এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,১৬ ফেব্রুয়ারী : স্বামীর উপর রাগ করে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসা এক হিন্দু বধূকে ঢাকায় এক কোটি টাকার ফ্লাট পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করার অভিযোগ উঠল বাংলাদেশের একজন জিহাদি মহিলা উকিলের বিরুদ্ধে ৷ বধূর কাছ থেকে খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ নামে একটি সংগঠনের কর্মকর্তারা ৷ বাংলাদেশের সিলেটের বাসিন্দা ওই বধূকে নিয়ে তারা স্থানীয় থানার দ্বারস্থ হয় ৷ কিন্তু ওই জিহাদি মহিলা আইনজীবী হিন্দু মহিলাকে কথা বলতে বাধা দেওয়ার জন্য বারবার চেষ্টা করে । শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের আইনজীবী ও সদ্যরা বধূর পাশে থাকার আশ্বাস দিলে পুলিশের সামনে সমস্ত ষড়যন্ত্র ফাঁস করে দেন ওই বধূ ৷ সেই মুহুর্তের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ্যে এসেছে ।
প্রতারিত বধূকে বলতে শোনা গেছে,আমি ওনার(মহিলা উকিল) সামনে যা সত্য তাই বলব । আমি শাঁখা-পলা ছুয়ে সব সত্যি কথা বলব৷’ এরপর তিনি বলেন,’আমি শ্রীমঙ্গলের স্বপ্নালোক স্মরণের সেক্টরে কাজ করতাম । যখন আমি জানতে পারি স্বপ্নালোকের মালিক রাসেল ভাই তখন আমি কাজ ছেড়ে দিতে চেয়েছিলাম । একরকম জেদ করেই আমি কাজ ছেড়ে দিয়ে চলে আসার চেষ্টা করি । এ কারণে আমাকে হুমকি দেওয়া হয়। পরের দিন রাতে তার(উকিল) বাড়ির সামনে আমাকে নিয়ে আসে । আমাকে ২৮ তারিখ বিকেল বেলায় ওনার বাসা বাড়িতে(ভাড়া ঘর) নিয়ে আসা হয়। আমি ওনাকে(বাড়ির মালিক) চিনতাম না, আমার দুলাভাই ওনাকে চেনেন কিনা জানিনা। একমাত্র রাসেল ভাইয়ের কাছ থেকে ওনার খালাতো চাচার বাড়ি আমি চিনেছি৷ আমাকে বলা হয়েছিল যে ওনার বাসায় কোন পুরুষ মানুষ নেই । আমি নাকি সেখানে ভালই থাকবো । আমি বলেছিলাম যে আমি রান্নাবান্নার কাজ করতে পারি এবং রান্নাবান্না ও বাসন ধোওয়ার সমস্ত কাজ আমি করে দেবো । আমি পেটভাতে থাকব এবং সব কাজ করে দেবো ।’
বধূ বলেন, ‘তারপর আমি স্নান করে আসলাম । আমি বাসা যাওয়ার এক ঘন্টার মধ্যেই উনি আমাকে প্রস্তাব দিলেন তুমি মুসলিম হয়ে যাও । আমি ওনাকে চটাতে চাইনি। আমি ওনার আশ্রয় আছি তাই ওনাকে আমি চটাতে চটাতে চাইনি । তারপর উনি প্রতিদিনই আমায় প্রস্তাব দিতেন ‘তুমি মুসলিম হয়ে যাও তোমাকে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে আমরা পরাবো । ব্যাংকের চাকরি দেব। তারপর ব্যাংক থেকে এক কোটি টাকার লোনে তোমার নামে একটা ফ্ল্যাট কিনব’ । শুধু ওনার খালাতো ভাই নয়, উনারা গানের স্যার আছে ওনার বন্ধু রফিক ভাই আমাকে মুসলিম হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন এমনকি সোজাসুজি বলে দিয়েছিলেন যে উনি আমার দায়িত্ব নিতে রাজি আছেন । আমাকে ব্যাংকে ঢুকিয়ে দেবে, উনি নাকি সাংবাদিক। ফ্ল্যাট কিনব, ঢাকা শহরে ফ্লাট থাকলে আর কোন রোজগারের প্রয়োজন হয় না।’
