প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২২ জুলাই : জামিন অযোগ্য ধারার মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা পুষ্পস্তবক দিয়ে সম্বর্ধনা জানাচ্ছেন খোদ বর্ধমান থানার আইসিকে। এই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র আলোড়ন পড়ে গিয়েছে পূর্ব বর্ধমানের রাজনৈতিক মহলে । বিজেপি নেতারা কটাক্ষ করে বলছেন, অভিযুক্ত শাসক দলের নেতা হলেই পুলিশের কাছে তাঁর সাতখুন মাফ ।
বর্ধমানের রায়ান-১ অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি
শেখ জামাল । তিনি বৃহস্পতিবার বর্ধমান গিয়ে থানার নবনিযুক্ত আইসি সুখময় চক্রবর্তীকে পুষ্পস্তবক দিয়ে সংবর্ধনা দেন । আই সি কে সম্বর্ধনা দেওয়ার সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল পড়ে যায় ।কারণ বর্ধমান থানার নাড়ি গ্রামের বাসিন্দা শেখ জামাল জামিন অযোগ্য ধারার মাললায় অভিযুক্ত । সে কি করে থানায় গিয়ে আইসি কে সম্বর্ধনা দিয়ে আবার নির্দ্বিধায় ফিরে গেলন সেই প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছে বিরোধীরা। বর্ধমান থানার আইনজীবীরা বলছেন, একজন অভিযুক্তের হাত থেকে সংবর্ধনা নিয়ে আইসি আদতে আইন ভেঙেছেন।
বর্ধমান আদালতের আইজীবী ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসায় উত্তপ্ত হয় বর্ধমানের নাড়ি বেলবাগান এলাকা। সেখানকার বাসিন্দা সঞ্জয় দাস থানায় অভিযোগ দায়ের করে জানান,গত ২৮ মে বেলা ১১টা নাগাদ শেখ জামালের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। তারপর তারা তাঁকে বেলবাগান এলাকায় রাস্তায় ফেলে রড, লাঠি দিয়ে মারধর করে । জামাল বন্দুক দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করে। শুধু তাই নয়, জামাল জাত তুলে গালিগালাজ করে বলেও সঞ্জয় দাসের অভিযোগ।জখম সঞ্জয় কে পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। এই ঘটনা নিয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ এসসি অ্যাণ্ড এসটি অ্যাক্ট সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে। এখানেই শেষ নয় । জামালের অত্যাচার নিয়ে জেলা পুলিশ সুপারের কাছেও ডেপুটেশন জমা পড়ে । যদিও এতকিছুর পরেও সামান্য তৃণমূলের অঞ্জল সভাপতি শেখ জামালকে গ্রেপ্তারের
ব্যাপারে পুলিশ সক্রিও হয়নি বলে অভিযোগ।
সেই শেখ জামালের এদিন আইসিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি সামনে আসতেই সরব হয়েছে বিরোধীরা। বর্ধমান থানার আইসি সুখময় চক্রবর্তী যদিও জানান,তিনি নতুন থানায় যোগ দিয়েছেন ।সবাইকে তিনি এখনো চেনেন না ।
ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিজেপি নেতা কল্লোল নন্দন বলেন, “ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা নিয়ে পুলিশ প্রথমে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। হাইকোর্টের নির্দেশের পর পুলিশ কিছুটা সক্রিয় হয়ে মামলা রুজু করে মাত্র । কিন্তু, অভিযুক্তদের কাউকে ধরা হচ্ছেনা। এর থেকেই প্রমাণ হচ্ছে অভিযুক্ত শাসকদলের নেতা হলেই তাঁর সাতখুন মাফ।সেই কারণেই একজন অভিযুক্ত হয়েও শাসক দলের নেতা দিব্যি থানায় গিয়ে আইসিকে পুষ্পস্তবক দিয়ে সম্বর্ধনা দিয়ে আসতে পারলেন” ।তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যের মুখপত্র দেবু টুডু বলেব, ‘ঘটনার বিষয়ে আমি কিছু জানি না । খোঁজ নিয়ে দেখব ।’।