প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৭ ফেব্রুয়ারী : স্বামীর সঙ্গে মোটর বাইকে চেপে মাধ্যমিক পরীক্ষা যাচ্ছিলেন ছাত্রী । পথে একটি যাত্রীবাহী বাস তাঁদের ধাক্কা দিয়ে দেওয়ার উপক্রম হলে তাঁরা রাস্তা থেকে খালের ধারে গিয়ে উল্টে পড়ে। সোমবার পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের চৌবেরিয়া পুল সংলগ্ন এলাকায় হওয়া এই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয় শিবানী হাটী নামে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। অল্প বিস্তর চোট পান পরীক্ষার্থী শিবানীর স্বামী সুরজিৎ হাঠী। এই দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যায় সিভিক ভলেন্টিয়াররা। তাঁরা আহত মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ও তাঁর স্বামীকে দ্রুত উদ্ধার করে জামালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। চিকিৎসায় খানিকটা সুস্থ্য হওয়ার পর পরীক্ষার্থী শিবানী হাটী এদিন হাসপাতালের বেডে বসেই মাধ্যমিকের ইতিহাস পরীক্ষা দেয়। ব্লকের বিডিও পার্থসারথী দে ও পঞ্চায়েত সমিতির সহ–সভাপতি ভূতনাথ মালিক হাসপাতালের পৌছে ছাত্রীর স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর নেন ।
পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে,আহত মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী শিবানী হাটীর শ্বশুর বাড়ি জামালপুর থানার জৌগ্রাম এলাকায়। মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার আগেই একই থানা এলাকার বেরুগ্রাম আচার্য গিরিশচন্দ্র বসু বিদ্যাপীঠের ছাত্রী শিবানীর বিয়ে হয়ে যায়। তাঁর পরিবার জৌগ্রাম নিবাসী যুবক সুরজিৎ হাটীর সঙ্গে ছাত্রী শিবানীর বিয়ে দিয়ে দেন।সাংসার জীবন সামলাতে হলেও মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার ব্যাপারে অনড় থাকে শিবানী। তাই মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিন থেকেই শিবানী তাঁর স্বামীর বাইকে চেপেই জৌগ্রাম থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌছাচ্ছিল।
শিবানীর স্বামী সুরজিৎ হাটী এদিন জামালপুর হাসপাতালে দাঁড়িয়ে বলেন ,তাঁর স্ত্রী বেরুগ্রাম আচার্য গিরিশচন্দ্র বসু বিদ্যাপীঠের ছাত্রী।সেই স্কুলের নিকটের পরীক্ষা কেন্দ্র বণবিবিতলা হাই স্কুলেই শিবানী প্রথম দিন থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে।সুরজিৎ জানান,ইতিহাস পরীক্ষা দেওয়ার জন্য এদিনও তিনি তাঁর স্ত্রীকে বাইকে চাপিয়ে নিয়ে জৌগ্রামের বাড়িথেকে রওনা হন বনবিবিতলা স্কুলে পৌছানোর জন্য। মেমারি-তারকেশ্বর রোড ধরে তাঁরা যাচ্ছিলেন। পথে চৌরেরিয়া পুলের কাছে দ্রত গতীর একটি যাত্রীবাহী বাস তাঁদের একেবারে কাছে চলে আসে। তাঁদের ধাক্কা দিয়ে দেওয়ার মত উপক্রম হলে তিনি আর নিয়ন্ত্রন সামলাতে পারেন না। তিনি ও তাঁর স্ত্রী বাইক সহ রাস্তা থেক খালের ধারে গিয়ে উল্টে পড়েন। তাতে তিনি অল্প বিস্তর চোট পেলেও তাঁর স্ত্রী শাবানী গুরুতর আঘাত পায় ।জামালপর হাসপাতালে তার চিকিৎসা হয় । চিকিৎসায় একটু সুস্থতা অনুভব করার পরেই মনের বল নিয়ে তাঁর স্ত্রী হাসপালের বেডে বসেই এদিন ইতিহাস পরীক্ষা দিয়েছে হাসপাতালের ডাক্তার বাবু ও নার্সরা তাকে মনোবল যুগিয়ে গিয়েছেন।
তবে ইতিহাস পরীক্ষার দিন বিপত্তি শুধু পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরেই ঘটেছে এমনটা নয়। এদিন জেলার কাটোয়া মহকুমার দুটি পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে বসে অসুস্থ হয়ে পড়ে দুই ছাত্রী।তারা হলেন কাটোয়া দূর্গাদাসী বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী আনোয়ারা খাতুন এবং কাটোয়া কাসেশ্বরী বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী সাইবা দাস । কাটোয়া কাশীরাম দাস বিদ্যায়তনে পরীক্ষা দিতে গিয়ে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ে আনোয়ারা। একই সময়ে কাটোয়া বালিকা বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়ার সময় ছাত্রী সাইবা দাস অসুস্থ হয়ে পড়ে। দু‘জনেরই চিকিৎসা হয় কাটোয়া হাসপাতালে । চিকিৎসায় সুস্থতা অনুভব করার পর দুই ছাত্রী কাটোয়া হাসতালের বেডে বসে পরীক্ষা দেয় ।।