বধু বলেন,’ওনার খালাতো ভাই তো আমি আসার শুরু থেকেই ভিডিও কলে আমার সঙ্গে মশকরা করতেন। কিন্তু আমি চাইনি ওনার বৃদ্ধ খালাতো ভাইয়ের সাথে আমার ভবিষ্যৎ জড়াক । উনি আমাকে বলেছিলেন উনি আমাকে সিকিওর করবেন। কিন্তু সারা জীবন তো সিকিওর করবেন না । এখানে যদি কোন সম্পর্ক আমাদের মনে মনে দানা বাঁধে তাহলে ভবিষ্যতে আমাকে পস্তাতে করতে হবে। তাই আমি মুসলিম হতে চাইনি আমি আমার সংস্কৃতি ত্যাগ করতে চাইনি । আমি ওনার খালাতো বৃদ্ধ ভাইকে বিয়ে করতে চাইনি। আমি আমার স্বামীকে যথেষ্ট ভালোবাসি ।’
মহিলা বলেন,’উনি আমাকে মাঝে মাঝেই ফোন দিতেন। একদিন ফোন দিয়ে আমাকে একটা ছবি দেখালেন । ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন হিন্দু সন্ন্যাসী একজনের মাথায় পা দিয়ে আছে। ছবিটা তো প্রচলিত। এরপর উনি আমার ধর্মের নামে কটুক্তি করলেন । আমি বুঝে গেলাম উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছবিটা পাঠানো হতে পারে। তাই আমি তর্কে গেলাম না । আমি ওনার ধর্ম নিয়ে কুটুক্তি করতে চাইনি ।’
হিন্দু বধূ বলেন,’আমি এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে একজন ফেসবুক ফ্রেন্ড এর মাধ্যমে সব্যসাচী দাদাকে পেয়েছিলাম এবং সমগ্র বিষয়টা জানালাম । পরের দিন উনি ওনার ফোনটা বাসায় রেখে যান । জানিনা ভগবানের কোন কৃপা বলে আমি ফোনটা পেয়েছিলাম । সেই ফোন থেকে আমি সব্যসাচী দাদাকে কল করে সবটা জানিয়েছি। উনি আমার গ্রামের বাড়ির ঠিকানা, আমার মা যেখানে আছেন সেই ঠিকানা চান । তারপর গতকাল আমার সহ্যের বাঁধ ভেঙে যায়। কারণ উনি আমাকে মেন্টালি উত্তেজিত করছিলেন । আমার মা নাকি ওনার খালাতো ভাইয়ের হাতেপায়ে ধরে আমার দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন। ওনার খালাতো ভাই নাকি মনে করছেন জামাই হিসেবে ওনার হাতে নাকি আমাকে আমার মা তুলে দিয়েছেন। কিন্তু আমি জানাই যে আমার মা কি করে কথা বলতে পারেন ? আমার স্বামী জীবিত এখনো । আমাদের এখনো ডিভোর্স হয়নি।’
বধূ বলেন,’একথা বলার পর আমি সারাদিন অশান্তিতে ভুগতে থাকি । সারাক্ষণ ভগবানের নামজপ করতে থাকে । আমার মাথা কাজ করা বন্ধ করে দেয় । আমি নার্ভাস হয়ে সোজা সব্যসাচী দাদাকে মেসেজ করে দিই যে আমাকে এই বাসা থেকে ইমিডিয়েট বের করতে হবে। কারন আপুর(উকিল) সত্যই সিলেট যাওয়ার কথা । উনি সিলেট যাবেনও । আর যাওয়ার সময় আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন,’তুমি ১৩ তলায় থাকবে না এখানে থাকবে ? যদি তুমি এখানে থাকো শাহিদ ভাই আসবেন এবং তোমার সঙ্গে থাকবেন যাতে তুমি ভয় না পাও’ । আর যদি ১৩ তলায় থাকো তাহলে মনে করব যে তুমি অলরেডি হিন্দু থেকে মুসলিম হয়ে গেছ। তখন তো আমাকে নিশ্চিত বিষ খেতে হতো, কারণ আমাকে নামাজ পড়তে হতো,কারণ আমার সংস্কৃতি দিকে ত্যাগ করতে পারতাম না আমার কষ্ট হতো ।
এখানে সব্যসাচী দাদাকে আমি সব কথা বলে দিই । আমার বোন জামাইয়ের ঠিকানা তো আগেই দিয়েছিলাম, উনি কারোর মাধ্যমে হয়তো তার কাছে খবর পৌঁছে দিয়েছে। আর বোন জামাইয়ের সঙ্গে আমার মনোমালিন্য ছিল। ওটা আমাদের ফ্যামিলিগত অভিমানের কারণে। এটা আমাদের ভাই বোনের ব্যাপার।’
আইনজীবী জিজ্ঞেস করেন,’এখন তুমি কি চাও ?’৷
উত্তরে বধু বলেন,,’আমি নিরাপদ আশ্রয় চাই।’
আইনজীবী : ‘শুধু কি আশ্রয় ? যারা তোমাকে মানসিকভাবে হ্যারাস করল ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করল তাদের কি শাস্তি চাওনা ?’
বধূ : ‘আমি তো শাস্তি চাই । কিন্তু আমার তো শাস্তি চাওয়ার কোনও ক্ষমতাই নেই ।’
উকিল বলেন,’অবশ্যই আছে । উনার শাস্তি হবে । ওনার বিরুদ্ধে আজ আইনগত ব্যবস্থা হবে। কিন্তু তুমি যেটা করেছ এটা হিন্দু সংস্কৃতি এবং কালচারকে রক্ষা করেছো । তুমি আমাদের সনাতনের সম্মান বাঁচিয়েছো । তোমাকে আমরা হাজার হাজার স্যালুট জানাই। তুমি যে এত প্রলোভনেও ধর্মান্তরিত হওনি তার কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমরা খুঁজে পাচ্ছি না ।’
একজন জিজ্ঞেস করেন,’আপনাকে কি কোন জিহাদী বই পড়িয়েছে ?’
উত্তরে বধূ বলেন,’আমি পত্রিকা পড়তে চেয়েছিলাম সে কারণে আমাকে পত্রিকার সাথে একটা বই আমাকে দিয়েছিলেন । আর সেই বইটার নাম মুমিনী জিন্দেগি ।’
এরপর ওই জিহাদী আইনজীবীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্রে স্বাক্ষর করে বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে যান সংগঠনের সদস্যরা । তারা বন্ধুকে বারবার আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আপনার কোন চিন্তা নাই আমরা পাশে আছি ।’ থানার ভিতরে এই কথোপকথনের মুহূর্ত রেকর্ড করার সময় মোবাইলের ক্যামেরা থেকে জিহাদি আইনজীবীকে মুখ ফিরিয়ে নিতে দেখা যায় । তবে ঘটনাটি কবেকার এবং মহিলা আইনজীবী কোনো শাস্তির মুখে পড়েছে কি না তা এখনো স্পষ্ট নয় । দিন দুয়েক আগে বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পেজে ভিডিওটি প্রকাশিত হয়েছিল । কিন্তু কোন অজ্ঞাত কারণে, সম্ভবত হিন্দু বধুর নিরাপত্তার স্বার্থে ভিডিওটি কে ডিলিট করে দেওয়া হয়। যদিও তার আগেই ভিডিওটি এইদিনের হাতে আসে ।। দেখুন সেই ভিডিও 👇

