প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৪ মার্চ : রঙ নিয়ে খেলে ছিলেন হিন্দু দেবতা কৃষ্ণ এবং তাঁর প্রেমিকা রাধা।তারই প্রতীক হিসাবে সেই থেকে প্রতি বসন্তে পালিত হয়ে আসছে দোলযাত্রা বা হোলি উৎসব।সময় গড়ানোর সাথে সাথে এই উৎসব সামাজিক উৎসবের রুপ পেয়ে যেতেই বদলে গিয়েছে রঙের প্রকারভেদ।নানা রাসায়নিক দ্রব্য দিয়ে তৈরি ক্ষতিকারক রঙ এখন অনেকের কাছেই চক্ষুশূল।তাই কদর বাড়ছে ভেষজ রঙের। এমন আবহে সবজি ও ফুল সহযোগে ভেষজ আবির তৈরি করে সাড়া ফেলে দিয়েছে বর্ধমানের একটি সংস্থা।রঙের উৎসব পালনের জন্য ওই ভেষজ আবিরকেই বর্ধমানবাসী আঁকড়ে ধরছেন।
হোলির উৎসব মানেই রঙের খেলা ।সেই রঙ যদি আবার সবজি ও ফুলের তৈরি হয় তাহলেতো কথাই নেই ।রঙের উৎসবে আনন্দের মাত্রা আরও বেশ কয়েক গুণ বেড়ে যায়। তাই পরিবেশবান্ধব রঙের প্রতি এখনর সাধারণ মানুষের আগ্রহও বেড়ে গিয়েছে।বাজারে কদর বেড় গিয়েছে সবজি ও ফুল থেকে তৈরি ভেষজ আবিরের।শুধু খোলা বাজারেই নয়,বর্ধমানের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে তৈরি ভেষজ আবিরের বিক্রি বাটা এখন অনলাইনেও ভাল হচ্ছে।
ভেষজ ওই আবির তৈরির প্রক্রিয়া নিয়ে সংস্থার পক্ষে প্রশিক্ষক প্রতনু রক্ষিত জানান, “সিন্থেটিক রঙের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। ঘরে বসেই খুব সহজে ও কম খরচে এই ’ভেষজ আবির’ তৈরি করা সম্ভব।” তিনি আরও জানান,বাজারের বিক্রী হওয়া সাধারণ আবিরের তুলনায় ভেষজ আবিরের দাম কিছুটা বেশি।তবে খোলা বাজারে বিক্রি হওয়া সাধারণ আবিরের চাইতেও ভেষজ আবির এখন সচেতন মানুষের কাছে বেশী গ্রহন যোগ্যতা পেয়েছে।
ভেষজ আবির তৈরির মূল উপকরণ গুলি কি কি? এর উত্তরে প্রতনু রক্ষিত বলেন,“এই আবিরের অন্যতম উপাদান হল এরারুট।ত্বকের জন্য এরারুট সম্পূর্ণ নিরাপদ। সুগন্ধি হিসাবে তাতে ব্যবহার করা হচ্ছে পাউডার। ভেষজ আবিরের রঙ লাল রঙের জন্য ব্যবহার করা হয় গাজর ও বিট। সবুজ রঙের জন্য ব্যবহার করা হয় পালং শাক। আর রঙ উজ্জ্বল লাল করার জন্য ব্যবহার করা হয় লাল জবা ফুল।সেই কারণে রঙের উৎসদে এমন ভেষজ আবির ব্যবহারকারীর ত্বকের কোনো ক্ষতিই হয় না ।প্রতনু রক্ষিতের কথায়, “বাড়িতে বসে মাত্র এক ঘণ্টাতেই এই আবির তৈরি করা সম্ভব।এই আবির যেমন স্বাস্থ্যসম্মত, তেমনই পরিবেশবান্ধব ।
দোল বা হোলির উৎসবে রঙ মাখা নিয়ে যাঁরা দুশ্চিন্তায় থাকেন তাঁরা প্রকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি এই ভেষজ আবিরকেই আঁকড়ে ধরেছেন । তবে বিপণনের সীমাবদ্ধতার জন্য ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাঁদের তৈরি আবির নিয়ে প্রচার তুঙ্গে তোলে নি।ওয়াকিবহাল মহলের মতে ,ঠিকঠাক প্রচার চালালে ভেষজ এই রঙিন আবিরের বাজারি চাহিদা তুঙ্গেই পৌছাবে ।।