এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৩ নভেম্বর : আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশের চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীর জামিনের আবেদনের শুনানি ছিল । কিন্তু তার পক্ষে সওয়াল করার জন্য কোন হিন্দু আইনজীবী অবশিষ্ট ছিলেন না । কারণ চিন্ময়ী কৃষ্ণ প্রভু আইনজীবী রামেন রায়ের উপর ধারো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে মুসলমানরা । তার শরীরে একাধিক জায়গায় গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে । গুরুতর আঘাত লেগেছে তার মাথায় । সংগাহীন অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তিনি । আর এক আইনজীবী যুবক আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর(পিপি) তথা চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীর পক্ষে ওকালতনামা জমা দেওয়া রিগ্যান আচার্য্যর অফিসে ঢুকে আজ তাকে নির্মমভাবে মারধর করে তার চেম্বার ভেঙে দেয় মুসলিম জনতা । তার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে । এছাড়া শতাধিক হিন্দু আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে জেলে ভরা হয়েছে বলে অভিযোগ । এই পরিস্থিতিতে আর চিন্ময় প্রভুর আমরা শুনানি হয়নি । আগামী ২ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানের দিন ধার্য করা হয়েছে । এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা নেতা শুভেন্দু অধিকারী । তিনি মন্তব্য করেছেন, ‘হামাস,আইএস, তালিবানের থেকেও খারাপ জঙ্গিবাদ বাংলাদেশে কাজ করছে ।’
আজ দুপুরে বিধানসভার গেটের সামনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘শুনানি পিছিয়ে যায়নি । বর্ষীয়ান আইনজীবী রমেন রায় আইসিইউতে আছেন। প্রায় মৃত্যুর মুখে । আর এক আইনজীবী যুবক রিগ্যান আচার্য্যর গোটা মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে উগ্রবাদী মৌলবাদী জিহাদি শক্তি । সত্তর জন হিন্দু আইনজীবীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে এবং অসমর্থক সূত্রে খবর পাচ্ছি যে তাদের গ্রেফতারও করা হয়েছে ।’ তিনি বলেন,’হামাস,আইএস তালিবানের থেকেও খারাপ জঙ্গিবাদ বাংলাদেশে কাজ করছে । সন্ন্যাসীদের আইনজীবীদের মৃত্যুর মুখে ফেলা হচ্ছে । মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হচ্ছে । আমরা আরও তীব্র করবো আমাদের অবরোধ, বয়কট এবং আন্দোলন ।’ বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশনের হস্তক্ষেপের দাবি করে শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন,’এবার সময় এসেছে গোটা পৃথিবীর হিন্দুরা রাজনীতির রং ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়া ।’
বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের প্রতিবাদে সোমবার বনগাঁর পেট্রোপলে পণ্য পরিবহন বন্ধ করে দেন শুভেন্দু অধিকারী । পরে মুখ্যমন্ত্রীর মমতা ব্যানার্জি বাংলাদেশে খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ বন্ধের বিরোধিতা করেন। এই প্রসঙ্গে বিরোধী দলনে থাকা প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘ভারতের পতাকায় যারা পা দিয়েছে তাদের খাবার বন্ধ কেন অনেক কিছু বন্ধ করে দেব । দেশ আগে । মুখ্যমন্ত্রী দেশের মর্ম বোঝেনা বলে এই ধরনের কথা বলছে । আমার বাড়ির বিপিন অধিকারী স্বাধীনতা আন্দোলনে আট বছর জেলে ছিলেন। এমন নজির মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের পাবেন না । উনি কি মর্ম বুঝবেন ? আমার মাম বরিশাল থেকে এসেছেন ৬০ শালে । মুখ্যমন্ত্রী কোন অনুভূতি থাকবে না, কিন্তু আমার সেই অনুভূতি আছে । আমি বাংলাদেশের অত্যাচার জানি । দেশের পতাকায় যারা পা দিয়েছে খাবার বন্ধ কেন, আমি চিকিৎসা বন্ধ হয়ে দাবি জানাচ্ছি । একাধিক চিকিৎসক সমর্থন করেছেন ।’ শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ৫০ টা হিন্দু সংগঠন আগামী পরশু বেলা দুটোর সময় রানী রাসমণিতে জমায়েত ডেকেছে । সাধু সন্তোষ সমাজ, পশ্চিমবাংলার হিন্দুরা ধ্বজ এবং জাতীয় পতাকা নিয়ে ওই সমাবেশে জমায়েত হবে । একটু আগে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বেলা বারোটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত সভার অনুমতি দিয়েছেন । বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় পতাকা পদদলিত করার প্রতিবাদে ভারতীয় এবং সনাতনীদের বড় জমায়েত হবে । ওইদিন আবার ঘোষণা করবো কবে পিঁয়াজ আর আলু বন্ধ করব ।’।

