এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,০৩ ফেব্রুয়ারী : পরনে গেরুয়া বর্ণের শাড়ি, শরীরে জড়ানো ‘হরে কৃষ্ণ’ মহামন্ত্র লেখা পীতবর্ণের উত্তরীয় । দেবী সরস্বতী প্রতিমার পূজার ঘটের সামনে বসে বৈদিক রীতি মেনে দেবীর আরাধনায় মগ্ন বছর পঁচিশের তরুনী । আজ সোমবার বাগদেবীর পূজোয় এমনই চিত্র দেখা গেল বাংলাদেশের রাজধানী শহর ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে । বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মণ্ডপে এবারও বিদ্যা ও সংগীতের দেবী সরস্বতীর পূজার পৌরহিত্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সমাদৃতা ভৌমিক । বাণী অর্চনা, আরতি ও ভক্তদের পুষ্পাঞ্জলি-সবকিছু পরিচালনা করছেন সমাদৃতা। এনিয়ে দ্বিতীয়বার সরস্বতীপূজায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো নারী পুরোহিত পূজা পরিচালনা করলেন ।
হিন্দু ধর্মে নারীরা পূজার আনুষঙ্গিক কাজে সহায়ক ভূমিকা পালন করলেও পৌরহিত্যের কাজে সাধারণত ব্রাহ্মণ পুরুষদেরই দেখা যায়। সমাদৃতা ভৌমিকের ভাষ্য সনাতন শাস্ত্রমতে কোথাও বলা নেই পৌরহিত্যের কাজ কেবল পুরষের দখলে। তিনি বলেন, ‘শাস্ত্রমতে কোথাও বলা নেই যে নারী পুরোহিত পৌরোহিত্য করতে পারবে না। তারপরেও নারীরা পৌরহিত্য করতে উৎসাহ পায় না। তাদের এই জড়তা কাটাতে দ্বিতীয়বারের মতো আমার এই প্রয়াস।’
জ্ঞান ও বিদ্যার রূপ হলেন দেবী সরস্বতী। প্রতিবছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের শ্রী পঞ্চমী তিথিতে বিদ্যাদেবীর পূজা হয়। হাতে বীণা থাকে বলে সরস্বতীকে বীণাপাণিও বলা হয়। সাদা রাজহাঁস দেবীর বাহন। ঐতিহ্য অনুযায়ী এদিন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পুরোহিতের মন্ত্র পাঠের মধ্য দিয়ে বিদ্যাদেবীর মন্দিরে সন্তানদের প্রথম বিদ্যার পাঠের হাতেখড়ির আয়োজন করেন।
এবার জগন্নাথে ৩৭ মণ্ডপে হচ্ছে সরস্বতী পূজা। প্রতিবছরের মত এবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ছাড়া অন্যান্য বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আলাদাভাবে পূজা উদযাপন করছেন। সেই হিসাবে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৩টি বিভাগ; দুটি ইনস্টিটিউট, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল এবং চারুকলা অনুষদের তিনটি বিভাগের সমন্বিত উদ্যোগে পূজা হচ্ছে। পূজা উপলক্ষে আলপনা ও আলোকসজ্জায় রঙিন হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস চত্বর । শান্ত চত্বর, শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের নিচতলা, বিজ্ঞান অনুষদ চত্বর, কলাভবন ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে নিজ নিজ বিভাগের মণ্ডপ সাজিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।।