এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান), ২৯ জুলাই : ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে মাসে মাসে কিস্তির টাকা জমা করতে হত । রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিসেবা কেন্দ্রেই ওই টাকা জমা করতেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা । কিন্তু মহিলারা পরে জানতে পারেন কিস্তির টাকা আদপেই ব্যাঙ্কে জমা হত না । এদিকে গ্রাহক পরিসেবা কেন্দ্রে তালা ঝুলিয়ে বেপাত্তা এজেন্ট । শেষে বৃহস্পতিবার একাধিক গোষ্ঠীর শতাধিক মহিলা জড়ো হয়ে কাটোয়ার গরাগাছা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ওই রাস্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় এসে ম্যানেজারকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ দেখালেন । মহিলাদের সঙ্গে যোগ দেন ব্যাঙ্কের অনান্য গ্রাহকরাও । অভিযোগ,শুধু গোষ্ঠীর মহিলাদের কিস্তির টাকাই নয়,ওই গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে জমা দেওয়া কোনও টাকাই ব্যাঙ্কে জমা করা হয়নি । ওই এজেন্ট সব আত্মসাৎ করে নিয়েছে । ওই সমস্ত টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করার দাবি তোলেন বিক্ষোভকারীরা । শেষে ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের আশ্বাসে বিক্ষোভ বন্ধ হয় ।
মূল শাখার উপর চাপ কমানোর জন্য প্রতিটি এলাকায় এজেন্টদের মাধ্যমে গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র খুলে রেখেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখাগুলি । কাটোয়ার গরাগাছা বাসস্ট্যান্ডে এলাকার ওই রাস্ট্রায়ত্ত ব্যঙ্কের শাখার অধীনে রয়েছে ৫ টি গ্রাহক পরিসেবা কেন্দ্র । তার মধ্যে কাটোয়ার দেয়াসীন গ্রামের বাসিন্দা সুখেন মাজি নামে জনৈক এক যুবকের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছেন ব্যাঙ্কের গ্রাহক ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা ।
জানা গেছে,কাটোয়া থানার খেদাপাড়া, পলতাগাছা, গরাগাছা প্রভৃতি এলাকা মিলে বেশকয়েকটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী সুখেন মাজির কেন্দ্রে এসেই ঋণের কিস্তির টাকা জমা করতেন । এছাড়া ওই ব্যাঙ্কের অনান্য বেশ কিছু গ্রাহকও ওই গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে লেনদেন করতেন বলে জানা গেছে । পলতাগাছা গ্রামের একটি গোষ্ঠীর দাবি, তাঁরা ব্যাঙ্ক ঋণের কিস্তি বাবদ ২ লক্ষ ১০ হাজার ৬৯০ টাকা জমা করেছিলেন । কিন্তু পরে জানতে পারেন ওই টাকা আদপেই ব্যাঙ্কে জমা হয়নি । একই দাবি করেছে খেদাপাড়া গ্রামের দুটি গোষ্ঠী । তাঁদের অভিযোগ,দুই গোষ্ঠী মিলে ৯০,৮০০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন ওই গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের এজেন্ট ।
জানা গেছে,এই কথা চাওড় হতে ব্যাঙ্কের অনান্য গ্রাহকরা যারা সুখেন মাজির কেন্দ্রে এসে টাকা জমা করেছিলেন তাঁরা নিজেদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পরখ করে দেখতে শুরু করেন । তখন তাঁদের নজরে পড়ে তাঁদের জমা করা টাকাও ব্যাঙ্কে জমা হয়নি । এরপর এদিন ক্ষিপ্ত গ্রাহকরা ব্যাঙ্কে এসে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে দেন । বিক্ষোভকারীদের মধ্যে মহিবুল শেখ নামে এক গ্রাহক দাবি করেছেন তাঁর ফিক্সড ডিপোজিটের জন্য দেওয়া ৫৪ হাজার টাকা ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া হয়নি । একইভাবে রাধারমন বৈরাগ্যর অভিযোগ, তিনি কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের ৬০,১০০ টাকা জমা দিয়েছিলেন ওই গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে । কিন্তু পরে জানতে পারেন তা ব্যাঙ্কে জমা হয়নি ।
এই বিষয়ে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার মানিক পাল বলেন, ‘বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে । আগেই এই বিষয়ে পুলিশকে জানানো হয়েছে । এখন গ্রাহকদের টাকা ফেরানোর প্রচেষ্টা চলছে ।’।