এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,১৩ মার্চ : বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা মুসলিম অনুপ্রবেশ ভারতের মাথা ব্যথার কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে । যত অনুপ্রবেশ বাড়ছে ততই পাল্লা দিয়ে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে । দেশের জাতীয় রাজধানী দিল্লিতে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা মুসলিম অনুপ্রবেশকারীরা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের জমানায় প্রতিপালিত হচ্ছিল । কিন্তু চলতি বছরে বিজেপি ক্ষমতায় আসতেই অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে । রাজধানী শহর দিল্লিতে অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে ফের অভিযান চালালো পুলিশ । এমন ২০ জন বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেপ্তার করেছে ।
এদিকে কড়া অভিবাসন আইন আনতে চলেছে ভারত সরকারও। মঙ্গলবারই লোকসভায় পেশ হয়েছে অভিবাসন ও বিদেশি নাগরিক সংশোধনী বিল। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বিলটি পেশ করেছেন। যদিও কেন্দ্রের নতুন ওই অভিবাসন আইনের প্রবল বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেস । কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারি ও তৃণমূলের সৌগত রায়ের দাবি,মূলত বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসে বসবাস করা বাংলাদেশি মুশলিমদের ধরপাকড় করাই কেন্দ্রের এই নয়া আইনের লক্ষ্য। এই আইনে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হবে। তারা বিলটিকে বিলটি ‘সর্বনাশা ও দমনমূলক’ বলে অবিহিত করেছে ।
এদিকে জানা গেছে যে দিল্লিতে অবৈধভাবে বসবাসকারী ২০ জন বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে এই সকল অভিযুক্ত কোনও বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই দেশে প্রবেশ করেছিলেন এবং এখানে অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন। তদন্তের সময়, পুলিশ তাদের কাছ থেকে অনেক সন্দেহজনক নথি পেয়েছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্ত এবং ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন। একই বৈঠকে দিল্লিতে বসবাসকারী অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এবং তাদের চিহ্নিত করে বহিষ্কার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।দক্ষিণ দিল্লির ডিসিপি বলেছেন,মেগা অনুপ্রবেশ বিরোধী অভিযান চলছে । অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসনকে সমর্থনকারী নেটওয়ার্কগুলি ভেঙে ফেলার জন্য দক্ষিণ দিল্লিতে একটি বড় ধরনের অভিযান চালানো হয়েছে এবং ১৩ জন বাংলাদেশি অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে। ভুয়া ভারতীয় পরিচয়পত্র, প্যান কার্ড এবং অন্যান্য পরিচয়পত্র উদ্ধার হয়েছে তাদের কাছ থেকে । জাতীয় নিরাপত্তা এবং আইন প্রয়োগ নিশ্চিত করা আমাদের লক্ষ্য ।’
বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ সমস্যা থেকে নিস্তার পেতে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার যে নতুন অভিবাসন ও বিদেশি নাগরিক সংশোধনী বিল আনতে চাইছে তাতে বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে ।পাসপোর্ট (ভারতে প্রবেশ) আইন, ১৯২০, বিদেশি নিবন্ধন আইন, ১৯৩৯, ফরেনার্স অ্যাক্ট, ১৯৪৬ এবং অভিবাসন (দায়বদ্ধতা) আইন, ২০০০-এই চারটি আইন বাতিল করে নতুন আইন হচ্ছে । এই আইনে অনুপ্রবেশের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর কারাবাস, পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। ভারতে চিকিৎসা ও পড়াশোনা করাতে আসা বাংলাদেশিদের উপর থাকবে পুলিশের কড়া নজর । যদি ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও তারা যদি ভারতে থেকে যায়, তাহলে তার তিনবছর পর্যন্ত জেল, তিন লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। দালালদের ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে ।অনুপ্রবেশের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর কারাবাস, পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে । কোনও অভিবাসী বা বিদেশি নাগরিকের ভারত সরকারের বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে তাদের ভারতে প্রবেশের উপর চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা ও ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে । কিন্তু ভোটব্যাঙ্ক ভরাতে বিরোধী দলগুলি দেশের নিরাপত্তার সঙ্গেই আপোশ করতে চাইছে বলে অভিযোগ বিজেপির ।।