এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৯ নভেম্বর : দুর্গাপূজা থেকে শুরু করে সর্বশেষ কার্তিক পূজা পর্যন্ত কলকাতাসহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় একের পর পূজো মণ্ডপে হামলার ঘটনা ঘটে । আজ বৃহস্পতিবার বিধানসভায় শীতকালীন অধিবেশনে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা সংক্রান্ত মুলতুবি প্রস্তাব এনেছিল বিজেপি । কিন্তু অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় প্রস্তাব মঞ্জুর না করেই অধিবেশন থেকে ওয়াক আউট করেন বলে অভিযোগ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রস্তাবের কপি শেয়ার করেছেন ।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে,’ভারতীয় সংবিধানে ধর্মের স্বাধীনতার অধিকারের কথা সুনির্দিষ্ট ভাবে বর্ণিত আছে (Right to freedom of Religion Article 25-28) ২৫, ২৬, ২৭ এবং ২৮ ধারায় যা এই রাজ্যে লঙ্ঘিত হচ্ছে বার বার। যেমন ফালাকাটা, গার্ডেনরীচ, শ্যামপুর, রাজাবাজার, নোদাখালি, বেলডাঙা প্রভৃতি স্থানে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের দুষ্কৃতকারীগন হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন ধর্মানুষ্ঠানে বিভিন্নভাবে বাধাপ্রয়োগ করছে। সংবিধান বিরোধী এই ধরনের হানাহানি, অগ্নি সংযোগ, দেব-দেবী মুর্তি ভাঙা প্রভৃতি বন্ধ করার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার কোনরূপ ব্যবস্থা গ্রহনে সম্পূর্ণ রুপে ব্যর্থ।’
শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন,’বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে আজ ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা সংক্রান্ত মুলতুবি প্রস্তাব আনে বিজেপি পরিষদীয় দল৷ সনাতন সম্প্রদায়ের মানুষকে স্বাধীনভাবে ধর্মচর্চায় বাধা দেওয়া হচ্ছে এই বিষয়ে আলোচনা অত্যন্ত জরুরি।দুঃখের বিষয় অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় প্রস্তাব মঞ্জুর না করায় বিজেপি পরিষদীয় দল অধিবেশন থেকে ওয়াক আউট করে।এই সরকারের শাসনে বারবার এক বিশেষ সম্প্রদায় অন্য সম্প্রদায়কে ধর্মীয় আচরণে বাধা দিচ্ছে। সংবিধান অনুযায়ী, যেকোনও সম্প্রদায়ের স্বাধীন ভাবে ধর্মীয় আচরণের অধিকার রয়েছে। হিন্দু জনগোষ্ঠী এবং জনজাতিদের ধর্ম পালনে নিরাপত্তাহীনতার কথা যদি বিধানসভায় না আলোচনা করা যায়, তাহলে এর থেকে দুর্ভাগ্যের কি হতে পারে !’ পরে সাংবাদিক সম্মেলনে অধ্যক্ষের এহেন আচরণের তীব্র নিন্দা করে তিনি বলেন,প্রস্তাব পাঠ পর্যন্ত করতে দেওয়া হয়নি ।’ শুভেন্দু মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে নিশানা করে বলেন,’তিনি কালকের জনসভায় নিজের ভোটব্যাংককে সন্তুষ্ট করে বক্তব্য রেখে চলে গেলেন । রাজ্যের যত জ্বলন্ত ইস্যু আছে সেই ইস্যু নিয়ে কোনো বক্তব্য নেই । পুলিশ বিভাগে প্রশ্ন-উত্তর নেওয়া হয় না । তা আমরা কোথায় বলবো ? মানুষ আমাদের বিধানসভায় পাঠিয়েছে শুধু মাত্র কি ভাতা দেয়ার জন্য ? ৬০ লক্ষ টাকার এমএলএর ল্যাডে ররেকমেন্ডেশন দেওয়ার জন্য ? নাকি দুর্গাপুজো আর ঈদের সময় কিছু শাড়ি কাপড় বিতরণ করার জন্য ? এই জন্য তো আমাদের পাঠায়নি । আমরা হিন্দু জনগোষ্ঠীর ভোটে জিতেছি । ৯৯% এর বেশি ভোট আমরা হিন্দু জনগোষ্ঠী এবং জনজাতি সমাজের ভোট পেয়েছি৷ আমরা যদি ধর্মাচরণের উপরে প্রটেকশন দিতে না পারি,সেই কথা বিধানসভায় বলতে যদি না পারি, পুলিশ বিভাগে প্রশ্ন উত্তর হয় না, অধ্যক্ষ মহোদয় আজকেও এই প্রস্তাব পড়তে না দিয়ে তিনি যে এই চেয়ারটার যে রাজনীতিকরণ করেছেন ফের একবার তিনি প্রমাণ করলেন । তিনি হিন্দু সহ সমস্ত মানুষের ধর্মাচরণের অধিকারকে দাবিয়ে রাখতে চাইলেন । বললেন সংবিধান দিবসের দুদিনে এটা আলোচনা হয়েছে৷ সম্পূর্ণ অসত্য এবং এটা এক প্রকার সংখ্যাগরিষ্ঠতার দম্ভ ও অহংকারে বহিঃপ্রকাশ ।’।