এইদিন ওয়েবডেস্ক,১৬ ডিসেম্বর : ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে প্যারাট্রুপারে চড়ে ঢুকে পড়ে ফিলিস্তিন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাসের হাজার খানেক সন্ত্রাসী । তারপর তারা যে নৃশংসতা চালিয়েছিল তা বিশ্বের সবচেয়ে কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইসলামি স্টেটকেও হার মানিয়েছিল । তবে সন্ত্রাসী হামাসের এই নাশকতায় ব্যাপক খুশি হয়েছিল গাজার বাসিন্দারা । তারা পথে নেমে একে অপরকে মিষ্টি খাইয়ে, আতসবাজি পুড়িয়ে, উল্লাস করে এই নাশকতা উদযাপন করেছিল সেদিন । কিন্তু তাদের এই উল্লাশ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি । ঠিক তার পরের দিন থেকেই ইসরায়েল গাজায় ‘অপারেশন আয়রন সোর্ড’ অভিযান শুরু করলে গাজাবাসীদের উল্লাস কান্নায় রুপান্তরিত হতে শুরু করে । খাদ্য,পানীয় জল থেকে শুরু করে চিকিৎসা পরিষেবা পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায় । গাজা জুড়ে শুরু হয় শুধু মৃত্যু মিছিল । ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের তান্ডবে গাজা উপত্যকা কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয়েছে । তাই ইসরায়েলের রুদ্ররোষ থেকে নিস্তারের রাস্তা খুঁজছিল তারা । অবশেষে বুধবার যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হতেই ফের উল্লাসে মেতে উঠল গাজার হামাসপন্থী বুভুক্ষুর দল ।
যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর গাজায় উদ্যাপনে নামে ফিলিস্তিনিরা । সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল–থানি। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে দোহায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির যে চুক্তি হয়েছে তা ১৯ জানুয়ারি, রবিবার থেকে কার্যকর হবে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাস। সেই হামলায় প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত হয় আর ২৫১ জনকে পনবন্দি করে নিয়ে যায় তারা । হামাসের হাতে এখনো ৯৪ জন পনবন্দি রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৩৪ জনকে হামাসের জঙ্গিরা মেরে ফেলেছে বলে মনে করা হচ্ছে । অপরদিকে গাজায় ইসরাইলের হামলায় ৪৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তার মধ্যে অধিকাংশ হামাসের সন্ত্রাসবাদী । প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটিও ইসরায়েলের সঙ্গে একটা সমঝোতায় আসতে চাইছিল । আর এই চুক্তির মধ্যস্থতা করছিল হামাসের মদতদাতা ইসলামি রাষ্ট্র কাতার । বিবিসির গাজা সংবাদদাতা রুশদি আবু আলোফ বলেন, চুক্তিটি গাজার কয়েক লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষের ঘরে ফিরে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করবে।
এদিকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের রাস্তায় ফিলিস্তিনিদের উচ্ছ্বাস করতে দেখা যায়। মধ্য গাজার দেইর-আল বালাহতে ফিলিস্তিনিরা উল্লাসে মেতে উঠে । অন্যদিকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির খবরে তেল আবিবে পনবন্দিদের স্বজনদের উল্লাস করতে দেখা গেছে । যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন,’পনবন্দিদের মুক্তির জন্য একটি চুক্তি হয়েছে, তারা শিগগিরই মুক্তি পাবে।’ তবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, চুক্তিতে এখনও ‘বেশ কিছু অমীমাংসিত ধারা’ রয়েছে। তবে আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তা চূড়ান্ত করা হবে বলে নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে।।