এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,২৩ ফেব্রুয়ারী : কট্টরপন্থী ইসলামি গোষ্ঠীগুলির হাতে দেশেr শাসনক্ষমতা চলে আসার পর নৈরাজ্যের চরম সীমায় পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ । হাড়হিম করা দুটি খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে । যা নিয়ে এখন তোলপাড় চলছে বাংলাদেশ জুড়ে ৷ প্রথম ঘটনাটি বাংলাদেশের বরিশাল জেলার । যেখানে একজন শালোয়ার কামিজ পরা মহিলার মৃতদেহের হাত ধরে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যেতে দেখা গেছে ঘাতককে । সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন সৈফুল ইসলাম নামে একজন ব্যবহারকারী । দ্বিতীয় ঘটনায় তিনি জানিয়েছেন, ১৮ জন মিলে ধর্ষণ শেষে গাছের সাথে বেঁধে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে এক মহিলাকে । তিনি এটাকে “তৌহিদি যৌণতা” বলে অবিহিত করেছেন । মৃত মহিলার গাছে বেঁধে রাখা অবস্থায় এবং নিজেকে মৃতার বাবা দাবি করা এক ব্যক্তির বক্তব্যের ভিডিও শেয়ার করেছেন তিনি ।
প্রথম ঘটনায় সৈফুল ইসলাম লিখেছেন,’জামায়াত শিবিরের খুনি দিনেদুপুরে একজন মানুষকে হত্যা করে তার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর খুনি একাই কিভাবে মৃত্যু লাশ পুকুরের একপাশ থেকে অন্যপাশে এই পানি দিয়ে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে। এই হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে বরিশাল বানারি পাড়া গাবা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডে! ভিডিও ফুটেজ দেখে তাকে অবশ্যই খুজে বের করে বিচারের আওতায় আনতে হবে!’ ভিডিওতে দেখা গেছে যে মাথা ন্যাড়া করা একজন ব্যক্তি এক মহিলার দেহ তুলে নিয়ে যাচ্ছে । মহিলার মাথাও ন্যাড়া করা ছিল । ওই ব্যক্তি একটা নালার সামনে আসার পর দেহটি নামায় । তারপর দেহটিকে স্থলে জলে ফেলে দেয় এবং হাত ধরে টানতে টানতে নালার অন্য প্রান্তে নিয়ে যায় । মহিলার পরনে ছিল সালোয়ার কামিজ৷
দ্বিতীয় ঘটনাটি বাংলাদেশের ঠিক কোন জায়গায় ঘটেছে s স্পষ্ট করেননি সৈফুল ইসলাম নামে ওই ফেসবুক ব্যবহারকারী । তবে তিনি লিখেছেন,’১৮ জন মিলে ধর্ষণ শেষে গাছের সাথে বেঁধে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে তৌহিদি যৌণতা।ফারুকি: দেশে সংস্কৃতির চর্চা হচ্ছে ; আইজিপি: দেশে অপরাধ কম হচ্ছে ; র্যাব: দেশে চাদাবাজি কমে গেছে ।’ ভিডিওতে নিজেকে মহম্মদ মোল্লাদ নামে পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা গেছে তিনি মৃত মহিলার বাবা । তার মেয়ের নাম রেখা বেগম। সেলিম মিঁয়ার ছেলে জিয়াতুলের সঙ্গে দেড় বছর আগে বিয়ে হয়েছিল।’ এইটুকু ক্লিপিং শেয়ার করা হয়েছে । একই ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে অভ্রনীল হিন্দুর এক্স অ্যাকাউন্টেও।
https://twitter.com/avroneel80/status/1893597342403854583?t=KgUF3Bu87uPI0qaTB5wVEQ&s=19
