এইদিন ওয়েবডেস্ক,নদীয়া,১১ ফেব্রুয়ারী : আজ মঙ্গলবার নদীয়া জেলার কল্যাণীর রথতলার বিস্ফোরণে উড়ে যাওয়া বাজি কারখানা পরিদর্শন করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । গত বৃহস্পতিবার ওই বাজি কারখানার বিস্ফোরণে ৩ জন মহিলা সহ চারজনের মৃত্যু হয় । মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি মৃতদের পরিবার পিছু দু লক্ষ টাকা করে চেক দিয়েছেন । এই ক্ষতিপূরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী । পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি মমতা ব্যানার্জিকে নিশানা করে বলেন, ‘আপনি মদ খেয়ে মরলেও ২ লক্ষ টাকা দেন । আপনার সরকারের, আপনার পুলিশের, আপনার দলের পরিচালিত পুরসভার অবহেলা এবং দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এখানে আপনার অন্তত ৫০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিয়ে এবং এখানকার পুলিশ ও পৌরসভার চেয়ারম্যানকে দাঁড় করিয়ে শাস্তি দেওয়া উচিত ছিল। সেটা না করে আপনি দু লক্ষ টাকার চেক দিয়েছেন। ভারতীয় জনতা পার্টি আজকে দু লক্ষ এক হাজার টাকা করে এই পরিবারগুলোর হাতে তুলে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আমরা প্রমাণ করব যে রাজ্যের বিরোধী দল যেটা পারে আপনি সরকারের থেকে যেতে পারেন না ।’
প্রসঙ্গত,বৃহস্পতিবার কল্যাণীর রথতলার এক বাজি কারখানায় এই ভয়াবহ বিস্ফোরণটি ঘটে। বিস্ফোরণে ঝলসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪। এদের মধ্যে রয়েছেন ৩ জন মহিলা । বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে। বিস্ফোরণের তীব্রতায় গোটা বাজি কারখানাটিই উড়ে যায় । ঘন জনবসতি এলাকায় কিভাবে পুরসভা তাদের বাজি কারখানা করার অনুমতি দিল তা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা । বিরোধী দলনেতাও একই প্রশ্ন তুলেছেন আজ ।
তিনি বলেন,’এই ঘটনার জন্য রাজ্য সরকার, পুলিশ এবং পুরসভা দায়ী । এগরার খাদিকুলের ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক কথাই বলেছিলেন । তারপরে এরকম একটা ঘন জনবসতি এলাকার মধ্যে বেআইনি বিস্ফোরক, আমি এটাকে বাজি বলবো না, এর এনআইএ তদন্ত হওয়া উচিত । কেন হয়েছে ? এর আগে নৈহাটির ক্ষেত্রে যেমন বলেছিলেন গুলি চলেনি, কিন্তু ওখানকার এমপি ও এমএলএ বলেছেন গুলি চলেছে । এক্ষেত্রেও রানাঘাট জেলার পুলিশ সুপার বলছে ট্রেড লাইসেন্স ছিল না । কিন্তু পুরসভা বলছে যে আমরা ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছি ।’ তিনি বলেন, ‘এরকম একটা ঘন জনবসতি জায়গায়, চারিদিকে পাকা বাড়ি, হতাহতের ঘটনা কম হয়েছে তার জন্য আমরা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাবো । তবুও চারটে প্রাণ গেছে এবং আরো একজন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে । ভয়ংকর অবস্থা। সম্পূর্ণভাবে কল্যাণী পুরসভা, পুলিশ এবং রাজ্য সরকারের জন্য দায়ী ।’
তিনি জানান,স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক আইনজীবী অম্বিকা রায় বিষয়টা দেখছেন । পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’পুলিশ যদি সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ না করে তাহলে নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য কোন এজেন্সিকে দিয়ে তদন্ত করার জন্য আমরা আইনি লড়াই গড়বো।’
রাজ্য সরকারকে খোঁচা দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘ভিলেজ পুলিশ সিভিক ভলেন্টিয়ার কত রকম নামের কত রকমের নিরাপত্তা বাহিনী তৈরি করার গালগল্প কার্যত চোদ্দ বছর ধরে আমরা শুনে আসছি। গ্রামের সব খবর তাড়াতাড়ি আনার জন্য ভিলেজ পুলিশ। সিভিক ভলেন্টিয়ার পাড়ায় পাড়ায় কি হচ্ছে তার খোঁজখবর রাখার জন্য। কিন্তু তার ফল কি হচ্ছে ?
এগড়ার খাদিকুল থেকে, আমডাঙ্গা, বজবজ লাগাতার একই ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। আর সাধারণ মানুষ মারা যাচ্ছে । রাজ্য সরকার দু লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে। আজকে বিজেপি এই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ২ লক্ষ ১ হাজার টাকা দিয়ে এই মুখ্যমন্ত্রীকে বুঝিয়ে দেবে মানুষের জীবনের দাম কতটা।’।