এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাঁকুড়া,২০ জুলাই : সোমবার রাতভর টানা বৃষ্টিপাতের ফলে জলমগ্ন হয়ে গেছে বাঁকুড়া জেলার পাত্রসায়ের ব্লকের একাধিক গ্রামের কৃষিজমি । গ্রামগুলির সিংহভাগ জমিতে শাকশব্জি লাগিয়েছিলেন স্থানীয় কৃষকেরা । সম্প্রতি ফসল তোলাও শুরু হয়েছিল । কিন্তু সোমবার রাতভর বর্ষার বৃষ্টিপাতের ফলে জমিতে প্রায় হাঁটু অব্দি জল জমে গেছে । ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে । এদিকে সারা বছরের রোজগার নষ্ট হতে দেখে রাতের ঘুম ছুটেছে কৃষকদের ।
পাত্রসায়ের ব্লকের চরগোবিন্দপুর, পাঁচপাড়া, ঘোড়াডাঙ্গা, সোনাটিকরি, মামুদপুরসহ একাধিক গ্রামের বাসিন্দাদের মূল পেশা কৃষিকাজ । মূলত বিভন্ন রকমের শাক ও শসা,ঝিঙে প্রভৃতি শব্জির চাষ করে যেটুকু উপার্জন হয় তাতেই তাঁরা সারা বছর কোনও রকমে সংসার খরচ চালান । কিন্তু সোমবার রাতভর বৃষ্টিপাতের কারনে শব্জিখেত কার্যত এক হাঁটু জলের তলায় চলে গেছে । মঙ্গলবার সকালে বৃষ্টি কমতেই মাঠে ছুটেছেন সকলে । খেত থেকে ফসল উদ্ধারের মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এলাকার কৃষকরা ।
এদিন সকালে দেখা গেল চরগোবিন্দপুরের বাসিন্দা জনৈক গৃহবধু বিনা মণ্ডল তাঁর দুই শিশু সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে জলমগ্ন শসাখেত থেকে শসা সংগ্রহ করছেন । বিনাদেবী বলেন, ‘আমাদের অল্পসল্প কিছু জমিজমা আছে । তাতে শাকশব্জি চাষ করে কোনও রকমে সারাবছর সংসার চলে । এবারে ধারদেনা করে জমিতে শসা লাগানো হয়েছিল । দু-চার খেপ শসা তুলে বিক্রিও করা হয়েছে । তবে লকডাউনের কারনে রপ্তানি বন্ধ থাকায় বেশি দাম পাওয়া যায়নি । তবে এরকম দাম পেলেও খরচ খরচা উঠে যেত । কিন্তু সোমবার রাতের বৃষ্টিপাতের ফলে সর্বনাশ হয়ে গেল । জমিতে প্রায় হাঁটু ভর জল জমে গেছে ৷ শসা গাছের গোঁড়ায় জল জমায় গাছগুলির গোঁড়ায় পচন ধরবে । ফলে সব ফসল বরবাদ হয়ে যাবে । এখন ধারদেনা শোধ করা তো দুরের কথা সংসার খরচ কিভাবে জুটবে জানা নেই ।’
শুধু বিনা মণ্ডলই নয়, একই চিত্র দেখা গেল প্রায় গোটা পাত্রসায়ের ব্লক জুড়ে । গ্রামবাসীদের একটাই চিন্তা,ধারদেনা শোধ করে সংসার খরচ কিভাবে জোটাবেন । স্থানীয়দের দাবি,ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সরকারি সহায়তা দেওয়ার ব্যাবস্থা করুক প্রশাসন ।।