছনে বসার জায়গায় বেঁধে দিয়েছেন । তারপর সাইকেলের প্যাডেল করে লোহার চাকা লাগানো গরুর গাড়িটি দিব্যি টেনে নিয়ে যাচ্ছেন ।
সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘প্রথম দিকে একটু কষ্ট হচ্ছিল । কিন্তু এখন অভ্যাস হয়ে গেছে । এখন অনেক সাশ্রয় হচ্ছে । দোকানের মালপত্র বা ধান জমিতে দেওয়ার সার আনার জন্য পরিবহন খরচ লাগছে না । এদিকে না আছে পেট্রল-ডিজেল কেনার খরচ , না আছে গরু পোশার ঝক্কি ।’।