প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৩ জুলাই : পেটে লাথি মেরে বধূর গর্ভজাত সন্তান নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগে স্বামী ও ভাশুরকে গ্রেপ্তার করলো ভাতার থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম সাদ্দাম শেখ ও সামাত শেখ । তাদের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানার আমবোনা গ্রামে । বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ । সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে শুক্রবার দুই ধৃতকে পেশ করা হয় বর্ধমান আদালতে । সিজেএম ধৃতদের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়ে আগামী শুক্রবার ফের আদালতে পেশের নির্দেশ দিয়েছেন ।
পুলিস জানিয়েছে, নির্যাতিতা বধূর নাম চুমকি বেগম । গলসি থানার গোলগ্রামে চুমকির বাবার বাড়ি । বছর চারেক আগে ভাতারের আনবোনার যুবক সাদ্দামের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয় । বিয়েতে চাহিদামতো পণ দিয়েছিল বধূর বাবার বাড়ির লোকজন । অভিযোগ, বিয়ের দু’মাস পর যৌতুকের পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বধূর উপর মানসিক নির্যাতন শুরু হয় বলে ।পাশাপাশি বাইক কেনার জন্য চুমকিকে বাপেরবাড়ি থেকে আরও ৫০ হাজার টাকা আনার জন্য চাপ দেওয়া শুরু করে তাঁর স্বামী ।
জানা গেছে, এই পরিস্থিতিতে মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে বধূর বাপেরবাড়ি লোকজন জামাইকে বাইক কিনে দেয় । এছাড়াও আরও ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয় । তারপরও অত্যাচার বন্ধ হয়নি । এরপর ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই বধুকে গর্ভপাত করার জন্য চাপ দেওয়া শুরু করে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির সদস্যরা । চুমকি তাতে রাজি না হওয়ায় তাঁর উপর অত্যাচার বাড়ে ।
বধুর বাপের বাড়ির অভিযোগ,২০১৮ সালের ৩০ আগস্ট রাতে তাঁকে মারধর করা হয়। পেটে লাথি মারা হয়। তাতে বধূ অসুস্থ হয়ে পড়েন । তাঁকে বর্ধমান শহরের একটি নার্সংহোমে ভর্তি করা হয় । কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাঁকে পানাগড়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মৃত সন্তান প্রসব করেন চুমকি । এরপর কিছুটা সুস্থ হয়ে মাস দুয়েক পর তিনি ফের শ্বশুরবাড়িতে ফেরেন ।
কিন্তু ফের তাঁর উপর শুরু হয় নির্যাতন । শেষে দু’মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় তাঁকে শ্বশুরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় ।এই ঘটনার বিচার চেয়ে বধূ চুমকি বেগম বর্ধমান আদালতে মামলা করেন। সিজেএম কেস রুজু করে তদন্তের জন্য ভাতার থানার ওসিকে নির্দশ দিলে পুলিশ বধূর স্বামী ও ভাশুর কে গ্রেপ্তার করে ।।