প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৩ ফেব্রুয়ারী : পোস্ট অফিস থেকে আমানতকারীর লক্ষ লক্ষ টাকা গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । ১২ লক্ষধিক টাকা পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর উপ ডাকঘরে ফিক্সড ডিপোজিট করে প্রতি হয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন স্থানীয় সুরজিৎ পাল ও তাঁর পরিবার। সেই মামালায় বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বৃহস্পতিবার সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিলেন।বিচারপতির এই নির্দেশে খুশি জামালপুরের প্রতিরিত পাল পরিবার। তাঁদের প্রতাশা, পুলিশ কিছু না করলেও সিআইডি নিশ্চয়ই প্রতারণার পর্দা ফাঁশ করে তাঁদের সঞ্চয়ের টাকা ফিরে পাওয়ার ব্যবস্থা করবে।
চিটফান্ড খুলে কোটি কোটি টাকা প্রতারণার ঘটনা একদা তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল বঙ্গে।এবার একই রকম প্রতারণার অভিযোগে কাঠগড়ায় খোদ ভারতীয় ডাক বিভাগ।কঠিন কায়িক পরিশ্রমে রোজগার করা ১২ লক্ষাধক টাকা জামালপুর সাব পোস্ট অফিসে গচ্ছিত রেখে সর্বসান্ত হন জামালপুর হাটতলা এলাকা নিবাসী এক কুমোর পরিবার।তিল তিল করে জমানো সঞ্চয়ের টাকা ফিরে পেতে পাল পরিবারের সদস্য সুরজিৎ পাল সহ তাঁদের পরিবারের সকল সদস্যারা পুলিশ,জেলা ও রাজ্যের প্রধান ডাক বিভাগ সহ প্রশাসনের নানা মহলে অভিযোগ জানিয়ে ছিল কিন্তু কেউ সুরাহার কোন ব্যবস্থা না করায় প্রতারিত পাল পরিবারের সদস্যরা কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
মামলাকারী পাল পরিবারের আইনজীবি উদয় শংকর চট্টোপাধ্যায় এদিন জানান , জামালপুর উপ ডাকঘরে ১২ লক্ষাধীক টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে প্রতারিত হওয়া সুরজিৎ পাল ও তার পরিবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন। সেই মামলায় বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এদিন জানিয়ে দিয়েছেন । মামলাকারী সুরজিৎ পালের আইনজীবী উদয়শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন,’জামালপুর পোস্ট অফিসের মামলায় বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এদিন সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন । এতদিন তদন্তের ভার পুলিশের উপর থাকলেও ২০২৩ থেকে কোনও তদন্তই হয়নি। পোস্ট অফিসের কোনও আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদই করা হয়নি। জামালপর থানার তিনজন ইনভেস্টিগেশন অফিসার(আইও) কোনও তদন্তই করেননি। তাই বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এদিন এই মামলা ডিআইজি সিআইডি-কে হস্তান্তর করেছেন। এক মাস অন্তর হাইকোর্টে রিপোর্ট দিতে হবে বলে বিচারপতি জানিয়ে দিয়েছেন ।
প্রতারিত সুরজিৎ পাল ও তাঁয় বাবা রণজিত পাল এদিন বলেন,’আমাদের পরিবারের সকল সদস্য আলাদা আলাদা ভাবে ২০২১ সালে ভারত সরকারের অধীন জামালপুর সাব পোস্ট অফিসে সঞ্চয়ের টাকা ফিক্সিড ডিপোজিট করেন । সবার মিলিয়ে ফিক্সড ডিপোজিটের পরিমান ১২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। তদানিন্তন জামালপুর সাব পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার বিদ্যুৎ সুর ওই টাকা গ্রহণ করে নিয়ে শীল স্ট্যাম্প দিয়ে তাঁদের সবার অ্যাকাউন্ট বই ইস্যু করে দেন ৷’
রণজিত পাল জানান, তাঁর স্ত্রী রাধারাণী দেবী শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য তাকে কলকাতা সহ ভিন রাজ্যের হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়।তখন টাকার খুব প্রয়োজন হয়ে পড়লে তাঁরা অগ্রিম ফিক্সড ডিপোজিট ভাঙিয়ে টাকা তুলে নেওয়ায় জন্য জামালপুর সাব পোস্ট অফিসে যান। তখন তাঁদের ফিক্সড ডিপোজিটের সব নথি দেখে ওই একই পোস্ট মাস্টার বিদ্যুৎ সুর আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে পোস্ট অফিস থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন।উনি পরিস্কার জানিয়ে দেন,’আমরা নাকি কোনও টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করিনি । প্রতারণার শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরে তাঁরা জামালপুর সাব পোস্ট অফিসের তদানীন্তন পোস্ট মাস্টার বিদ্যুৎ সুরকে আসামী করে বর্ধমান আদালতে মামলা রুজু করেন । একই সাথে জেলা পুলিশ সুপার সহ জেলা ও রাজ্যের প্রধান ডাক বিভাগে লিখিত ভাবে জানান। বর্ধমান আদালত জামালপুর থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেয়।সেই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে থানা শুধুমাত্র একটা এফআইআর রুজুকরে তাঁদের কাছে থাকা পোস্ট অফিসের দেওয়া নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করেই দায় সারে। তাই ন্যায় বিচার পেতে এরপর তাঁরা গত বছরের শেষের দিকে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলাতেই বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এদিন সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। রণজিত পাল ও তাঁর ছেলে সুরজিৎ পাল দু’জনেই এদিন বলেন,’আমরা আশাবাদি সিআইডি নিশ্চই প্রতারণার পর্দা ফাঁস করে দোষোদের শাস্তির ব্যবস্থা করবে । একই সাথে তাঁরা যাতে তাঁদের টাকা ফেরৎ পান তার ব্যবস্থা সিআইডি করবে।’।
চিটফান্ড খুলে কোটি কোটি টাকা প্রতারণার ঘটনা একদা তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল বঙ্গে।এবার একই রকম প্রতারণার অভিযোগে কাঠগড়ায় খোদ ভারতীয় ডাক বিভাগ।কঠিন কায়িক পরিশ্রমে রোজগার করা ১২ লক্ষাধক টাকা জামালপুর সাব পোস্ট অফিসে গচ্ছিত রেখে সর্বসান্ত হন জামালপুর হাটতলা এলাকা নিবাসী এক কুমোর পরিবার।তিল তিল করে জমানো সঞ্চয়ের টাকা ফিরে পেতে পাল পরিবারের সদস্য সুরজিৎ পাল সহ তাঁদের পরিবারের সকল সদস্যারা পুলিশ,জেলা ও রাজ্যের প্রধান ডাক বিভাগ সহ প্রশাসনের নানা মহলে অভিযোগ জানিয়ে ছিল কিন্তু কেউ সুরাহার কোন ব্যবস্থা না করায় প্রতারিত পাল পরিবারের সদস্যরা কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।