এইদিন ওয়েবডেস্ক,সিরাজগঞ্জ(বাংলাদেশ),২৬ ডিসেম্বর : বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ জেলা শাহজাদপুর উপজেলায় ত্রিকোন প্রেমের জেরে আত্মঘাতী হল হিন্দু তরুন-তরুনী । মৃতরা হল উপজেলা শহরের সাহাপাড়ার বাসুদেব দাসের মেয়ে সুদীপ্তা দাস কেকা (২৬) এবং একই উপজেলার গাড়াদহ গ্রামের বিকাশ কর্মকারের ছেলে হৃদয় কর্মকার মদন (৩০)। হৃদয় কর্মকার বিবাহিত ছিলেন । ওষুধ কোম্পানিতে চাকরির সুবাদে পরিবার নিয়ে তিনি বগুড়ার ঠনঠনিয়া হিন্দুপাড়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন । সোমবার রাত ১০টার দিকে ওই বাড়ির নিজের ঘরে গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হন তিনি । অন্যদিকে মঙ্গলবার প্রেমিক মদনের মৃত্যুর খবর পেয়ে বেলা ১১টার দিকে বাড়িতে একসঙ্গে বেশ কয়েকটি গ্যাসের ট্যাবলেট খান শাহজাদপুর সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ও সংগীতশিল্পী সুদীপ্তা দাস কেকা। পরে পরিবারের লোকজন বুঝতে পেরে দ্রুত স্থানীয় পিপিডি হাসপাতালে নিয়ে যান । সেখান থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় । কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে দেন । কিন্তু সেখানে নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি বিকেলের দিকে মারা যান।এদিকে মৃত সুদীপ্তার দ্বিতীয় প্রেমিক শাহজাদপুর শহরের প্রাণনাথপুর গ্রামের মন্নাফ ফকিরের ছেলে কণ্ঠশিল্পী আসাদ চম্পট দিয়েছে ।
কেকা শাহজাদপুর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে এবার অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছেন। তিনি স্থানীয় ‘পূরবী সংগীত বিদ্যালয়ের’ কণ্ঠশিল্পী ছিলেন এবং সংগীতে রাজশাহী বিভাগীয় প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন। আর হৃদয় বিবাহিত এবং তার পরিবারে স্ত্রী ও একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। কণ্ঠশিল্পী আসাদ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে টাকার বিনিময়ে গান করার পাশাপাশি প্যাড বাজান। কেকার সঙ্গে তার প্রেমের বিষয়টি সংগীতাঙ্গনের সবাই জানতো বলে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। তবে শুধু আসাদই নয়,সমান্তরালে হৃদয় কর্মকার মদনের সঙ্গেও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন কেকা । নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক যুবক বলেন, ‘মদন কর্মকার বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও সুদীপ্তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল। তবে সুদীপ্তাকে তিনি বুঝতে দেননি যে তিনি বিবাহিত। মদনের কর্মস্থল বগুড়ায় হওয়ায় সুদীপ্তা মাঝে মধ্যেই সেখানে গিয়ে দেখা করতেন।’
শাহজাদপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আবু সাঈদ বলেন, দুইটি আত্মহত্যার ঘটনায় পরিবারের কেউ মুখ খুলছে না। তবে আমরা জানতে পেরেছি কণ্ঠশিল্পী কেকার সঙ্গে হৃদয় কর্মকার মদন এবং শহরের প্রাণনাথপুর গ্রামের মন্নাফ ফকিরের ছেলে কণ্ঠশিল্পী আসাদের ও প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, প্রেমের কারণে পারিবারিক দ্বন্দ্ব হওয়ায় হৃদয় আত্মহত্যা করেছেন। আর সেটি জানার পরই তার প্রেমিকা কেকাও আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। ঘটনার পর থেকে কেকার আরেক প্রেমিক আসাদ আত্মগোপনে রয়েছেন। আমরা সব দিক বিবেচনায় নিয়ে ঘটনার তদন্ত করছি।’।

