এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৮ জানুয়ারী : লক্ষ্মীর ভান্ডারের অনুদান পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ‘কাটমানি’ নিয়ে সধবা গৃহবধূকে বিধবাভাতা প্রাপকের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে । উল্লেখ্য,সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সন্দেশখালিতে জনসভায় ঘোষণা করেছিলেন,’লক্ষ্মীর ভান্ডারের মা বোনেদের বলবো আগামী দিন আপনাদের বিধবা ভাতার জন্য কান্নাকাটি করতে হবে না, ছুটতে হবে না‘ । মুখ্যমন্ত্রী সেই ভিডিও ক্লিপিং-এর পাশাপাশি বিধবাভাতা ঢোকা একজন সধবা মহিলা ও তার শাশুড়ির বক্তব্য এক্স-এ শেয়ার করে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তোপদেগে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন,’সধবা গৃহবধূকে জোরপূর্বক বিধবাভাতা পাইয়ে দিল চটিচাটা প্রশাসন‘।
ভিডিওতে মুখ ঝাপসা করে দেওয়া ওই মহিলাকে বলতে শোনা গেছে,’আমি জানতাম না । ভেবেছিলাম লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা ঢুকেছে । আমার বাড়িতে উত্তম হালদার নামে একজন তৃণমূলের নেতা এসেছিল । সে এসে আমায় বলল, ‘বৌমা, তোমার লক্ষ্মীর ভান্ডার হয়েছে ?’ আমি উত্তরে বললাম,’লক্ষ্মীর ভান্ডারের অনুদানের জন্য আমি কাগজপত্র জমা দিয়েছি, কিন্তু হয়নি । তখন সে আমাকে বলল,’আমায় কিছু টাকা দাও তাহলে আমি তোমার লক্ষ্মীর ভান্ডার করে দেব’ ।’ মহিলা জানিয়েছেন যে তিনি ওই তৃণমূল নেতাকে মোট ৩,০০০ টাকা দিয়েছিলেন এবং তার পরিবর্তে তাকে বিধবা ভাতার অনুদান পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে । তিনি জানান যে লক্ষ্মীর ভান্ডারের জন্য তিনি নথিপত্র জমা দিয়েছিলেন কিন্তু পাচ্ছেন বিধবা ভাতার অনুদান ।
ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন মহিলার শাশুড়ি । তাকে বলতে শোনা গেছে, ‘আমি মা হিসেবে দেখছি আমার ছেলেকে মৃত করে দিয়েছে, দিয়ে আমার বৌমাকে বিধবা ভাতা করে দিয়েছে । লক্ষ্মীর ভান্ডারে জায়গায় বিধবা ভাতা হয়ে গেছে । আমি যখন জানতে পেরেছি তখন মা হয়ে ওই টাকায় কি ভাত খেতে পারি ? না ব্যবহার করতে পারি ?’ ছেলের ডেথ সার্টিফিকেট করে দিয়ে কিভাবে বউমার বিধাতা করে দিল তা নিয়ে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ।
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, ‘মমতা ব্যানার্জী সন্দেশখালিতে বলেছিলেন “লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রাপকদের বিধবাভাতা নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবে না।”যেমন কথা তেমন কাজ ! মুখ্যমন্ত্রীর বাণী কে ধ্রুব সত্য প্রমাণ করতে চটিচাটা প্রশাসন ও ওনার দলীয় নেতৃত্ব মাঠে নেমে পড়েছেন। লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রাপক সধবা গৃহবধূ কে জোরপূর্বক বিধবাভাতা পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিল নদীয়া জেলার শান্তিপুরের পঞ্চায়েত এবং বিডিও। অনুঘটক সেই কাটমানি খেকো স্থানীয় তোলামূল নেতৃত্ব। জীবিত মানুষের নামে ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু না হওয়া সত্ত্বেও কি করে তার স্ত্রীর নামে বিধবা ভাতা চালু হয়ে গেলো তার তদন্ত হওয়া উচিত। এরকম আরও কত ঘটনা ঘটেছে রাজ্যে তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চাই ।’
তিনি আরও লিখেছেন,’আমি আগেও বলেছি মুখ্যমন্ত্রী’র এই মন্তব্য অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ। আমি বাংলার মা বোনদের মঙ্গল প্রার্থনা করি এবং আবারো দাবি করি এই “লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রাপকদের বিধবাভাতা” সংক্রান্ত মন্তব্যের জন্য মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী নিঃশর্ত ক্ষমা স্বীকার করুন মা বোনদের কাছে।’ তবে এই ঘটনাটি রাজ্যের কোন জায়গায় ঘটেছে তা তিনি স্পষ্ট করেননি । মহিলার নামও প্রকাশ করেননি বিরোধীদল নেতা ।।