এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,২৬ মার্চ : দীর্ঘ উনিশ বছরের দাম্পত্য জীবন কাটিয়ে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে গেলেন এক নিঃসন্তান গৃহবধূ ৷ নতুন পোশাক, অলঙ্কার থেকে শুরু করে ব্যাঙ্কের পাশবইটা পর্যন্ত তিনি সঙ্গে নিয়ে গেছেন । ঘটনাটি ঘটেছে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের পলাশটলা এলাকায় ৷ এদিকে ক্ষোভে দুঃখে জীবিত স্ত্রী দ্রৌপদী রায়(৩৫)-এর শ্রাদ্ধের আয়োজন করলেন স্বামী অচিন্ত রায় । হিন্দুরীতি অনুযায়ী শ্মশানে স্ত্রীর কুশপুতুল দাহ, পিন্ডদান, মস্তক মুন্ডন থেকে শুরু করে গ্রামবাসীদের শ্রাদ্ধের ভোজ খাওয়ান অচিন্তবাবু ।
জানা গেছে,বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের পলাশটলা গ্রামের বাসিন্দা অচিন্ত রায় পেশায় রাজমিস্ত্রী । বছর ১৯ আগে পার্শ্ববর্তী বরুই গ্রামে দ্রৌপদীর সঙ্গে দেখাশোনা করে বিয়ে হয় তার ৷ কিন্তু তাদের কোনো সন্তান হয়নি ।
জানা গেছে,দ্রৌপদী রায়ের প্রেমিকের সঙ্গে আলাপ ফেসবুকে ৷ গভীর রাত পর্যন্ত ফেসবুক মেসেঞ্জারে প্রেমিকের সঙ্গে চ্যাট করতেন তিনি । রিলস বানিয়ে স্বামীকে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠাতো । এ নিয়ে তাদের মধ্যে অশান্তিও হত । অচিন্ত রায় জানান, তিনি স্ত্রীকে বহুবার শাসন করেছেন৷ কিন্তু তার কথা শোনেনি।
স্থানীয়রা জানান,এর আগেও একাধিকবার শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিলেন দ্রৌপদী রায় । তাকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে এনেছিল শ্বশুরবাড়ির লোকজন । কিন্তু গত ১৮ ই মার্চ সকলের নজর এড়িয়ে ফের পালিয়ে গেছেন দ্রৌপদী । এরপর আর তাকে ফিরিয়ে আনার উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন বধূর স্বামী অচিন্ত রায়, শ্বাশুড়ি আশালতা রায়সহ পরিবারের লোকজন । পরিবর্তে তারা দ্রৌপদীকে উচিত শিক্ষা দিতে তার শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করে চিরকালের জন্য সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নেন তারা । আর সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত মঙ্গলবার তারা শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করেন ।
জানা গেছে,সকালেই দ্রৌপদী রায়ের কুশপুতুল বাঁশের দোলায় চাপিয়ে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয় । মুখাগ্নি করেন অচিন্ত রায় । কুশপুতুল দাহের পর পিন্ডদান ও মস্তক মুন্ডন থেকে শুরু করে কাছাও পরেন তিনি । বাড়িতে এসে হিন্দু রীতি অনুযায়ী পুরোহিত দিয়ে শ্রাদ্ধের যাবতীয় কাজকর্ম করা হয় । এরপর দুপুরে পরিবারপরিজন ও গ্রামবাসীদের ভোজ খাওয়ানো হয়৷
অচিন্ত রায় বলেন,’পরিবারে কোনো অশান্তি ছিল না। তবে সন্তান না হওয়ার একটা দুঃখ ছিল । রাজমিস্ত্রির কাজ করে যেটুকু আয় করতাম সব স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে জমা রাখতাম । স্ত্রী গভীর রাত পর্যন্ত ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকত । আমি অনেক শাসন করেছিলাম কিন্তু শোনেনি । সপ্তাহখানেক আগে বাড়ি ফিরে দেখি স্ত্রী বাড়িতে নেই । সমস্ত নতুন জামা কাপড়,সোনা রুপোর অলংকার এবং ব্যাংকের পাশবই নিয়ে চলে গেছে । পাশবইয়ে ৪০ হাজার টাকা ছিল । আমার আর কিছুই নেই । আমাকে নিঃস্ব করে দিয়ে গেছে ।’।

