এইদিন ওয়েবডেস্ক,পূর্ব মেদিনীপুর,১৬ জানুয়ারী : মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেয়াদ উত্তীর্ণ বিষাক্ত সেলাইনে মৃত প্রসূতির পরিবারের সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার দেখা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু ৷ নবজাতক শিশুকে কোলে নিয়ে আদর করার পর তার সমস্ত দায়িত্ব নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন । শিশুর বাবা দেবাশিস রুইদাসের কাঁধে হাত রেখে শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’বাচ্চাটার উপর বাবা হিসেবে আপনি দায়িত্ব পালন করুন । আমি আপনার বড় দাদা হিসেবে বাচ্ছাটার সমস্ত দায়িত্ব পালন করব।’
সেই সাথে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ‘খুনি’ বলে অবিহিত করে তিনি বলেন,’পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে গত ১৩ ডিসেম্বর কর্নাটক সরকার ওষুধ বন্ধ করার কথা বলেছে । তারপর আজ ১৬ তারিখ । আমাকে মুখ্য সচিব বলছেন যে ১০ই ডিসেম্বর তারা জেনেছেন । এটা খুন ছাড়া আর কি ? কাল সকালে কোন ভোট নেই যে আমি রাজনীতি করতে এসেছি । এটা খুন ছাড়া আর কি ? এটা সরকার দ্বারা মাডার । গরিব মানুষ কোথায় যাবে ?’
বৃহস্পতিবার দুপুরে নবান্নে বসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেদিনীপুর মেডিকেলে প্রসূতি মৃত্যুর জন্য চিকিৎসকদের দায়ী করে মৃতার পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন । কিন্তু আজ মৃতার স্বামীকে সরকারের দেওয়া ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ নিতে অস্বীকার করেন শুভেন্দু অধিকারী ৷ তিনি নিজে বিপত্নীক দেবাশিস রুইদাসের হাতে ২ লক্ষ টাকার চেক দিয়ে আরও ৮ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন,’সরকারের কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকার এক টাকাও কম নেবেন না… স্থায়ী নিয়োগপত্র… দশ হাজার টাকা ক্যাজুয়েলে ছয় মাসের বেতন বুঝিয়ে দেবে তারপর ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেবে । একদম নেবে না । তুমি মাথা উঁচু করে থাকো, আমি আছি তোমার সাথে । অধিকার আদায় করে নিতে হবে।’ পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘৫ লক্ষ টাকা কেন নেবে ? ৫০ লক্ষ টাকা দিতে হবে । এখানে তো চিকিৎসা বিজ্ঞান ব্যর্থ হয়নি । খুনির কাছ থেকে টাকা নেবেন না । মমতা খুনি ।’ শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’এক মাসের বেশি সময় ধরে হাজার হাজার রোগীর শরীরে এই বিষাক্ত স্যালাইন ঢুকিয়েছে । ক্ষমার অযোগ্য ।’
মৃতার পরিবারের সাথে সাক্ষাতের ভিডিও এক্স-এ পোস্ট করে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন,’আজ আমি সেই মহিলার বাড়িতে গিয়েছিলাম যিনি একটি নবজাতক শিশুর জন্ম দেওয়ার পরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে মারা গিয়েছিলেন, কারণ তাকে “পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড” থেকে ক্রুটিযুক্ত, নিম্নমানের, মেয়াদোত্তীর্ণ এবং বিষাক্ত রিঙ্গার ল্যাকটেড (RL) স্যালাইন দেওয়া হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দপ্তরের অবহেলার কারণে জন্মের পরপরই তার তরুণী মাকে হারানো সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুটিকে দেখে হৃদয় ভেঙে গেল । আমি শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের আশ্বস্ত করেছি যে শিশুটির লালন-পালন ও শিক্ষার যাবতীয় খরচ আমি বহন করব।’
তিনি আরও লিখেছেন,’আমি স্বামীকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে কোনো সামান্য অর্থ গ্রহণ না করার পরামর্শ দিয়েছি, কারণ এই দৃষ্টান্তে রাজ্য সরকার দোষীর দল হিসেবে অবশ্যই শাস্তিমূলক ক্ষতির জন্য কভার করতে হবে এবং যদি রাজ্য সরকার চাকরির প্রস্তাব দেয় তবে এটি একটি স্থায়ী সরকারি চাকরি হতে হবে কিছু অস্থায়ী নৈমিত্তিক চাকরি নয়। আমি পরিবারকে আশ্বস্ত করেছি যে তারা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কোনও আইনি লড়াই চালাতে চাইলে আমি সমর্থন করব।’।