এইদিন ওয়েবডেস্ক,হাওড়া,২১ ফেব্রুয়ারী : কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তরুনী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুন মামলায় এমনিতে রাজ্য পুলিশের যথেষ্ট বদনাম হয়েছে ! তার উপর হাওড়ার চণ্ডীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত আইসি জয়ন্ত পালের কর্মকাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর বেজায় লজ্জিত হতে হল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশকে । বুধবার রাতে জয়ন্ত পাল নিজের সার্ভিস রিভালবারে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর প্রকাশ্যে আসে যে নিত্যদিন তিনি নাকি নারীসঙ্গ করতেন । পুলিশের স্টিকার লাগানো একটি ব্যক্তিগত চারচাকা গাড়ি থেকে পাওয়া গেছে সেক্স টয় ও মদের বোতল, এমনটাই খবর ।
জানা গেছে যে বুধবার রাত ১২টা নাগাদ নেতাজি সুভাষ রোডের ঘোষপাড়া এলাকার একটি পেট্রল পাম্পের সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে হাওড়া গ্রামীণ পুলিসের আধিকারিক জয়ন্ত পালকে রাস্তায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ছটফট করতে দেখা যায় । তাকে উদ্ধার করে আন্দুল রোডের পাশে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করানো হয় । ঘটনার তদন্তে নেমে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে । জয়ন্ত দাসের ভ্রমণে ব্যবহৃত পুলিশের স্টিকার লাগানো একটি বেসরকারি নীল রঙের চারচাকা গাড়িতে তল্লাশি চালাতেই উদ্ধার হয় বেশ কয়েকটি মদের বোতল,সেক্স টয় সহ বিভিন্ন সামগ্রী । যাতে পুলিশের তদন্তকারী দলকেই বেজায় অস্বস্তিতে পড়তে হয় ।
কিন্তু কিভাবে গুলিবিদ্ধ হলেন হাওড়ার চণ্ডীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত আইসি জয়ন্ত পাল ?
সংবাদ মাধ্যমের খবর, বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ হাওড়ার সাঁকরাইলের পোদরা এলাকায় একটি পার্লারে গিয়েছিলেন জয়ন্ত পাল। পার্লারটি তাঁরই তরুণী বান্ধবী ইতি দাম ওরফে টিনার। হাওড়ার সাঁকরাইলের বাসিন্দা ওই তরুনী একটি পানশালার কর্মী। বেশ কয়েক মাস ধরেই তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতায় জড়িয়েছিলেন চণ্ডীতলার ভারপ্রাপ্ত আইসি জয়ন্ত পাল । ওই চারচাকা গাড়িতে বান্ধবীকে নিয়ে প্রথমে একটি ফ্ল্যাটে যান জয়ন্ত পাল । সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী ওই ফ্লাটটি জয়ন্তবাবু ভাড়া নিয়েছিলেন। তিনি মাঝে মধ্যেই সেখানে আসতেন ।
সেখান থেকে তাঁরা যান হাওড়ার একটি শপিং মলে। সেখানে বান্ধবীকে প্রায় ২৩ হাজার টাকার জিনিসপত্র কিনে দেন তিনি । তখন থেকেই তাদের মধ্যে বচসা চলছিল । রাত পৌনে বারোটা নাগাদ একটি ব্যক্তিগত চারচাকা গাড়িতে চেপে নৈশবিহারে বেরনোর পর সেই ঝামেলা আরও প্রবল আকার নেয় । ক্রমে হাতাহাতিতে গড়ায় । আর তারপরই জয়ন্তের সার্ভিস রিভালবার থেকে গুলি চলে ।
গাড়িতে তারা ছাড়াও শিবপুরের বাসিন্দা দুই যুবক ও বেলঘরিয়ার এক রূপান্তরকামীও ছিলেন বলে জানা গেছে । জয়ন্তবাবুর বান্ধবী সহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ । যদিও তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় । বর্তমানে হাওড়ার ব্যাঁটরা ও শিবপুর থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে । কিন্তু ওই পুলিশ আধিকারিকের এহেন কর্মকাণ্ড নিয়ে এখন একাধিক প্রশ্ন উঠছে । প্রথমতঃ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়েই বেআইনিভাবে নিজের থানা এলাকার বাইরে গিয়েছিলেন তিনি । দ্বিতীয়তঃ সরকারি গাড়ির পরিবর্তে অন্য একটি বেসরকারি গাড়িতে পুলিশ স্টিকার লাগিয়ে তিনি ভ্রমণে গিয়েছিলেন । এখন এই ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়া কোন দিয়ে যায়, সেটাই দেখার বিষয় ।।