শ্যামসুন্দর ঘোষ,মেমারি(পূর্ব বর্ধমান),২৯ মার্চ : গ্রামের পুকুরগুলি শুকিয়ে গেছে । প্রধানমন্ত্রী জলজীবন মিশনের জল সরবরাহ কোনো এক অজ্ঞাত কারনে বন্ধ । আশপাশের যে কটি পরিবারের মোটরপাম্প আছে বারবার জল আনতে যাওয়ার কারনে তারাও বিরক্ত হচ্ছে । ফলে পানীয় জল থেকে শৌচের জলের জন্য চুড়ান্ত নাকাল হতে হচ্ছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারি বিধানসভার সাতগেছিয়া পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সাতগেছিয়ায় গ্রামের পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দাদের । সরকারি প্রকল্পের জল কেন বন্ধ জানতে সাতগেছিয়া পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান সুশিলা কিস্কুকে ফোন করা হলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়েই ফোন কেটে দেন ।
জানা গেছে,সাতগেছিয়ায় গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় ১০০-এর অধিক পরিবারের বসবাস । তাদের মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি সম্পন্ন পরিবারের নিজস্ব মোটরপাম্প আছে বাড়িতে । প্রায় ১০০ টি হতদরিদ্র পরিবারের টিউবওয়েল পর্যন্ত নেই । ফলে পানীয় ও শৌচের জলের জন্য তারা মূলত এলাকার পুকুরগুলির উপর নির্ভরশীল ছিলেন । তাদের জলের সঙ্কট মেটাতে প্রধানমন্ত্রী জল জীবন মিশনের অধীনে গভীর নলকুপ বসিয়ে পাড়ায় পাইপলাইনে জল সরবরাহ করা হয় । পঞ্চায়েতের তত্ত্বাবধানে সাতগেছিয়ায় গ্রামের মাঝামাঝি এলাকায় নির্মিত জলের ট্যাঙ্ক থেকে সেই জল সরবরাহ করা হয় । কিন্তু বিগত ২৭-২৮ দিন সেই জলসরবরাহ কোনো এক অজ্ঞাত কারনে বন্ধ হয়ে গেছে । এদিকে কয়েকদিন ধরে তীব্র দাবদহ শুরু হয়েছে । পুকুরের জলও শুকিয়ে গেছে । ফলে পানীয় ও শৌচের জলের জন্য কার্যত হাহাকার পড়ে গেছে সাতগেছিয়ায় গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় ।
স্থানীয় মহিলা নিলীমা সিকদার বলেন,’প্রায় এক মাস ধরে ট্যাপে জল নেই । লোকের বাড়িতে জল আনতে যাচ্ছি । কিন্তু বারবার যাওয়ায় তারাও বিরক্ত হচ্ছে । পঞ্চায়েতকে সমস্যার কথা বারবার বলা হয়েছে । পঞ্চায়েত বলছে, “হচ্ছে হবে” । কিন্তু কবে হবে জানিনা ।’ জানা গেছে,সাতগেছিয়ায় গ্রামের পশ্চিমপাড়া থেকে ২-৩ কিলোমিটার দূরে সরকারি জল প্রকল্পের ট্যাপে জল সরবরাহ চালু আছে । সেখান থেকে বালতি, ঘড়া করে জল নিয়ে এসে পরিবারের জলের চাহিদা মেটাচ্ছেন মহিলারা । স্থানীয় বাসিন্দা অরুন কুমার ঘোষাল বলেন,’পঞ্চায়েতে বলতে গেলে কখনো বলছে মেশিন পুড়ে গেছে । আবার কখনো বলছে রাস্তা সংস্কারের কাজের সময় পাইপ লাইন ফেটে গেছে । আসল ঘটনা কি বুঝতে পারছি না ।’ তার সন্দেহ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হতে হচ্ছে সাতগেছিয়ায় গ্রামের পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দাদের।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার কয়েক বছর পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি দাবি করে বসেন যে তিনি একশ শতাংশ কাজ করে দিয়েছেন । কিন্তু আজও পূর্ব বর্ধমান জেলার কোনো কোনো এলাকায় গ্রীষ্মে জলসঙ্কট দেখা দেয় বলে অভিযোগ । ২০২৬ সালের বিধানসভার ভোটে শাসকদলকে তার ফল ভোগ করতে হবে বলে মনে করছে স্থানীয় রাজনৈতিক অভিজ্ঞমহল ।।

