এইদিন ওয়েবডেস্ক,মঙ্গলকোট(পূর্ব বর্ধমান),২০ মার্চ : বাড়ির টিনের ছাউনির উপর দিয়ে বিদ্যুৎ লাইন নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদ করায় প্রতিবেশীর ঘুঁষিতে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট থানার ইট্ট্যা গ্রামে ৷ আজ বৃহস্পতিবার সকালে এই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায় । মৃতের নাম নানু দাস (৮৫)। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করতে এলে পরিবারের লোকজন দেহ ফেলে রেখে বিক্ষোভ দেখায় ৷ শেষ পর্যন্ত তাদের বুঝিয়ে সুঝিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় মঙ্গলকোট থানার পুলিশ ।
জানা গেছে,মৃত বৃদ্ধ নানু দাসের বাড়ি ইট্ট্যা গ্রামের দাসপাড়ায় । তার দুই ছেলে এবং দুই মেয়ে । সকলেই বিবাহিত । স্ত্রী বুলিদেবীকে নিয়ে একটা পৃথক বাড়িতে থাকতেন নানু দাস । পাশাপাশি দুটি বাড়িতে থাকেন দুই ছেলে সুকুমার ও নবকুমার । প্রতিবেশী বিশ্বজিৎ দাসের বাড়িতে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়াকে কেন্দ্র করে বিবাদের সূত্রপাত । রাস্তার ধারে বিদ্যুৎ খুঁটি থেকে বিশ্বজিতের বাড়িতে বিদ্যুৎ নিয়ে যেতে হলে নানু দাসের
বড় ছেলে সুকুমারের বাড়ির করগেটের ছাউনির উপর দিতে বিদ্যুৎ লাইনের তার নিয়ে যেতে হবে । নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে সেকারণেই বিদ্যুৎ লাইনের তার নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছিলেন না পেশায় টোটোচলক সুকুমার । এনিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে কয়েক মাস ধরেই টানাপোড়েন চলছিল ।
জানা গেছে, আজ সকালে কার্যত জোর করেই বিশ্বজিৎরা বিদ্যুৎ লাইনের তার নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল । নানু দাসদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে বেশ কিছু লোকজন জুটিয়েছিল বিশ্বজিৎ ও তাঁর শ্বশুর সুফল দাস । তাদের মধ্যে তৃণমূলের কয়েকজন স্থানীয় নেতাও ছিল বলে জানা গেছে । ওই দলটি প্রথমে সুকুমারের বাড়িতে আসে । কিন্তু তার আগেই তিনি টোটো নিয়ে বেড়িয়ে যান । বাড়িতে ছিলেন তাঁর স্ত্রী মিঠুদেবী । বিশ্বজিৎদের দলটি তাকে রীতিমতো হুমকি দেয় বলে অভিযোগ । চিৎকার শুনে ছুটে আসেন বৃদ্ধ নানু দাস । দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল বাকবিতন্ডা চলে । তারই মাঝে বৃদ্ধ শ্বশুরের বুকে সুফল দাস সজোরে ঘুঁষি মারে বলে অভিযোগ মিঠুদেবীর ।
জানা গেছে,ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন নানু দাস । এদিকে তার মৃত্যু হয়েছে বুঝতে পেরে সেখান থেকে চম্পট দেয় বিশ্বজিৎ,তাঁর শ্বশুর সুফল দাস এবং তৃণমূলের নেতা ও কর্মীরা । ইতিমধ্যে বৃদ্ধের পরিবারের লোকজন জড়ো হয়ে যায় । পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করতে এলে তারা বাধা দেয় এবং দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানায় । শেষ পর্যন্ত বেশ কিছুক্ষণ পর পরিবারকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কাটোয়া হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ । যদিও এনিয়ে মৃতের পরিবারের তরফে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানা গেছে । পুলিশ একটা অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ।।