এইদিন ওয়েবডেস্ক,কানপুর(উত্তরপ্রদেশ),২২ ডিসেম্বর : নিজের ধর্ম পরিচয় লুকিয়ে বিবাহ বিচ্ছিন্না হিন্দু মহিলাকে ধর্ষণ- ধর্মান্তরিত করার চেষ্টার অভিযোগ উঠল উত্তরপ্রদেশের কানপুরের আকিল (Akeel) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে । শুধু তাইই নয়,তার বিরুদ্ধে অশ্লীল ভিডিও ব্যবহার করে নির্যাতিতার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা হাতানোর চেষ্টার অভিযোগও উঠেছে ৷ গত শুক্রবার(২০ ডিসেম্বর) কানপুরের নওবস্তা থানায় মহিলা একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছে ওপি ইন্ডিয়া । প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,প্রাথমিকভাবে পুলিশ নির্যাতিতা ও আকিলের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করে । কিন্তু তার পরেও হয়রানি বন্ধ না হলে, মহিলাটি অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনারের (ADCP) দ্বারস্থ হন এবং এরপর বিষয়টি নিয়ে পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয় ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী , ঘটনাটি ঘটেছে কানপুরের দাদা নগর এলাকায়। এই মামলার অভিযোগকারিনী হলেন বারার( Barra) বাসিন্দা একজন বিবাহবিচ্ছিন্ন হিন্দু মহিলা যিনি একটি কারখানায় কাজ করেন যেখানে অভিযুক্ত আকিল একজন ঠিকাদার হিসাবে নিযুক্ত ছিল । আকিল মহিলার কাছে দাবি করে যে সে অবিবাহিত । যদিও পরে জানা যায় তার অনেক আগেই বিয়ে হয়ে গেছে । আকিল তার আসল ধর্ম পরিচয় লুকিয়েছিল এবং মহিলার সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে নিজের নাম “বাউয়া” বলে পরিচয় দিয়েছিল। মহিলাকে সে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কের জন্য জবরদস্তি করে। নির্যাতিতা তার অভিযোগে বলেছেন যে তিনি আকিলের সাথে শারীরিক সম্পর্কের প্রতিহত করেছিলেন, কিন্তু আকিল তার কথায় কর্ণপাত করেনি। নির্যাতিতা পুলিশকে জানায়, আকিল তাকে বিভিন্ন হোটেলে নিয়ে যায় এবং তার অশ্লীল ছবি ও ভিডিও রেকর্ড করে। এ সময় নির্যাতিতা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। আকিল যখন গর্ভধারণের কথা জানতে পারে, তখন সে নির্যাতিতাকে গর্ভপাত করতে বাধ্য করেন। অবশেষে, নির্যাতিতা তার আসল পরিচয় জানতে পারে যে সে হিন্দু নয় বরঞ্চ একজন মুসলিম এবং এটাও জানতে পারে যে সে ইতিমধ্যেই বিবাহিত।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, নির্যাতিতা এই বিষয়ে তার মুখোমুখি হলে আকিল তাকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের জন্য চাপ দিতে থাকে। কিন্তু মহিলা ধর্মান্তরিত হতে অস্বীকার করেন, তারপরে আকিল তাকে অশ্লীল ছবি এবং ভিডিও ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করেছিল। নির্যাতিতা মহিলার অভিযোগ, আকিল তার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল । আকিল তাকে এমনভাবে ফাঁদে ফেলেছিল যে তিনি নিরুপায় হয়ে আকিলের স্ত্রীর কাছে যান। সে তার স্ত্রীকে সমস্ত কথা খুলে বলে সাহায্য করার আবেদন জানান । কিন্তু তাকে সাহায্য করার পরিবর্তে আকিলের স্ত্রী ও তার তিন ভাই নির্মমভাবে নির্যাতন চালায়। ঘটনার পর মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা মহিলা । তবে সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ । পরিবর্তে গত ৫ই ডিসেম্বর, পুলিশ নির্যাতিতা ও আকিলের পরিবারের মধ্যে সমঝোতার সুযোগ করে দেয়। সমঝোতার পর, আকিল নির্যাতিতাকে ৫ লাখ টাকা এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণের জন্য চাপ দিতে শুরু করে ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত শুক্রবার, নির্যাতিতা অবশেষে এডিসিপির কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং তাকে সমস্ত ঘটনার কথা খুলে বলেন । এডিসিপি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে নওবাস্তা থানাকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন। এদিকে নির্যাতিতার সমর্থনে এগিয়ে এসেছে হিন্দু সংগঠনগুলোও । তারা কানপুরে লাভ জিহাদের ক্রমবর্ধমান ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং আকিলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে ।।