বাংলাদেশের একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিগত দু মাসে বাংলাদেশে খুন হয়েছে ৫২২ টি এবং ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৭৭৪ টি । প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,বাংলাদেশের সর্বত্র আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। নানা ইস্যুতে যত্রতত্র রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বিক্ষোভ-অবরোধে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। অবস্থা এমন পর্যায়ে গেছে যে আদালত প্রাঙ্গণে হামলা চালিয়ে আইনজীবীকে হত্যার ঘটনাও ঘটছে। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। বেড়েছে খুনের ঘটনাও। বিভিন্ন জায়গায় ‘মব জাস্টিস’ করে গণপিটুনির ঘটনায় সৃষ্টি হয়েছে উদ্বেগ। গত তিন মাসে গণপিটুনিতে খুন হয়েছেন অন্তত ৬৮ জন।
অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা নিতা-নৈমিত্তিক ব্যাপার। রাতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দেশীয় অস্ত্রসহ লাঠি হাতে হামেশাই মহড়া দিতে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন গ্রুপকে। এতে তৈরি হচ্ছে ভীতিকর পরিস্থিতি। এসর কারণে জনমনে বিরাজ করছে আতঙ্ক। সব ঘটনায় মামলা হচ্ছে না। তবে পুলিশের হিসাব অনুযায়ী, দুই মাসে ( ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর) সারা দেশে মামলা হয়েছে প্রায় সাড়ে ২৫ হাজার। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে এসব তথা।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত দুই মাসে (সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর) মারা দেশের থানাগুলোয় মামলা হয়েছে ২৫ হাজার ৪৫৬টি। এর মধ্যে মুন ও ধর্ষণের মামলা হয়েছে ১ হাজার ২৯৬টি। হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ৫২২টি (রোহিঙ্গা খুনের তথ্য এখানে নেই)। ডাকাতির ঘটনায় মামলা হয়েছে ১১১টি। ওই দুই মাসে দস্যুতার ঘটনায় ২৩১টি, দ্রুত বিচার আইনে ২২১টি, দাঙ্গা সংক্রান্ত ২৪টি এবং ধর্ষণের ঘটনায় ৭৭৪টি মামলা হয়েছে। এছাড়া নারী নির্যাতনের ১ হাজার ৮৩৩, শিশু নির্যাতনের ৫২৯, অপহরণের ১৬১, পুলিশ আক্রান্তের ৫৮,চুরির ৪৮১ এবং চুরির ঘটনায় মামলা হয়েছে ১ হাজার ৩২৮টি। অন্যান্য কারণে মামলা হয়েছে ১৩ হাজার ২১১টি। ওই দুই মাসে অস্ত্র আইনে ২৭০, বিস্ফোরক আইনে ২১৪, মাদকসংক্রান্ত ৫ হাজার ৯৯ এবং চোরাচালান সংক্রান্ত মামলা হয়েছে ৩৩৮টি।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে প্রাপ্ত অপরাধ পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের তুলনায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। নির্ধারিত দুই মাসে মাদক মামলা কমেছে সাত হাজার ৫০১টি। তবে ডাকাতির ঘটনা বেড়েছে ৬৮টি। এছাড়া ১৯টি দস্যুতা, ৩৪টি খুন, দ্রুত বিচার আইনের ৫৭টি, দাঙ্গা ১১টি, শিশু নির্যাতন ৫৬টি, অপহরণ ৬৩টি, অস্ত্রসংক্রান্ত ৯টি এবং সিধেল চুরির ঘটনা বেড়েছে ২৭টি। অপরদিকে ধর্ষণের ঘটনা কমেছে ১০০টি। আর নারী নির্যাতের ঘটনা কমেছে ১১০টি। আগের বছরের চেয়ে এ বছর ওই দুই মাসে পুলিশ আক্রান্তের ঘটনা কমেছে ৬৭টি। এছাড়া চুরির ৩৭১টি ও চোরাচালানের ঘটনা আগের চেয়ে কমেছে ১৪৩টি।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় প্রতিদিনই রাজধানীর কোগাও না কোগাও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে।’ প্রসঙ্গত ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরেই বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতা দখল করে হিজবুত, জামাত ইসলামী এবং বিএনপি’র মত কট্টর ইসলামী মৌলবাদী দলগুলি । তারপর থেকেই গোটা দেশ জুড়ে কার্যত নৈরাজ্য চলছে ।।