এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাঁকুড়া,০৫ আগস্ট : কৃষিজমি থেকে যাতায়তের মূল রাস্তা,প্রতি বছর একটু একটু করে দামোদরের করাল গ্রাসে বিলীন হয়ে যাচ্ছে । এভাবে চলতে থাকলে আর কয়েক বছরের মধ্যে গ্রামে ঢুকে যাবে দামোদর নদের প্রবাহ । গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দামোদর থেকে অবাধে বালি উত্তলনের ফলেই বর্তমানে এই বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে । প্রশাসনের কাছে এনিয়ে আবেদন নিবেদন করেও কোনও কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের । এনিয়ে বাঁকুড়া জেলার ইন্দাসের ভাষনা গ্রামবাসীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে ।
ভাষনা গ্রামের অনতিদূরে বয়ে গেছে দামোদর নদ । রয়েছে একটি বালিঘাট । এক ব্যাবসায়ীকে ওই ঘাটের ইজারা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে । স্থানীয় গ্রামবাসী বিদ্যুৎ সরকার,জীবন ঘোষরা বলেন, ‘বর্ষাকাল বাদে বছরের অনান্য সময়ে নদীতে বিশেষ জল থাকে না । তখন বালি উত্তলেন জন্য নদীর মাঝ বরাবর রাস্তা হিসাবে ব্যাবহার করা হয় । তার দু’পাশ থেকে অবাধে বালি উত্তোলন চলে । ফলে বর্ষায় জল বাড়লে নদীর দু’পাশে জলের প্রবাহ বেশী থাকে । তার জেরে প্রতি বছর দু’পাশের পাড়ে ভাঙন দেখা যায় । অবাধে বালি উত্তোলন রুখতে ও নদীর ভাঙন রোধে ব্যাবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসন থেকে পঞ্চায়েত সকলের কাছে বারবার আবেদন জানানো হয়েছে । কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি।’
বৃহস্পতিবার ভাষনা গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা গেল সদ্য রোয়ানো একাধিক জমির সিংহভাগ অংশ গ্রাস করে নিয়েছে দামোদর । বাঁকুড়া-পূর্ব বর্ধমান জেলার মধ্যে সংযোগকারী একমাত্র সড়কপথের কিছুটা অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ।
গ্রামবাসী হীরা মণ্ডল বলেন, ‘আমার বয়স ৭৫-৭৬ বছর হল । কিন্তু দামোদরের এমন ভাঙন কখনও দেখিনি । বিগত দু’বছর ধরে দামোদর নদী থেকে অবাধে বালি উত্তোলনের ফলে নদীর পাড় ভাঙছে । ঘর-দুয়ার,জমি-জায়গা,রাস্তা-ঘাট সব নদীর গর্ভে চলে যাচ্ছে । এভাবে সব ভেসে গেলে ছেলে পুলে নিয়ে খাবো কি ? কোথায় যাবো আমরা ?’
গ্রামবাসীদের অভিযোগ,প্রতিবার ভোটের আগে নদীর ভাঙন রোধের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় । কিন্তু ভোট আসে ভোট যায়, পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয় না । এদিকে দামোদরও একটু একটু করে গ্রামে ঢুকতে শুরু করে দিয়েছে । তাই গ্রামবাসীদের কটাক্ষ, ‘সাবধান,দূয়ারে দামোদর ।’।