এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভোপাল(মধ্যপ্রদেশ),২৪ ডিসেম্বর : ভোপালের জাহাঙ্গিরাবাদের পুরানো গাল্লা মান্ডিতে শিখ ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটেছে । ব্যাপক পাথরবাজির পাশাপাশি তলোয়ার দিয়ে হামলা চালানো হয় । সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়েছে অন্তত ৬ জন । মধ্যপ্রদেশ: পাথর ছোঁড়ার ঘটনায়, ভোপালের ডিসিপি জোন-১, প্রিয়াঙ্কা শুক্লা এএনআইকে বলেছেন,’দুই দিন আগে, জাহাঙ্গিরাবাদ থানার গাল্লা মান্ডিতে মোটর সাইকেলের গতি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদ হয়েছিল, যেখানে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছিল, এতে ৫ জন অভিযুক্ত ছিল, ৩ জনকে তাৎক্ষণিক গ্রেফতার করা হয় এবং ২ জন পলাতক ছিল, আমাদের পুলিশ টিম আজকে পলাতক আসামিদের দেখেছে বলে জানা গেছে৷ এই খবর পেয়ে লোকেরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং প্রায় ২৫-৩০ জন লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে এখানে আসে এবং তাদের দ্বারা পাথরও ছোড়া হয়, কিন্তু যেহেতু এখানে আগে থেকেই পুলিশ মোতায়েন ছিল, তারা তাৎক্ষণিকভাবে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে খবর দেয়, তাই সঙ্গে সঙ্গে পর্যাপ্ত পুলিশ বাহিনী এখানে উপস্থিত হয় এবং প্রায় ৫ মিনিটের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী সবাইকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ।’ যদিও তিনি দাবি করেছেন,’এই ঘটনায় কেউ আহত হয়নি… এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
তবে মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভোপালের জাহাঙ্গিরাবাদ এলাকার পুরানি গাল্লা মান্ডির এলাকায় গত ২২ ডিসেম্বর রবিবার,মোহাম্মদ ফয়েজ নামে এক যুবক একটি বাইকে করে বেপরোয়া গতিতে শিখ কলোনির সরু রাস্তা দিয়ে সর্দারপুরার দিকে যাচ্ছিল । কিছু লোক ফায়েজকে বাধা দিলে সে তর্ক শুরু করে ।
সেই সময় অবশেষে ফয়েজ সবজির দোকান থেকে একটা ছুরি নিয়ে সরদারের ওপর হামলা চালায়। এই ঘটনায় পুলিশ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। একই সঙ্গে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন মোহাম্মদ ফয়েজ। পলাতক আরও দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করায় শিখ সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শিখ সম্প্রদায় পাগড়ির অসম্মানের অভিযোগ তুলেছিল।
এই প্রসঙ্গে, আজ মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) শিখরা মাইকেল নামে এক মুসলিমকে আক্রমণ করে। জবাবে মুসলিম পক্ষও পাথর ছুড়তে থাকে। অনেকে আহত হয় । এর মধ্যে মহিলাও রয়েছেন। শিখ পক্ষের অভিযোগ যে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরা তাদের বাড়ির পাশ দিয়ে যখন বেপরোয়াভাবে বাইক চালিয়ে যায় তখন। রাস্তায় শিশুরা খেলা করে । তাদের ক্ষতি হতে পারে।
অর্গানাইজারের সাংবাদিক শুভি বিশ্বকর্মার মতে, জাহাঙ্গিরাবাদের যে এলাকায় এই সহিংসতা হয়েছে সেটি মুসলিম অধ্যুষিত। এখানকার অধিকাংশ দোকানের মালিক মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন। হিন্দু ও শিখ সম্প্রদায়ের লোকজন এখানে ভাড়ায় দোকান নিয়েছে। কয়েকদিন আগে ভাড়া নিয়ে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এটিও দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনার একটি বড় কারণ বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, মুসলিম পক্ষ বলছে যে শিখ সম্প্রদায়ের লোকেরা তাদের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। মুসলিম পক্ষের মতে, শিখ জনতা বলেছিল, “এখানে কোনো মুসলমানকে থাকতে দেওয়া হবে না।” এতে উভয় পক্ষের নারীসহ মোট ৬ জন আহত হয়েছে। তাদের সবাইকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে । সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। পুলিশ লাঠিচার্জ করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় । মামলা দায়ের করে হামলাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। ডিসিপি প্রিয়াঙ্কা শুক্লা জানিয়েছেন, উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে ইতিমধ্যেই ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। অতিরিক্ত বাহিনী ডেকে সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। উভয় পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে ।।