প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান০৫ আগষ্ট : দলের কর্মীরাই দলের সম্পদ । দলীয় সভা থেকে এই কথা হামেশাই বলে থাকেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এমনকি তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে অহংকারহীন ব্যবহারের পরামর্শও দেলের সর্বস্তরের নেতা কর্মীদের দিয়েছেন । কিন্তু নেত্রী এমনটা বললেও দলের দুই কর্মীর বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাসের পায়ে জুতো পরিয়ে দেওয়ার ভিডিও ভাইরাল হতেই বিতর্ক চরমে উঠেছে । যদিও বিধায়ক খোকন দাস বৃহস্পতিবার দাবি করেছেন, ‘সব বাজে কথা । কোন সরকারি লোক তাঁর পায়ে জুতো পরিয়ে দেয় নি । তাঁর নিজের লোক ,ভাইয়ের বেটাই তাঁর পায়ে জুতোর চেনটা ঢুকিয়ে দেয় । বিরোধীদের কাজ নেই । তাই এইসব নিয়ে অহেতুক বিতর্ক তৈরি করছে ।’
ঘটনা সূত্রে জানা গিয়েছে ,কিশোর কুমারের জন্মদিন উপলক্ষে বুধবার বর্ধমান পৌরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের রাধারানী স্টেডিয়ামের হলে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয় । ওই রক্তদান শিবিরের আনুষ্ঠানিক সূচনা করতে উপস্থিত হন বিধায়ক খোকন দাস সহ একাধিক নেতা। ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখা যাচ্ছে সেখানে জাতীয় পতাকা উত্তলনের আগে খোকন দাস তাঁর পায়ের জুতো খোলেন। জাতীয় পতাকা উত্তোলন শেষে তিনি তাঁর জুতোয় পা দিতেই দুই যুবক জুতো পায়ে গলাতে তাঁকে সাহায্য করছে ।জুতোর পিছনের অংশ পায়ে গলিয়েও দিতে দেখা যায় এক যুবককে । এই ভিডিও নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হতেই শুরু হয়ে যায় বিতর্ক । কারণ যে দুই যুবককে বিধায়কের পায়ে জুতো পরিয়ে দিতে দেখা গেছে তারা দলেরই কর্মী । জানা গিয়েছে তাঁদের একজনের নাম অমিত মল্লিক আর অপর জনের নাম শেখ চাঁদ ।
বিধায়ক খোকন দাসের সঙ্গেই তারা সবসময়ে থাকে । বুধবার বিধায়কের ওয়ার্ডের শাসকদলের এক কর্মী ফেসবুক লাইভে বিজেপির নাম ও নিশান ঘুচিয়ে দেবার হুমকি দেন।সেই ফেসবুক লাইভ নিয়েও শোরগোল পড়ে বর্ধমানের রাজনৈতিক মহলে। এরপর বিধায়ক খোকন দাসকে জুতো পরানোর ভিডিও ভাইরাল হতেই বিতর্কের ঝড় বইতে শুরু করেছে । প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বর্ধমান দক্ষিনের বিধিয়ক এই প্রথম বিতর্কে জড়ালেন এমন নয় । ইতিপূর্ব বর্ধমান পৌরসভার টেন্ডার কমিটির মিটিংয়ে থেকে তিনি বিতর্কে জড়িয়েছিলেন । এছাড়াও, বিজেপি সাংবাদিকদের মদ আর টাকা দিয়ে কিনে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল বলে প্রকাশ্য সভা থেকে মন্তব্য করেও বিধায়ক খোকন দাস বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন ।
বিজেপির বর্ধমান শহর কমিটির আহ্বায়ক কল্লোল নন্দন বলেন,“তৃণমূল নেতা ও বিধায়কদের অহংকার মানুষ এখন দেখছে। তৃণমূলের বিধায়ককে জুতোও এখন পায়ে পরিয়ে দিতে হচ্ছে।এর থেকে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না !’