এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৬ ফেব্রুয়ারী : প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় গত ২১ ফেব্রুয়ারী কালীঘাটের কাকু সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের বিরুদ্ধে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই । সেই চার্জশিটে নাম রয়েছে জনৈক ‘অভিষেক ব্যানার্জি’র নাম । এখন এই নাম নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে । কে এই জনৈক ‘অভিষেক ব্যানার্জি’? তা নিয়ে চলছে জোর চর্চা । সিবিআই হাতে পাওয়া সুজয়কৃষ্ণের বেহালার বাড়িতে বৈঠকের এক ঘণ্টারও বেশি দৈর্ঘ্যের অডিয়ো ক্লিপের কথোপকথন মূলত উল্লেখ করা হয়েছে ওই চার্জশিটে । তাতেই উঠে এসেছে জনৈক ‘অভিষেক ব্যানার্জি’র নাম । যদিও জনৈক ‘অভিষেক ব্যানার্জি’ কে তা স্পষ্ট করেনি সিবিআই । তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ভাইপো অভিষেকের আইনজীবী সঞ্জয় বসুর কথায়,’ভিত্তিহীন অভিযোগ’ ।
এদিকে সিবিআই জানিয়েছে, ২০১৭ সালের ওই বৈঠকে ছিলেন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ও কুন্তল ঘোষ। যে অডিও সিবিআইয়ের হাতে এসেছে সেটি রেকর্ড করেন অরবিন্দ রায় বর্মন নামে কুন্তলের এক কর্মী । ২৮ পাতার ওই চার্জশিটের ১২ নম্বর পাতায় বলা হয়েছে, সেদিন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর বেহালায় বাড়িতে নিয়োগ দুর্নীতির টাকা দিতে গিয়েছিলেন কুন্তল ঘোষ, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়, অরবিন্দ রায় বর্মন এবং সুরজিৎ চন্দ । কুন্তল ঘোষের নির্দেশেই তার কর্মী অরবিন্দ রায় বর্মন নিজের মোবাইল ফোনে কথোপকথনের অডিও রেকর্ড করেছিলেন । অরবিন্দ পরে, সেই অডিও ফাইল নিজের মোবাইল ফোন থেকে ল্যাপটপে সংরক্ষণ করে রাখেন । তদন্তের সময় তার ল্যাপটপ হাতড়ে সেই অডিও ফাইল হাতে পায় সিবিআই ।
সেই গোপন বৈঠকে কি কি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল তাও জানিয়েছে সিবিআই । সিবিআই জানিয়েছে,অযোগ্য পরীক্ষার্থীদের বেআইনিভাবে চাকরি দেওয়ার ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করা হয়েছিল ওই বৈঠকে । পাশাপাশি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে সুবিধাজনক রায় আদায় করা নিয়েও আলোচনা হয় সুজয়কৃষ্ণ,কুন্তল ও শান্তনুর মধ্যে । কথোপকথনে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মাধ্যমেই বেআইনি নিয়োগের প্রক্রিয়ার কথা উঠে আসে । উঠে আসে পার্থ চ্যাটার্জি এবং জনৈক অভিষেক ব্যানার্জির দ্বন্দ্বের কথাও । তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সুজয়কৃষ্ণ, শান্তনু এবং কুন্তল মিলে আরও দু’হাজার চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে নিয়োগের নামে ১০০ কোটি টাকা তোলার পরিকল্পনা করেছিলেন। ওই চাকরিপ্রার্থীদের থেকে ১০০ কোটি টাকা তুলতে চাইছিলেন তাঁরা। ওই টাকা থেকে পার্থ, মানিক এবং অভিষেককে ২০ কোটি টাকা করে দেওয়া হবে বলে ঠিক করেছিলেন সুজয়কৃষ্ণেরা। বাকি ৪০ কোটি টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেওয়ার ছক কষেছিলেন তারা ।
চাকরি বিক্রির জন্য অভিষেক ব্যানার্জির ১৫ কোটি চাওয়ার কথা জানান সুজয়কৃষ্ণ । তিনি আরও জানান প্রত্যেক চাকরিপ্রার্থী ইতিমধ্যেই সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা করে দিয়েছেন শুনে না কি অভিষেক তাঁকে বলেন,’তাঁদের নিয়োগ আটকে দিতে হবে। নয়ত তিনি ওই চাকরিপ্রার্থীদের গ্রেফতার করিয়ে দেবেন অথবা দূরবর্তী জায়গায় তাঁদের পোস্টিং করাবেন ।’ যেটা অভিষেক ব্যানার্জির আইনজীবী সঞ্জয় বসুর কথায়, ‘কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করে মানুষের মনে সন্দেহ তৈরির মরিয়া চেষ্টা চলছে । সিবিআইয়ের চার্জশিটকে তিনি ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে ব্যাখ্যা করে তিনি বলেছেন,’অভিষেক ব্যানার্জি সত্য এবং ন্যায়ের পথে চলেন।’।
Who is ‘Abhishek Banerjee’ in CBI chargesheet in teacher recruitment corruption case? CM’s nephew’s lawyer says ‘baseless allegations’

