এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৩ ডিসেম্বর : জহরলাল নেহেরুর মস্তিষ্ক পুষ্ট ‘ওয়াকফ আইন’ নিয়ে কয়েক দশক ধরে বিস্তর অভিযোগ উঠেছে । স্বাধীনতার সিংহভাগ সময় কেন্দ্রের ক্ষমতা কুক্ষিগত করা কংগ্রেস ওয়াকফ বোর্ডকে অপরিসীম ক্ষমতা দিয়ে রেখেছে বলে অভিযোগ । যার কুফল ভোগ করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে । অভিযোগ যে ওয়াকফ বোর্ড জোরপূর্বক হিন্দুদের অনেক সম্পত্তি অধিগ্রহণ করে নিচ্ছে। শ্রী শনি শিংনাপুর মন্দিরের ১৯ একর জমি, বিডের শ্রী কঙ্কলেশ্বর মন্দিরের ১২.৫ একর জমি এবং তামিলনাড়ুর শ্রী চন্দ্রশেখর স্বামী মন্দিরের প্রায় ১,২০০ একর জমি নিজের সম্পত্তি বলে দাবি করেছে ওয়াকফ বোর্ড, বলে অভিযোগ । বিহারের পাটনা জেলার ৯০ শতাংশের অধিক হিন্দু অধ্যুষিত আস্ত গোবিন্দপুর গ্রামকেই নিজেদের সম্পত্তি বলে ঘোষণা করেছে বিহার ওয়াকফ বোর্ড । কেরালার মুনাম্বামের ৬০০ খ্রিস্টান ও হিন্দু পরিবারের জমি সহ হাজার হাজার একর সম্পত্তির দাবি করার পরে, ওয়াকফ বোর্ড এখন কংগ্রেস শাসিত কর্ণাটকে ভারতীয় পুরাতাত্ত্ব বিভাগের(ASI) ৫৩ টি পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনের মালিকানা দাবি করছে । এছাড়া তামিলনাড়ুতে একটি পুরো গ্রামসহ রাজেন্দ্র চোল দ্বারা নির্মিত একটি ১০০০ বছরের পুরানো শিব মন্দিরের মালিকানা দাবি করেছে তামিলনাড়ু ওয়াকফ বোর্ড৷ সেই কারনে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার ওয়াকফ সংশোধনী বিল এনেছেন । বর্তমানে ওই বিল নিয়ে আলোচনা চলছে৷ তবে ওয়াকফ সংশোধনী বিলের বিরোধিতায় সরব হয়েছে মুসলিম সংগঠনগুলির পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টির মত রাজনৈতিক দলগুলি । তবে এই বিলের বিরোধিতায় কার্যত ব্রান্ড হয়ে উঠেছে মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস । ওয়াকফ নিয়ে মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধে ‘দ্বিচারিতা’র অভিযোগ তুলেছেন রাজ্য বিজেপির বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল ।
আজ তিনি নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্টে এই বিষয়ে লিখেছেন,’দ্বিচারিতা । ওয়াকফ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বিচারিতা আজ আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার চেয়েছিল, বাম আমলে ওয়াকফ বোর্ডের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির তদন্ত করুক সিবিআই। সেই আর্জি জানিয়ে ওই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে গত তিন বছরে দফায় দফায় নথিপত্র পাঠিয়েছে নবান্ন। ক্ষমতায় আসার পরে ওয়াকফ বোর্ডের কাজকর্ম নিয়ে অর্থ দফতর যে বিশেষ অডিট করেছিল, তাতেই প্রথম আর্থিক দুর্নীতির ইঙ্গিত মেলে। তখনই ওই তদন্তের দায়িত্ব সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। সেই অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তি জারি করে বোর্ড সংক্রান্ত সমস্ত নথি ও গোটা অডিট রিপোর্টটাই তুলে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে।’
তিনি লিখেছেন,’ওই কেন্দ্রীয় সংস্থার ডিআইজি তথা কলকাতা অফিসের দুর্নীতি দমন শাখার প্রধান নবীনকুমার সিংহ রাজ্য সরকারকে যে চিঠি লিখেছেন, তাতে বলা হয়েছে ওয়াকফ আইনে যে হেতু ওয়াকফ সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণ ও মুতোয়ালিদের দায়দায়িত্বের কথা বলা আছে এবং সেগুলির চরিত্র মূলত দেওয়ানি বিধির আওতাধীন, তাই নবান্নের আর্জি মানা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা শাখা সিআইডি-কে দিয়েই তদন্ত করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। নবান্নের খবর, রাজ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ৪৮টি ওয়াকফ এস্টেটের মধ্যে ১৬টির কাজকর্ম খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সিবিআইকে। বাকিগুলি রয়েছে সিআইডি-র হাতেই। ক্ষমতায় এসেছেন ১৪ বছর হয়ে গেল। সিআইডির তদন্ত কি শেষ হয়েছে? কতজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?’ অগ্নিমিত্রা বলেছেন,’আগে সিপিএম নেতারা ওয়াকফের জমি লুঠ করেছিল। এখন তৃণমূল নেতারা করছেন। আর বিধানসভায় ওয়াকফ সংশোধনী বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ হচ্ছে। যা এই সরকারের এক্তিয়ায়ের মধ্যে পড়েনা।’।

